Advertisement
E-Paper

সিরিয়ার গ্রামে বিষক্রিয়া, আশঙ্কা রাসায়নিক অস্ত্র

বছর পেরোয়নি। ফের বিরোধীদের উপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠল সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে। বিরোধীদের দাবি, চলতি মাসের গোড়ার দিকে হামা প্রদেশের ফার জাইতা গ্রামে ক্লোরিন গ্যাস ছড়িয়ে দিয়েছিল আসাদ-অনুগত সেনা। তাতে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। সম্প্রতি এই ক্লোরিন-হানার জের নিয়ে একাধিক ভিডিও-ও প্রকাশ করা হয়েছে ইন্টারনেটে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৪৯
চিকিৎসা চলছে অসুস্থ শিশুদের। হামা প্রদেশে।  ছবি:এ পি।

চিকিৎসা চলছে অসুস্থ শিশুদের। হামা প্রদেশে। ছবি:এ পি।

বছর পেরোয়নি। ফের বিরোধীদের উপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠল সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে। বিরোধীদের দাবি, চলতি মাসের গোড়ার দিকে হামা প্রদেশের ফার জাইতা গ্রামে ক্লোরিন গ্যাস ছড়িয়ে দিয়েছিল আসাদ-অনুগত সেনা। তাতে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। সম্প্রতি এই ক্লোরিন-হানার জের নিয়ে একাধিক ভিডিও-ও প্রকাশ করা হয়েছে ইন্টারনেটে। তাতে দেখা যাচ্ছে হাসপাতালের বিছানায়, মাটিতে শুয়ে কাতরাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার আলেপ্পোর এক বাজারে বোমাবর্ষণ করেছে সিরীয় সেনা। তাতে নিহত ২৪।

গত অগস্টে সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসের লাগোয়া শহরতলি এলাকায় রাসায়নিক গ্যাস প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছিল আসাদের বিরুদ্ধে। তার পর মূলত রাশিয়ার মধ্যস্থতায় রাসায়নিক অস্ত্র চুক্তি সই করে সিরিয়া। যার জেরে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সিরিয়ার অস্ত্রভাণ্ডারে যত রাসায়নিক অস্ত্র রয়েছে, তা নষ্ট করে দেওয়ার কথা। সিরিয়ার দাবি, তার ৮৬ শতাংশ ইতিমধ্যে নষ্টও করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেই ফের উঠে এল এই ক্লোরিন হানার ঘটনা। প্রত্যাশিত ভাবেই তা অস্বীকার করেছে আসাদ-প্রশাসন। তাদের দাবি, আল কায়দার সঙ্গী এক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনই এই হামলার নেপথ্যে।

ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালের মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছে শিশুরা। মুখে অক্সিজেন মাস্ক। কেউ বা সাংঘাতিক কাশছেন, কারও আবার শ্বাসকষ্ট। অক্সিজেনের অভাবে কারও শরীরে আবার সাংঘাতিক কাঁপুনি। বিরোধীদের দাবি, এ সবই ক্লোরিন-গ্যাসের প্রভাব। চলতি মাসের গোড়ার দিকে ‘ব্যারেল বোমার’ মধ্যে ক্লোরিন গ্যাস ভরে ফার জাইতা গ্রামে ছড়িয়ে দেয় আসাদ অনুগত সেনা। তার প্রমাণ হিসেবে একটি ভিডিও তুলে ধরেছেন আসাদ-বিরোধীরা। তাতে দেখা যাচ্ছে, সাদা ধোঁয়ার চাদরে ঢেকে গিয়েছে ফার জাইতা গ্রাম। যাকে ক্লোরিন বলেই মনে করছেন বাসিন্দারা।

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য জানাচ্ছেন, বিষাক্ত রাসায়নিক হিসেবে ক্লোরিনের ব্যবহার এখন হয় না বললেই চলে। তবে খুব বেশি মাত্রায় যদি ব্যবহার করা হয়, সে ক্ষেত্রে তা ফুসফুসের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে। কিন্তু সেটা ব্যারেল বোমার মধ্যে দিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া আদৌ সম্ভব কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

তবে আক্রান্তদের লক্ষণ দেখে ক্লোরিন ছাড়া আর কোনও রাসায়নিকের কথা ভাবতেও পারছেন না তাঁরা। বিরোধীদের দাবি, হেলিকপ্টার থেকে ওই এলাকায় ক্লোরিন ছড়িয়ে দিয়েছিল সেনা। বিরোধীদের যুক্তি, তাঁদের সংগ্রহে কোনও হেলিকপ্টার নেই। সুতরাং এ কাজ মোটেও তাঁরা করেননি। কিন্তু আসাদ কেন এমন রাসায়নিক ব্যবহার করলেন? বিরোধীদের ধারণা, হত্যা নয়, মানুষকে ভয় দেখিয়ে ঘরছাড়া করতেই এই উদ্যোগ। আর তা সফলও। ওই হামলার পরে অনেকেই ফার জাইতা ছেড়ে পালিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার জন্য গত কাল আলোচনা হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে। আমেরিকার দাবি, ক্লোরিন যে ব্যবহার করা হয়েছিল, তার ইঙ্গিত পেয়েছে মার্কিন প্রশাসন। স্বাভাবিক ভাবেই তাতে উদ্বেগ বেড়েছে নিরাপত্তা পরিষদের। প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও কেন রাসায়নিক অস্ত্র ফের ব্যবহার করল আসাদ-সেনা, তা চিন্তায় ফেলছে সকলকে। বিরোধীদের অবশ্য দাবি, এই প্রথম নয়। চলতি বছরের গোড়ার দিকেও একাধিক বার এ রকম রাসায়নিক হানা হয়েছে তাদের উপর।

সে দাবি উড়িয়ে দিলেও আলেপ্পোর বাজারে আজকের হানা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, আসাদ-প্রশাসন এখনও কতটা নৃশংস। এ দিনের এই হানায় আহত বারোরও বেশি। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে। সে সব শেষ হলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ।

chemical weapon syria assad
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy