Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পোপের ফোনে ইরাকের শিবিরে রোশনাই

বড়দিনের সন্ধ্যায় ইরাকের ত্রাণশিবিরে হাসি ফোটালেন পোপ। সুদূর ভ্যাটিকান থেকে ইরাকের ইরবিলের আঙ্কাওয়া ত্রাণশিবিরে ফোন করলেন পোপ ফ্রান্সিস। পশ্চিম এশিয়ার জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসআইএস-এর (ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া) দৌরাত্মে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেওয়া সর্বহারাদের বললেন, “আপনারা আমার কাছে যিশুখ্রিস্টের মতো। জন্মের রাতে যিশুও ঘরছাড়া ছিলেন।

ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স স্কোয়ারে পোপ ফ্রান্সিস। ছবি:  রয়টার্স

ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স স্কোয়ারে পোপ ফ্রান্সিস। ছবি: রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
ভ্যাটিকান শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:২১
Share: Save:

বড়দিনের সন্ধ্যায় ইরাকের ত্রাণশিবিরে হাসি ফোটালেন পোপ।

সুদূর ভ্যাটিকান থেকে ইরাকের ইরবিলের আঙ্কাওয়া ত্রাণশিবিরে ফোন করলেন পোপ ফ্রান্সিস। পশ্চিম এশিয়ার জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসআইএস-এর (ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া) দৌরাত্মে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেওয়া সর্বহারাদের বললেন, “আপনারা আমার কাছে যিশুখ্রিস্টের মতো। জন্মের রাতে যিশুও ঘরছাড়া ছিলেন। তাঁর জন্য কোথাও এতটুকু জায়গা মেলেনি। আপনারাও আজ সেই পরিস্থিতিতে রয়েছেন। আশা হারাবেন না। আমি সঙ্গে আছি।”

আঙ্কাওয়ার ওই শিবিরে আশ্রিতদের বেশির ভাগই ইরাকের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁদের প্রায় সকলেই কোনও না কোনও সময়ে আইএসআইএস জঙ্গিগোষ্ঠীর ধর্মান্তরণের ফতোয়ার সামনে দাঁড়িয়েছেন। অবশেষে কোনও মতো প্রাণ বাঁচিয়ে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রিয়জনদের হারিয়েছেন প্রায় সকলেই। তবে উত্‌সবের রাতে ধর্মগুরুর গলার আওয়াজে খানিকটা আশার আলো দেখেছে ওই ত্রাণশিবির। সন্ত্রাসদীর্ণ দেশের শিবিরে একদিনের জন্য হলেও বড়দিনের রোশনাই ফিরেছে। পোপের ওই ফোন-বার্তা রেকর্ড করে একটি ধর্মীয় টিভি চ্যানেলেও সম্প্রচার করা হয়েছে।

গত রাতে ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় পোপের বক্তৃতাতেও বার বার ফিরে এসেছে সন্ত্রাস এবং চোখের জলের প্রসঙ্গ। পোপ মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই উত্‌সবের দিনেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষের চোখের জল শুকোচ্ছে না। পশ্চিম এশিয়া থেকে নাইজিরিয়ার বিভিন্ন নাশকতা এবং দেশে দেশে শিশুমৃত্যুর সমাপ্তি চেয়ে এ দিন প্রার্থনা করেন পোপ। পেশোয়ারের সেনা স্কুলে জঙ্গি হামলা, পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলা মহামারির প্রকোপ, লিবিয়া-ইউক্রেনের পরিস্থিতির কথা মনে করিয়ে দিয়ে পোপ এ দিন এই বর্বরতার সমাপ্তি এবং বিশ্বশান্তির জন্য প্রার্থনা করেন।

এই নিয়ে দ্বিতীয়বার সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় বড়দিনের ভাষণ দিলেন পোপ ফ্রান্সিস। কিছুটা নজিরবিহীন ভাবেই সমাজ ও ধর্মের বাইরে বেরিয়ে বললেন শিশুহত্যা, পাচার এবং সামাজিক সমস্যা নিয়ে। পাকিস্তানের পেশোয়ারে নিহত শিশুদের আত্মার শান্তিকামনা করলেন বক্তৃতায়। হিংসা ও ভয় কাটিয়ে ইউক্রেনের মানুষ যাতে সহমর্মিতা এবং শান্তির পথে হাঁটতে পারেন, ঈশ্বরের কাছে সেই নিয়েও প্রার্থনা করলেন এই ধর্মীয় প্রধান। ইরাক ও সিরিয়া প্রসঙ্গে বললেন, “আমাদের যে ভাইবোনেরা ইরাক ও সিরিয়ায় সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন, সর্বস্ব হরাচ্ছেন, ঈশ্বরের কাছে তাঁদের সুদিন ফিরিয়ে আনার প্রার্থনা করি। প্রার্থনা করি, সেখানে অন্য সম্প্রদায়ের যাঁরা রয়েছেন, তাঁরাও যেন শান্তিতে থাকতে পারেন।” ধর্মীয় বক্তৃতায় উঠে এল রাজনীতির কথাও। পোপের আর্জি, মানবতার জন্য মুখোমুখি বসে কথা বলুন ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের রাষ্ট্রনেতারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

iraq pope pope francis vatican
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE