Advertisement
E-Paper

‘বন্ধন’-এ জুড়ে গেল খুলনা ও কলকাতা

আরও একটা ট্রেন যে শুধু দুই বাংলার দুই শহরকেই জুড়ে দিল, তা তো নয়। নতুন করে জুড়ল যেন দু’টি দেশকেই। পারস্পরিক সম্পর্কের বাঁধনে অনেক গ্রন্থি আগে থেকেই আছে। তাতে দেওয়া হল আরও একটি গ্রন্থি। ভেবেই আনন্দে আত্মহারা বনগাঁর বিমল মণ্ডল।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:০২
উৎসুক: বৃহস্পতিবার উদ্বোধনের পরে পেট্রাপোল সীমান্ত পেরোচ্ছে কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেস। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

উৎসুক: বৃহস্পতিবার উদ্বোধনের পরে পেট্রাপোল সীমান্ত পেরোচ্ছে কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেস। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

ন’বছর আগেকার এক সন্ধ্যায় ‘মৈত্রী’ যখন সীমান্ত পেরিয়ে ও-পার বাংলায় ঢুকেছিল, তখন টর্চের পর টর্চ জ্বালিয়ে আনন্দের অকাল দীপাবলি পালন করেছিলেন সাধারণ মানুষ। সেটা ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল।

২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার ‘বন্ধন’ যখন সীমান্তে পৌঁছল, তখনও আঁধার নামেনি। টর্চ জ্বালানোর সময় হয়নি। ভরদুপুরের সেই মুহূর্তটাকে স্মরণীয় করে রাখতে নতুন অতিথির সঙ্গে দেদার নিজস্বী তুললেন দুই বাংলার মানুষ।

মৈত্রীর পরে বন্ধন। দু’‌দেশের সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে এ দিন যাত্রা শুরু হল দ্বিতীয় ট্রেনটির। সাক্ষী থাকলেন সীমান্তের কয়েক হাজার মানুষ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যথাক্রমে
দিল্লি, ঢাকা এবং কলকাতা থেকে ভিডিও-সম্মেলনের মাধ্যমে একযোগে সবুজ পতাকা নেড়ে কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করলেন। ঘড়িতে তখন বেলা ১১টা ১০।

আরও একটা ট্রেন যে শুধু দুই বাংলার দুই শহরকেই জুড়ে দিল, তা তো নয়। নতুন করে জুড়ল যেন দু’টি দেশকেই। পারস্পরিক সম্পর্কের বাঁধনে অনেক গ্রন্থি আগে থেকেই আছে। তাতে দেওয়া হল আরও একটি গ্রন্থি। ভেবেই আনন্দে আত্মহারা বনগাঁর বিমল মণ্ডল। ‘‘প্রায় আমার ভিটের উপর দিয়েই ট্রেন যাচ্ছে। এই মুহূর্তটাকে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে একটা সেলফি তুলে রাখলাম,’’ পেট্রাপোল স্টেশনে দাঁড়িয়ে বললেন বিমল। আবেগের টানে ছুটে এসেছিলেন অনেক মহিলাও। তাঁদেরই এক জন আলপনা বিশ্বাস বললেন নিজের স্বপ্নের কথা, ‘‘এই ট্রেনে চেপে একটি বার পাশের দেশটা দেখে আসতে চাই।’’

এই লাইন দিয়েই প্রায় ৫২ বছর আগে নিয়মিত যাতায়াত করত যাত্রী-ট্রেন। তার পরে আবার সেই চলাচলের সূচনা হল বৃহস্পতিবার। নতুন ট্রেনের সঙ্গে ও-পারের দ্বিতীয় ভৈরব এবং তিতাস রেলসেতুরও উদ্বোধন হল। ভারতের ঋণ-সাহায্যে গড়ে তোলা হয়েছে এই দু’টি সেতু। এ দিন একই সঙ্গে চালু হল মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেসের যাত্রীদের জন্য উভয় দেশের প্রান্তিক স্টেশনে অভিবাসন ও শুল্ক পরীক্ষার ব্যবস্থাও। এর ফলে যাত্রার সময় প্রায় তিন ঘণ্টা কমে গেল।

যাত্রা শুরুর অনুষ্ঠানে মোদী বাংলায় বলেন, ‘‘মৈত্রী ও বন্ধন ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক সুদৃঢ় করবে।’’ দু’‌দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে রেল-সংযোগ আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা দু’‌দেশ মিলে ঠিক করেছি, ১৯৬৫ সালের আগে যে-সব রেললাইন চালু ছিল, সেগুলো ফের চালু করব।’’

সম্প্রতি ভারতের সহযোগিতায় বাংলাদে‌শের কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের বিষয়টি উল্লেখ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি আনন্দের সঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, রেল, সড়ক, নৌপথ, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইড্থ ছাড়িয়ে আমাদের দুই বন্ধু দেশের যোগাযোগ এখন মহাকাশ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।’’ আর মমতা বলেন, ‘‘ভারতের বন্ধু দেশ বাংলাদেশ। এ বার সেই বন্ধুত্ব আরও জোরদার হবে।’’ ভিডিও-সম্মেলনে হাসিনাকে এ রাজ্যে আসার আমন্ত্রণ জানান মুখ্যমন্ত্রী।

এ দিন অবশ্য যাত্রাপথে কোনও যাত্রী ছিলেন না ‘বন্ধন’-এ। ফাঁকাই গিয়েছে ট্রেন। পূর্ব রেল জানিয়েছে, আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে যাত্রী নিয়ে যাতায়াত শুরু করবে বন্ধন।

Bandhan Express India Khulna Kolkata Flagged Off Narendra Modi Mamata Banerjee Sheikh Hasina
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy