Advertisement
E-Paper

বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার নিন্দায় ঢাকা

বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান মনে করেন, মহাপ্রাণ মানুষ ও সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্রকে অন্তত রাজনৈতিক বিবাদের বাইরে রাখা হোক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৯ ০৩:৫১
ভূপতিত: এ বছর সেপ্টেম্বরে জন্মের দ্বিশতবর্ষ পূর্তি হবে বিদ্যাসাগরের। তার আগেই ফের আক্রান্ত তিনি। মঙ্গলবার বিদ্যাসাগর কলেজে। নিজস্ব চিত্র

ভূপতিত: এ বছর সেপ্টেম্বরে জন্মের দ্বিশতবর্ষ পূর্তি হবে বিদ্যাসাগরের। তার আগেই ফের আক্রান্ত তিনি। মঙ্গলবার বিদ্যাসাগর কলেজে। নিজস্ব চিত্র

কলকাতায় সন্দেহভাজন গেরুয়া বাহিনীর হাতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মুর্তি ভাঙার ঘটনায় উদ্বিগ্ন বাংলাদেশের বিশিষ্ট মানুষেরাও। দুষ্কৃতীদের খুঁজে বার করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এই ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন।

বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বিদ্যাসাগর কলেজে দুষ্কৃতী হামলা এবং ঈশ্বরচন্দ্রের ভাস্কর্য তছনছ করার নিন্দা করে বলেন, ‘‘মানবতাবাদী এবং জ্ঞানী বিদ্যাসাগরের তো কোনও রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তাঁর কাছে বাঙালির ঋণ অপরিসীম। সেই ঋণ কী ভাবে পরিশোধ করা যায়, বাঙালি দু’শো বছরেও ভেবে উঠতে পারেনি। বিদ্যাসাগরের ভাস্কর্যকে অসম্মান করা, সেটিকে ভেঙে চুরমার করার ঘটনা, আর যাই হোক ঋণ পরিশোধের উপায় নয়। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি।’’ আনিসুজ্জামানের দাবি— যারা এই ঘৃণিত কাজ করেছে আর যারা তাদের মদতদাতা, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।

বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান মনে করেন, মহাপ্রাণ মানুষ ও সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্রকে অন্তত রাজনৈতিক বিবাদের বাইরে রাখা হোক। তিনি বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগরকে আমরা সবাই শ্রদ্ধা করি। তাঁর মূর্তিতে আঘাত করে যারা রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে, বিদ্যাসাগরের দু’শো বছরের আলোকবর্তিকার কাছে তারা অতি তুচ্ছ! এর কড়া নিন্দা করি।’’

মৌলবাদ-বিরোধী আন্দোলনের নেতা শাহরিয়ার কবিরের কথায়, এই বর্বরতাকে হালকা ভাবে দেখার সুযোগ নেই। গোটা ভারতের উচিত নিন্দায় সরব হওয়া। তিনি বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগর বাংলার নবজাগরণের দূত। রাজনীতি নিয়ে, ভোট নিয়ে বিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু বিদ্যাসাগরের মতো যাঁরা দল-মতের ঊর্ধ্বে, ভোট যুদ্ধের বাইরে, তাঁদের নিয়ে কেন হানাহানি হবে? তাঁদের ওপর কেন হামলা, কেন ভাঙচুর?’’ ‘মূর্তি ভাঙার কারিগর’-দের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন কবির।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য শিক্ষাবিদ আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক মনে করেন এ সব উগ্রবাদের লক্ষণ। তিনি নিশ্চিত, বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে যাঁরা ভাঙচুর করেছে, তারা তাঁকে জানে না। জানলে এই কাজ করতে পারত না। সিদ্দিক বলেন, ‘‘ধর্মের বেশে এক এক দেশে এক এক ভাবে উগ্রপন্থা আবির্ভূত হচ্ছে। শ্রীলঙ্কায় এক রূপে, নিউজিল্যান্ডে অন্য রূপে। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুর আমাদের পরাজয়। আমরা পিছিয়ে গেলাম। হামলাকারীদের বিষদাঁত উপড়ে দিতে হবে।’’

Vidyasagar College Vandalization Bangladesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy