খুনসুটি, দুষ্টুমি, আবদারের সময়ে টান পড়েছে। আর পড়বে না-ই বা কেন! মেয়ের খেলার সঙ্গী যে ছুটছে সর্বক্ষণ। প্রতি দিন ঘড়ি ধরে অফিস বেরিয়ে যায় বাবা। বাড়ি ফিরেও রেহাই নেই। ঘাড় গুঁজে ব্যস্ত ল্যাপটপে। ছোট্ট মেয়ের ছোট ছোট সুখ-দুঃখের খবর কানে আসে ঠিকই, কিন্তু ওই মোবাইলেই। মান ভাঙানোর সময়টুকু যে বাবার জীবনে বড্ড দামি।
এই চেনা ছবিটার সঙ্গে মিলে যায় ছোট্ট কেটির গল্পটাও। বাবার দেখা যে মোটেই মেলে না, প্রতি দিনই অভিমান ফুলে ফেঁপে ওঠে বাচ্চা মেয়েটার। কিন্তু উপায়ও কিছু নেই। বাবা চাকরি করে গুগল-এ। ডিজাইনিংয়ের গুরুদায়িত্ব তাঁর কাঁধে। সপ্তাহভর অফিসের পর ছুটি মেলে সাকুল্যে এক দিন, শনিবার। সেই দিনটা নিয়েই ঘোর সমস্যায় পড়েছিল কেটি।
সামনেই বাবার জন্মদিন। সারা দিন কী ভাবে হুটোপাটি করে কাটাবে, তার পরিকল্পনা সেই কবেই সারা। কিন্তু বাবাকে কি ওই দিন পাওয়া যাবে, মিলিয়ন ডলার এই প্রশ্নেরই যে উত্তর নেই কেটির কাছে। কোনও উপায় ভেবে না পেয়ে শেষমেশ গুগলকেই সরাসরি চিঠি লিখেছে সে।
সাদা রুল টানা কাগজের উপর আকাশি নীল ক্রেয়নের কাঁপা কাঁপা হরফ। গুগলের সব কর্মীকেই খোলা চিঠি লিখেছে ওই খুদে। আবদার, “বাবার তো শুধু শনিবার ছুটি। বুধবার কি তোমরা একটা উপরি ছুটি দিতে পার না।” চিঠির শেষে দু’টো বিশেষ উল্লেখও জুড়তে ভোলেনি কেটি। প্রথমটায় লেখা, “ওই দিন বাবার জন্মদিন”। গোটা চিঠির মধ্যে জন্মদিন শব্দটাই সব চেয়ে বড় করে গোটা গোটা হরফে লিখেছে সে। নীচে লেখা, “তায় আবার সময়টা গরমকাল”।
না, কোনও ছেঁড়া কাগজের ঝুড়িতে চালান হয়ে যায়নি এক পাতার এই চিঠিটা। উল্টে সময় মতো জবাবি চিঠি পৌঁছে গিয়েছে কেটির ছোট্ট হাতে। তার বাবার বস ড্যানিয়েল শিপলাকফ লিখেছেন, “তোমার বাবার অনেক তাক লাগানো কাজ দেখেছে গোটা দুনিয়া। এই সুন্দর ভাবনা ও মিষ্টি আবদারের জন্য তোমায় ধন্যবাদ।” ড্যানিয়েলের লেখা ৩ অনুচ্ছেদের চিঠির চমক লুকিয়ে শেষটাতেই। এক দিন নয়, কেটির বাবার জন্য একটা গোটা সপ্তাহ ছুটি মঞ্জুর করেছে গুগল। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বাবা-মেয়ের হাসি-খেলায় ভরে উঠবে কেটির বাড়ি।
বড়দিন আসতে এখনও ঢের দেরি। কিন্তু বছরের সেরা উপহার এরই মধ্যে হাতে পেয়ে খুশির বাঁধ ভেঙেছে খুদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy