বিলাসবহুল হোটেলে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে তিন রক্ষীকে হত্যা করল পাঁচ বন্দুকবাজ। তার পর পরই হোটেলের পার্কিংয়ে গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটায় ওই দুষ্কৃতীরা। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের হাতে পণবন্দি হয়ে রয়েছেন কয়েকজন।
ত্রিপোলির প্রশাসন সূত্রে খবর, অতিথি এবং কর্মী-সহ বেশ কয়েক জনকে হোটেলের মধ্যে পণবন্দি করে রেখেছে দুষ্কৃতীরা। ত্রিপোলির সুরক্ষা দফতরের মুখপাত্র অসাম-আল নাস জানিয়েছেন, আজ দুপুরে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে মুখ ঢাকা পাঁচ দুষ্কৃতী হোটেলে ঢোকে। চেকপোস্টে তাদের গাড়ি আটকানো হলে গুলি চালায় তারা। হোটেলের লবিতে ঢুকে কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে বন্দুকবাজেরা।
বিপদ বুঝে কর্মীরা অতিথিদের নিয়ে লবির পিছনের দরজা দিয়ে পার্কিংয়ের দিকে পালানোর চেষ্টা করলে সেখানে একটি গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটায় দুষ্কৃতীরা। তাতে বেশ কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রাণহানির কোনও ঘটনা ঘটেনি। সেখানে কিছু ক্ষণ রক্ষীদের সঙ্গে গুলির লড়াইও চলে। তার পরেই কর্মী ও হোটেলের অতিথিদের পণবন্দি করে হোটেলের ভিতরে নিয়ে চলে যায় দুষ্কৃতীরা।
হোটেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রিপোলির এই হোটেলে সারা বছরই বিদেশিদের ভিড় থাকে। তবে আজ, তুলনামূলক ভাবে অতিথি কম ছিল। আজ মূলত ব্রিটেন, ইতালি, তুরস্কের কয়েক জন অতিথি হোটেলে ছিলেন। তবে তাঁদের মধ্যে কাউকে পণবন্দি করে রাখা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি। হোটেলের তরফে জানানো হয়েছে, ওই হোটেলে মাঝেমধ্যেই আসেন লিবিয়ার নেতা তথা বেসরকারি সেনা সমর্থিত প্রধানমন্ত্রী ওমর আল-হাসি। তবে আজ তিনি হোটেল ছিলেন না। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
২০১৩ সালে একই ভাবে ত্রিপোলির এই হোটেলে হামলা চালিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আলি জেদানকে অপহরণ করা হয়। ২০১১ সালে লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট গদ্দাফির অপসারণের পরে ক্ষমতার দখল নিয়ে দেশের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে দুই বিরোধী গোষ্ঠীর সংঘর্ষ শুরু হয়। সরকারি সেনার পাশাপাশি তৈরি হয় বেসরকারি সামরিক শক্তি, দ্বিতীয় পার্লামেন্ট। দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হন দুই গোষ্ঠীর দুই নেতা। গদ্দাফি-উত্তর আমলের বিবদমান এই দুই গোষ্ঠীর উত্থানের পর থেকেই গাড়ি বোমা, হামলার মতো ঘটনায় দীর্ণ লিবিয়া। তবে আজকের ঘটনা নিয়ে রাত পর্যন্ত মুখ খোলেনি প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy