Advertisement
E-Paper

তিস্তা নিয়ে তাগাদা দিতে বিজেপির দরবারে ঢাকা

বছর শেষে বাংলাদেশে ভোট। তার আগে শেখ হাসিনার তরফ থেকে এই দৌত্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। সূত্রের মতে, এই সফরে একই সঙ্গে দু’টি উদ্দেশ্য পূরণ করতে চাইছেন আওয়ামি লিগ শীর্ষ নেতৃত্ব।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০১

আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক তথা সড়ক-সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ১০ জন সাংসদের একটি প্রতিনিধি দল ফেব্রুয়ারিতে ভারত সফরে আসছেন। আরএসএস থেকে পাঠানো বিজেপি নেতা রাম মাধবের সঙ্গে বৈঠকের পরে কলকাতায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও আলোচনায় বসার কথা রয়েছে তাঁদের।

বছর শেষে বাংলাদেশে ভোট। তার আগে শেখ হাসিনার তরফ থেকে এই দৌত্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। সূত্রের মতে, এই সফরে একই সঙ্গে দু’টি উদ্দেশ্য পূরণ করতে চাইছেন আওয়ামি লিগ শীর্ষ নেতৃত্ব। আরএসএস-এর মাধ্যমে মোদী সরকারের কাছে বার্তা পৌঁছানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন বিএনপি-জামাতে ইসলামি জোটের নেত্রী খালেদা জিয়া। সংখ্যালঘু তাসও খেলা হচ্ছে বিএনপি-র পক্ষ থেকে। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ভাবে বিজেপির কাছাকাছি পৌঁছতে চেষ্টা করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলও। রাম মাধব বিজেপির প্রভাবশালী নেতা। তিস্তা চুক্তির মতো ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বকেয়া বিষয়গুলি দ্রুত সম্পাদন করার একটা মরিয়া চেষ্টা ভোটের আগে করছেন হাসিনা। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে হেফাজত ইসলামের মতো সংগঠনকে গুরুত্ব দিতে হচ্ছে আওয়ামি লিগকে— এ কথা ঠিকই। ভোটের দিকে তাকিয়ে ‘নরম ইসলাম’-পন্থাকে গুরুত্ব দিয়ে চলাও হচ্ছে কিছু ক্ষেত্রে। কিন্তু ভারতের বর্তমান শাসক দল হিন্দুত্ববাদী হওয়া সত্ত্বেও, ভোটের আগে মোদী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে পাওনা আদায় করাটা হাসিনা সরকারের বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ছে।

আগামী মাসে ওবায়দুল কাদেরের সম্ভাব্য সফরকে সেই প্রেক্ষাপটেই দেখছেন কূটনীতিকেরা। যদিও গত মাসেই কলকাতায় এসে কাদের জানিয়েছিলেন, ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে রাম মাধব আওয়ামি লিগ নেতৃত্বকে দিল্লি গিয়ে আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেই তাঁরা দিল্লি যাচ্ছেন।

সূত্রের মতে, কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েই মমতার সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি স্থির করা হচ্ছে আওয়ামি লিগের পক্ষ থেকে। কিছু দিন আগেই সে দেশের পানিসম্পদ মন্ত্রী তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশের সংসদে সরব হয়েছিলেন। পূর্ণমন্ত্রী আনোয়ার হোসেনের অনুপস্থিতিতে তাঁরই বক্তব্য, প্রতিমন্ত্রী মজরুল ইসলাম সে দিন পড়ে শুনিয়েছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল, তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী চুক্তির খসড়ার দিকে এগোচ্ছে দু’দেশ।

এই মন্তব্যের পরে কিছুটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছে ঢাকা এবং নয়াদিল্লি উভয় ক্ষেত্রেই। কেন না মমতার সঙ্গে আলোচনার আগে এই ধরনের কোনও বিবৃতি দিয়ে ফেলায় লাভের চেয়ে লোকসানের সম্ভাবনাই বেশি। এই চুক্তি প্রক্রিয়ার অতীত ইতিহাস বলছে— মমতাকে গুরুত্ব না-দিয়ে, তাঁকে পাশ কাটিয়ে যত বারই অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা হয়েছে, তত বারই মুখ থুবড়ে পড়ছে প্রয়াস। ঠিক সে কারণেই গত বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়াদিল্লিতে পা দিয়েই বলেছিলেন, ‘‘মমতার সঙ্গে দেখা করার জন্য আমি উদগ্রীব হয়ে রয়েছি।’’ সে বার হাসিনা-মমতা বৈঠকে বরফ না-গললেও গুরুত্ব দিয়ে তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছিলেন হাসিনা। এ বার সেই আলোচনারই পরবর্তী ধাপ হিসাবে ওবায়দুল কাদের মমতার শহরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করতে চাইছেন। তাঁদের রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার বিষয়টিও তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরবেন বলে আওয়ামি লিগ সূত্রে জানা গিয়েছে।

India Bangladesh Awami League ভারত বাংলাদেশ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy