E-Paper

ম্যান ইউয়ের হার, নতুন কীর্তি এমবাপের

প্রথমার্ধেরই অতিরিক্ত সময় বক্সের ভেতর থেকে একই রকম বাঁক খাওয়ানো শটে গোল করেন ম্যাথেউস কুনহা। দ্বিতীয়ার্ধেও দুরন্ত একটি সুযোগ পেয়েছিলেন ম্যান ইউয়ের ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড। কিন্তু হেড করে বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৬:২৭
উৎসব: দ্বিতীয় গোলের পরে রজার্সের (ডান দিকে) উচ্ছ্বাস। হতাশ কুনহা।

উৎসব: দ্বিতীয় গোলের পরে রজার্সের (ডান দিকে) উচ্ছ্বাস। হতাশ কুনহা। ছবি: রয়টার্স।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে রবিবার অ্যাস্টন ভিলার ঘরের মাঠে হারল ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। মর্গ্যান রজার্সের জোড়া গোলে ঘুরে দাঁড়াতে পারল না রুবেন আমোরিমের দল।

রজার্সের দু’টি গোল প্রায় একই রকম। মনে হতে পারে অ্যাকশন রিপ্লে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৪৫ মিনিটের মাথায় বাঁ-প্রান্তে বল পেয়ে কাট করে বক্সের দিকে এগিয়ে যান রজার্স। ঠিক বক্সের বাইরে থেকে দ্বিতীয় পোস্ট লক্ষ্য করে বাঁক খাওয়ানো শট নেন রজার্স। স্যেন ল্যামেন্সের নাগালের মধ্যেই ছিল না তাঁর শট। পোস্টের কোণ দিয়ে জালে বল জড়িয়ে দেন অ্যাস্টন ভিলার তারকা।

প্রথমার্ধেরই অতিরিক্ত সময় বক্সের ভেতর থেকে একই রকম বাঁক খাওয়ানো শটে গোল করেন ম্যাথেউস কুনহা। দ্বিতীয়ার্ধেও দুরন্ত একটি সুযোগ পেয়েছিলেন ম্যান ইউয়ের ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড। কিন্তু হেড করে বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হন তিনি। সুযোগ নষ্ট করেননি রজার্স। ৫৭ মিনিটে বক্সের মধ্যে বল পেয়ে আবারও দ্বিতীয় পোস্টের কোণ দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন।

ম্যাচ শেষে অ্যাস্টন ভিলার তারকা বলেছেন, ‘‘ভাবতে পারিনি আমার দু’টি শটই জালে জড়িয়ে যাবে। খুব ভাল লেগেছে ম্যাচটি জিতে। আমাদের ছন্দে ফিরতেই হত। ঘরের মাঠে এই ম্যাচ থেকে সম্পূর্ণ পয়েন্ট তুলতে চেয়েছিলাম। শেষমেশ লক্ষ্যপূরণ করতে পেরেছি।’’ যোগ করেন, ‘‘ম্যান ইউনাইটেডও প্রচুর আক্রমণ করেছে। কিন্তু আমাদের রক্ষণ ভাগের খেলোয়াড়েরা অসাধারণ ছন্দে ছিল।’’

এ দিকে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির জার্সিতে আরও এক বার জ্বলে উঠলেন আর্লিং হালান্ড। ওয়েস্ট হ্যামের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করলেন তিনি। ইপিএলে গোলসংখ্যায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে ছাপিয়ে গেলেন তিনি।

পর্তুগিজ কিংবদন্তি দুই দফায় ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে লিগে ২৩৬ ম্যাচে ১০৩ গোল করেছিলেন। হালান্ড তাঁকে ছাড়িয়ে গেছেন মাত্র ১১৪ ম্যাচেই।

এতিহাদে শুরু থেকেই দাপটের সঙ্গে ফুটবল খেলেছে ম্যান সিটি। গোলও এসেছে দ্রুতই। পাঁচ মিনিটে হালান্ড এগিয়ে দেন তাঁর দলকে। চলতি মরসুমে ১০ নম্বর বার লিগে সিটিকে এগিয়ে দিয়েছেন হালান্ড। ২০২৫-২৬ মরসুমে আর কোনও খেলোয়াড়ই নিজের দলের হয়ে পাঁচটির বেশি ম্যাচে প্রথম গোল করতে পারেননি।

ওয়েস্ট হামের বিরুদ্ধে সিটির দ্বিতীয় গোলেও ছিল হালান্ডের ছোঁয়া। ৩৮তম মিনিটে তাঁর অ্যাসিস্টে ব্যবধান ২-০ করেন তিয়ানি রেইনডারস। দ্বিতীয়ার্ধে ৬৮তম মিনিটে নরওয়ের তারকাই দলকে এনে দেন তৃতীয় গোল। এই গোলটির পরেই রোনাল্ডোকে ছাড়িয়ে যান তিনি।

ম্যাচ শেষে হালান্ড বলেছেন, ‘‘খুব ভাল অনুভূতি। আমি রোনাল্ডোর অন্যতম ভক্ত। ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখেছি ওর মতো খেলার।’’ যোগ করেন, ‘‘কখনও কল্পনা করিনি ইপিএলে ওর চেয়ে বেশি গোল আমার নামের পাশে থাকবে। আমি ম্যান সিটির কাছে কৃতজ্ঞ। আমার প্রতিভার দাম দিয়েছেন তাঁরা। অনেক ধন্যবাদ জানাতে চাই সতীর্থদেরও। কঠিন সময়ও তাঁরা আমার পাশে থেকেছে।’’

যদিও লিগ তালিকার শীর্ষে থাকা হল না ম্যান সিটির। সেই জায়গা দখল করে নিয়েছে আর্সেনালই। এভার্টনের ঘরের মাঠ গুডিসন পার্কে রবিবার আর্সেনাল মাত্র এক গোলে জেতে। ম্যাচের ২৭ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে আর্সেনালকে এগিয়ে দেন ভিক্টর গিয়োকেরেস। সেটাই ম্যাচে একটিমাত্র গোল। সারা ম্যাচ ধরে এভার্টন একাধিক সুযোগ তৈরি করেও কাজে লাগাতে পারেনি। প্রত্যেকটি সুযোগ নষ্ট করেন তাঁরা। আর্সেনালও গোলসংখ্যা বাড়াতে ব্যর্থ। পেনাল্টি ছাড়া আরও তিনটি গোল করার সুযোগ এসেছিল গিয়োকেরেসের সামনে। যার একটিও কাজে লাগাতে পারেননি তিনি।

ম্যাচ শেষে গিয়োকেরেস বলেছেন, ‘‘প্রত্যেকটি ম্যাচেই ভাল খেলতে চাই। এ দিনও ভেবেছিলাম গোল পাব। প্রথমার্ধেই সেই লক্ষ্যপূরণ হয়।’’ যোগ করেন, ‘‘এভার্টন সহজ প্রতিপক্ষ নয়। দীর্ঘদিন ধরে ভাল ফুটবল খেলছে। চলতি ইপিএল মরসুমে খুব একটা কিছু করে দেখাতে না পারলেও ঘরের মাঠে ওদের হারানো কঠিন। সেই চাপ অতিক্রম করে আমরা ভাল ফুটবল উপহার দিয়েছি। আশা করি, দর্শকেরা খুশি হবেন।’’

এ দিকে জন্মদিনে তাঁর প্রিয় ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন কিলিয়ান এমবাপে। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে এক বছরে সব চেয়ে বেশি গোল করার তালিকায় রোনাল্ডোকে ছুঁলেন ফরাসি তারকা।

শনিবার রাতে লা লিগার ম্যাচে সেভিয়াকে ২-০ গোলে হারায় রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের ৮৬তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে রিয়ালের দ্বিতীয় গোলটি করেন এমবাবে। ২০২৫ সালে এটি তাঁর ৫৯তম গোল। ২০১৩ সালে রিয়ালের জার্সিতে ৫৯ গোল করেছিলেন রোনাল্ডোও। ইউরোপের সবচেয়ে সফল ক্লাবটির ইতিহাসে একই বছরে এর চেয়ে বেশি গোল আর কারও নেই।

গোলের পরে এমবাপে।

গোলের পরে এমবাপে। ছবি: রয়টার্স।

২০২৪ সালে রিয়ালে যোগ দিয়েছিলেন এমবাপে। এ বছরই প্রথম সারা বছর রিয়ালের হয়ে খেলার সুযোগ পেলেন তিনি। আর প্রথম সুযোগেই বাজিমাত ফরাসি তারকার। ২০২৫ সালে মোট ৫৮ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এমবাপে এ বছর ১১টি ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন, হ্যাটট্রিক করেছেন ৪টিতে। ৫৯ গোলের ৩০টি এসেছে গত মরসুমের শেষের দিকে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Manchester United F.C. Manchester City

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy