নাসিম নাজাফি আগদাম
সে ছিল প্রাণী-হত্যার বিরোধী। জনমত গড়তে চাইত নিরামিষ ভক্ষণের পক্ষে। ইউটিউবে তার পোস্ট করা ভিডিয়োগুলোই বেছে বেছে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলত সে। ওই ওয়েবসাইট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তুলনা করেছিল অ্যাডল্ফ হিটলারের।
কেউ তাকে বলত ‘নিরামিষাশী বডিবিল্ডার’, কেউ র্যাপ গায়িকা, কারও মতে সে পশুপ্রেমী সংগঠন ‘পেটা’-র সদস্য। ইরানি বংশোদ্ভূত, ৩৯ বছরের সেই নাসিম আগদামই ইউটিউব দফতরে হানাদার বন্দুকবাজ। পরে নিজেরই বন্দুকেই আত্মঘাতী।
ইউটিউবে ইংরেজি, ফার্সি ও তুর্কি ভাষায় তিনটি চ্যানেল ছিল নাসিমের। হামলার পরে সব বন্ধ করে দেন ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। প্রাণীদের উপরে অত্যাচারের (কিছু বেশ নৃশংসও) ভিডিয়ো আপলোড করত নাসিম। আবার নিরামিষ খাবারের প্রচারমূলক ভিডিয়োও দিত। নাসিমের অভিযোগ ছিল— ইউটিউব এমন কারিকুরি করত যে, ভিডিয়োগুলো পাওয়া যেত না। ইউটিউবে ভিডিয়ো দিলে অনেক সময়ে বিজ্ঞাপনের টাকা মেলে। নাসিমের বাবা ইসমাইল জানান, ‘‘ইউটিউব ওকে টাকা দেওয়া বন্ধ করায় রেগে ছিল নাসিম।’’
নাসিমের ওয়েবসাইট— ‘নাসিম-এ-সব্জ ডট কম’। বাংলায় ‘সবুজ বাতাস’। নিরামিষ খাওয়া আর পার্সি সংস্কৃতির কথা ওয়েবসাইটেও প্রচার করত সে। ওয়েবসাইটে অধিকাংশ লেখালেখিতেই ছিল ইউটিউবের প্রতি বিষোদ্গার। ২০১৭-র জানুয়ারিতে নাসিম লেখে, ‘‘কয়েক জনকে নিশানা করেই তাঁদের ভিডিয়ো আটকে দেওয়া হচ্ছে। ওরা যদি আপনাকে বাড়তে দিতে চায়, তবেই আপনি বাড়বেন।’’ সঙ্গে জুড়ে দেয় হিটলারের উদ্ধৃতি, ‘‘মিথ্যেটাকে বড় করো, সহজ করো, বারবার বলতে থাকো, ক্রমশ সকলেই সেটাকে বিশ্বাস করবে।’’
আজ বন্ধ করা হয়েছে নাসিমের ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টও। যদিও টুইটারে ছড়িয়ে পড়েছে তার একটি বক্তৃতা। সেখানেও ইউটিউবের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ।
নাসিমের বাবা জানান, সোমবার থেকে নিখোঁজ ছিল সে। পুলিশ পরে তাকে নিজের গাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় পায়। ইউটিউব দফতর সেখান থেকে ২৫ কিলোমিটার। সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে নাসিমের বাবার দাবি, মেয়ে যে তার ‘তীব্র অপছন্দের’ ইউটিউব দফতরে যেতে পারে, সে কথা তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy