Advertisement
E-Paper

জন্মনিয়ন্ত্রণ জরুরি, ঢাকা বোঝাতে চায় রোহিঙ্গাদের

ইতিমধ্যেই মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন কমপক্ষে ৬ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিম। উপচে যাচ্ছে সীমান্তবর্তী ক্যাম্পগুলো। ঝড়-জল-বৃষ্টিতে একফালি ছাউনির নীচে কোনও মতে মাথা গোঁজা। এক জনের খাবার দশ জনে ছিনিয়ে খাওয়া।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৭ ০২:১৪
সদ্যোজাত: মায়ে-পোয়ে। কক্সবাজারের কাছে একটি শরণার্থী শিবিরে। শনিবার। ছবি: রয়টার্স।

সদ্যোজাত: মায়ে-পোয়ে। কক্সবাজারের কাছে একটি শরণার্থী শিবিরে। শনিবার। ছবি: রয়টার্স।

নিজের দেশের জনসংখ্যা সামলাতে গিয়েই হিমশিম অবস্থা, তার উপরে আবার শরণার্থীদের ঢল। রোহিঙ্গা-পরিস্থিতি নিয়ে আতান্তরে বাংলাদেশ।

ইতিমধ্যেই মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন কমপক্ষে ৬ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিম। উপচে যাচ্ছে সীমান্তবর্তী ক্যাম্পগুলো। ঝড়-জল-বৃষ্টিতে একফালি ছাউনির নীচে কোনও মতে মাথা গোঁজা। এক জনের খাবার দশ জনে ছিনিয়ে খাওয়া। শরণার্থীদের এই বেপরোয়া জীবনযাপন ও পরিবার পরিকল্পনার অভাবে খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের আকাল ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ চেহারা নিতে চলেছে, আশঙ্কায় বাংলাদেশ।

সরকারের পরিবার পরিকল্পনা পরিষেবার কর্তা পিন্টুকান্তি ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘জন্মনিয়ন্ত্রণ নিয়ে কোনও সচেতনতাই নেই। ওঁদের বোঝানো হচ্ছে।’’ তিনি জানান, এমনিতেই গোটা সম্প্রদায়টা অতীতের সব কিছু ফেলে এসেছে। নিজেদের দেশেও তাঁরা নাগরিকের অধিকার পায়নি। বহু পরিষেবা থেকেই বঞ্চিত থেকেছে তাঁরা। শিক্ষা ব্যবস্থার হালও ছিল খুব খারাপ। ফলে ‘জন্মনিয়ন্ত্রণ’ যে ঠিক কী, সে সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই অধিকাংশ রোহিঙ্গা পরিবারের।

পিন্টুই জানাচ্ছেন, এমনও মা-বাবা রয়েছেন, যাঁদের ১৯টি সন্তান! বহু পুরুষেরই একাধিক স্ত্রী। প্রশাসন থেকে ৫৪৯টি কন্ডোম বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু তারাই জানাচ্ছে, আদৌ ওগুলো ব্যবহার করা হবে কি না সে নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাই নির্বীজকরণ প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে তারা। সেটা করাও যে বেশ কঠিন হবে, সে ব্যাপারে তারা নিশ্চিত।

কারণ— প্রথমত, জন্মনিয়ন্ত্রণ ইসলাম-বিরোধী। দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গাদের বক্তব্য, পরিবার বড় না হলে এই বিদেশবিভুঁইয়ে বেঁচে থাকা অসম্ভব। যেখানে, নিত্যদিনের খাবার আর পানীয় জল জোগাড় করাই এক রকম যুদ্ধের সামিল। প্রতিদিন যে লড়াইয়ে নামতে হয় ছোটদেরও।

বাংলাদেশের এক স্বেচ্ছাসেবী কর্মী ফারহানা সুলতানা বলেন, ‘‘রাখাইনে থাকতেও ওরা কোনও দিন পরিবার পরিকল্পনার কথা ভাবত না। এর জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও যেত না। ওদের ভয় ছিল, মায়ানমার সরকার এমন ওষুধ দেবে, যাতে ওদের সন্তানদের ক্ষতি হবে।’’ সাত সন্তানের মা সবুরা নামে এক মহিলা যেমন জানালেন, তাঁর স্বামীকে দু’টো কন্ডোম দেওয়া হয়েছিল। তিনি ব্যবহার করেননি।

বাংলাদেশ যখন ‘জনবিস্ফোরণ’-এর চিন্তায়, ঘর গোছাচ্ছে মায়ানমার। আজ সরকার থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, উত্তর রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের ফেলে যাওয়া ৭১ হাজার একর জমিজুড়ে ধান চাষ করা হবে। চাষবাসের জন্য দেশের অন্য প্রান্ত থেকে দক্ষ কৃষক আনা হবে। সেই ঘোষণায় রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ কিন্তু অনুচ্চারিতই রয়ে গিয়েছে।

Rohingya Birth Control Cox Bazar রোহিঙ্গা মায়ানমার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy