একই পরিবারের তিন ‘জঙ্গি’ আনুষ্ঠানিক ভাবে আত্মসমর্পণ করেছে। সোমবার যশোহরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ কথা জানান খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামান।
সাংবাদিক সম্মেলনে ডিআইজি জানান, যশোহরে একই পরিবারের ছয় জঙ্গির মধ্যে তিন জন রবিবার দুপুরে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাদের নাম, তানজির ওরফে আশরাফুল, তানজিব আহমেদ এবং মাসুমা আক্তার। এরা সবাই নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরিরের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
পুলিশ আরও জানায়, এই পরিবারের মোট ছয় জন জঙ্গি কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত। গত ৬ সেপ্টেম্বর যশোহর জেলা পুলিশ জঙ্গি সন্দেহে এই তিন জন-সহ ১১ জনের নাম ও ঠিকানা সম্বলিত পোস্টার প্রকাশ করে।
ডিআইজি বলেন, ‘‘সরকারের ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা আত্মসমর্পণ করেছে। ওই পরিবারের অপর তিন সদস্য মাকসুদা এবং শাকির আহমেদ ও নাজমুল হাসান খুব শিগগিরই আত্মসমর্পণ করবেন বলে ডিআইজি আশা প্রকাশ করেন। আত্মসমর্পণ করার পর তানজিব আহমেদ সাংবাদিকদের জানায়, ৬-৭ মাস ধরে সে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরিরের প্রাথমিক সদস্য ছিল। যশোহর শহরের ধর্মতলা এলাকার একটি চায়ের দোকানে প্রায়ই চা খেতে যেত। সেখানেই তার সঙ্গে পরিচয় হয় সজল, পাশা, রায়হান-সহ আরও কয়েক জনের সঙ্গে। তানজিবের কথায়, ‘‘প্রথমে তারা ধর্মীয় কথা আলোচনা করত। সেগুলো আমারও ভাল লাগত। এর পরেই তারা লিফলেট জাতীয় কিছু বই পড়ার জন্য আমাকে দেয়। এগুলো পড়ার পর আস্তে আস্তে সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি।’’
আরও পড়ুন
১২ অক্টোবর থেকে ২২ দিন ইলিশ ধরা ও বিক্রি নিষিদ্ধ বাংলাদেশে
তানজিব আরও বলেন, ‘‘প্রথম দিকের আড্ডায় ইসলাম ও নামাজের আমন্ত্রণ জানাত। তখন তাকে সংগঠন সম্পর্কে কোনও আভাস দেওয়া হয়নি।’’ বইগুলো পড়ার পর তাকে হিজবুত তাহরিরের সদস্য হয়ে খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য জেহাদি পথে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানায় তারা। তানজিব জানায়, আত্মসমর্পণ করা তার তিন ভাই-বোন এর আগেও এক বার পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল। পরে জামিনে মুক্তি পায় তারা।
আত্মসমর্পণকারী জঙ্গিরা জানিয়েছে, দেশে সম্প্রতি বেশ কিছু জঙ্গি হামলার ঘটনার পর তারা ভুল বুঝতে পারে। জঙ্গিদের নৃশংসতা তাদের বিবেককে নাড়া দেয়। পরে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে তারা আত্মসমর্পণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যশোহরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, যে হেতু স্বেচ্ছায় চরমপন্থী সংগঠন ত্যাগ করে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাইছে, তাই তাদেরকে সুযোগ দেওয়া হবে এবং বিষয়টি মানবিক ভাবে দেখা হবে।
ছবি: সংগৃহীত।