শেখ হাসিনার দলের নেতারাও ঘরোয়া আলোচনায় স্বীকার করছেন, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের।
‘পাটা পোতাইলে ঘষাঘষি, মরিচের ত্রাহি ত্রাহি!’
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের এই প্রাচীন প্রবচনটি মুখে মুখে ঘুরছে সে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। প্রবচনটির এক্ষেত্রে প্রতীকী অর্থ— বিভিন্ন আদর্শের সংঘর্ষে নির্যাতিত হচ্ছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।
প্রশ্ন উঠছে, এই নির্বাচনে আওয়ামি লিগের জেতার সম্ভাবনা বেশি হলেও সংখ্যালঘুরা কতটা নিরাপদ? শেখ হাসিনার দলের নেতারাও ঘরোয়া আলোচনায় স্বীকার করছেন, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের। বিশেষ করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে। ইতিমধ্যেই সংখ্যালঘুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং অধিক ঝুঁকিপূর্ণ মিলিয়ে ৬১টি আসন চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশের ‘ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’। সারা দেশে ৯৬টি আসনে মোট ভোটদাতার মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা ১২ শতাংশের বেশি। তার মধ্যে ৬১টিতেই তাঁরা বিপন্ন। ঝুঁকির হিসেবে শীর্ষে রয়েছে খুলনা, কক্সবাজারের মতো এলাকা।
আপাতত স্থির হয়েছে, সংখ্যালঘু সংগঠনগুলি একজোট হয়ে যেখানে যেখানে জামাত প্রার্থীরা দাঁড়িয়েছেন (২৫ জন প্রাক্তন জামাত প্রার্থীকে এ বার তাদের ছাতার তলায় দাঁড় করিয়েছে বিএনপি) সেখানে বিরোধী প্রার্থীদের জেতানোর চেষ্টা করবে। তবে আওয়ামি লিগ কতটা ভরসা দিতে পারবে এই ভোটযুদ্ধে, তা নিয়ে নিঃসন্দেহ নন সংখ্যালঘুরা। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনি অ্যাসোসিশনের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কর্মকারের কথায়, “উগ্র এবং মৌলবাদী ইসলামকে বাংলাদেশে সামাজিক প্রতিষ্ঠা দেওয়ার বিষয়টিতে পাকিস্তান, পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির ভূমিকা রয়েছে। গ্রামে গিয়ে দেখুন। হাসন, লালন, মেলা, বাউল সব ভেসে গিয়েছে উগ্র ইসলামের দাপটে।”
ভোটে হয়তো সংখ্যার বিচারে দাঁত ফোটাতে পারবেন না প্রাক্তন জামাত এবং নব্য বিএনপি নেতারা। কিন্তু তাতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের শেষরক্ষা হবে কি না— এখন সেটাই বড় প্রশ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy