Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
‘দেশের স্বার্থ বিক্রি করবে না হাসিনা’

ছাত্রকে পিটিয়ে খুন, শাস্তি চেয়ে তপ্ত বাংলাদেশ

কুমিল্লায় ফেনি নদীর জল ত্রিপুরায় পাঠানোর বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে হাসিনার সাম্প্রতিক চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন আবরার ফাহাদ নামে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এই ছাত্র।

বিক্ষোভ: ছাত্র খুনের প্রতিবাদে অবরোধ। বুধবার ঢাকায়। ছবি: রয়টার্স।

বিক্ষোভ: ছাত্র খুনের প্রতিবাদে অবরোধ। বুধবার ঢাকায়। ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:৪৭
Share: Save:

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর এক মেধাবী ছাত্রকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় বাংলাদেশ উত্তাল। ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে পুলিশ ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে, যারা ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র। হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন সাধারণ ছাত্ররা। অধ্যাপকেরাও তাঁদের সমর্থনে এগিয়ে এসে দোষীদের কঠোরতম শাস্তি ও উপাচার্যের ইস্তফার দাবি জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠকে তাঁদের আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন, দল না দেখে হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘দল-টল বুঝি না। অপরাধী অপরাধীই। কারও দাবির অপেক্ষায় থাকি না। আগেই আমি নির্দেশ দিয়েছি। গ্রেফতার হয়েছে। যত রকম উচ্চ শাস্তি আছে, সেটা দেওয়া হবে।’’

কুমিল্লায় ফেনি নদীর জল ত্রিপুরায় পাঠানোর বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে হাসিনার সাম্প্রতিক চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন আবরার ফাহাদ নামে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এই ছাত্র। রবিবার সন্ধ্যায় শাসক দলের অনুগামী সংগঠন ছাত্র লিগের নেতারা তাঁকে ডেকে পাঠায়। রাত দুটোর সময়ে তার নিথর দেহ মেলে। ময়নাতদন্তে বলা হয়, লাঠি ও ক্রিকেটের উইকেট দিয়ে কয়েক ঘণ্টা ঘরে বেদম মারধর করায় শরীরের ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়ে আবরার মারা গিয়েছেন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ছাত্র লিগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে ফেলে মারধর করছে। অভিযোগ, আবরারকে মারধর করা হচ্ছে খবর পেয়ে তাঁর সহপাঠীরা ছাত্রাবাসের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক ও প্রোভোস্টকে খবর দিলেও তাঁরা আসেননি।

সোমবার পুলিশ ছাত্র লিগের দোষী ছাত্রদের গ্রেফতার করা শুরু করলেও বুয়েট-এর সাধারণ ছাত্ররা দোষীদের কঠোরতম শাস্তি ও ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে ক্যাম্পাসে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভ ও ক্লাস বয়কট ছড়িয়ে পড়ে দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও। রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং মার্কিন বিদেশ দফতরও বিবৃতি দিয়ে ছাত্র খুনের এই ঘটনার নিন্দা করে দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানায়। তবে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা এ দিন ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি খারিজ করে দিয়ে বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশকে বারে বারে সেনাশাসন ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে, আর সে লড়াইয়ে বরাবর প্রথম সারিতে থেকেছেন ছাত্ররা। আমি নিজেও ছাত্র রাজনীতি করেছি। অপরাজনীতি, অপরাধের দায় সার্বিক ভাবে ছাত্র রাজনীতির ঘাড়ে ফেলা উচিত হবে না।’’ তবে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বুয়েট যদি নিজেদের ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়, সে বিষয়ে তাঁর কিছু বলার নেই বলে জানান হাসিনা। এ দিন হাসিনা বলেন, ‘‘আমার ওপর ভরসা রাখুন। দেশের স্বার্থ আমি বিক্রি করব, এটা হতে পারে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE