Advertisement
E-Paper

সন্ত্রাস রোধে হাসিনার পাশেই দিল্লি

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি উপদ্রব ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় শেখ হাসিনা সরকারের ওপরই ভরসা রাখছে দিল্লি। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আজ এ কথা জানিয়ে বলেন, এ জন্য ঢাকাকে সব ধরনের সাহায্য করতে তৈরি দিল্লি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৬ ০৯:৩৪
ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। রবিবার। — নিজস্ব চিত্র

ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। রবিবার। — নিজস্ব চিত্র

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি উপদ্রব ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় শেখ হাসিনা সরকারের ওপরই ভরসা রাখছে দিল্লি। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আজ এ কথা জানিয়ে বলেন, এ জন্য ঢাকাকে সব ধরনের সাহায্য করতে তৈরি দিল্লি। শুধু সরকারই নয়, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও সংখ্যালঘু হত্যার বিরুদ্ধে।

আজ বিদেশমন্ত্রীর বার্ষিক সাংবাদিক সম্মেলনে ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে হুমকি এবং সে দেশের সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পুরো বিষয়টিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ ও ‘দুঃখজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন সুষমা। পাশাপাশি বলেছেন, ‘‘রামকৃষ্ণ মিশনে হুমকির বিষয়টি নিয়ে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ স্তরের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছি। তবে এই ঘটনা প্রতিরোধে তৎপরতায় কোনও ত্রুটি করছে না তারা। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ৩০০০ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ঢাকা জানিয়েছে।’’

শুধু সরকার নয়, ইসলামি ধর্মগুরুরাও যে এই হত্যালীলার বিরুদ্ধে সমবেত হয়েছেন, সে কথাও আজ বলেছেন সুষমা। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলাদেশের ইসলামি ধর্মগুরুরা এই ঘটনাগুলির বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেছেন। তাঁরা বলেছেন— সন্ত্রাস, হত্যাকাণ্ড ইসলাম-বিরোধী কাজ। ১ লাখের বেশি আলেম-উলেমা এই ফতোয়ায় সই করেছেন। আমরা খুশি, কেন না এটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে সাধারণ মানুষও সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এই আক্রমণের বিরুদ্ধে।’’

বুধবার হুমকি চিঠি আসার পরে রবিবার ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে গিয়ে সন্ন্যাসীদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশ যে ভাবে মিশনের নিরাপত্তায় তৎপর হয়েছে, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেন শ্রিংলা। তিনি বলেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দিল্লি বরাবরই ঢাকার পাশে রয়েছে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের ঘটনাগুলির পিছনে একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করছে বলে মনে করছেন বিদেশ মন্ত্রকের অনেকে। সেটি হল বিজেপি তথা আরএসএস-কে তাতিয়ে হাসিনা সরকারের উপর চাপ তৈরি করা। পাল্টা কৌশল হিসাবে নয়াদিল্লি হাসিনাকে পূর্ণ সহযোগিতা করছে, যাতে মৌলবাদী জঙ্গি সংগঠনগুলির উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কোনও ভুল বোঝাবুঝির পরিসর যেন তৈরি না-হয়, সে জন্য তারা সতর্ক। বাংলাদেশে নিশানা করা হচ্ছে তাঁদেরই, যাঁরা হিন্দু ধর্ম চর্চার সঙ্গে যুক্ত। সম্প্রতি ৭০ বছর বয়স্ক পুরোহিত আনন্দ গঙ্গোপাধ্যায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া গত কয়েক মাস ধরেই রামকৃষ্ণ মিশনের বিভিন্ন কেন্দ্রে সন্ন্যাসীদের ফোন করে বা চিঠি পাঠিয়ে ‘কোতল করার’ হুমকি দেওয়া হচ্ছে। হামলার নিশানায় সংখ্যালঘুদের অন্য কয়েকটি আশ্রমও।

বিদেশ মন্ত্রক মনে করে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিশানা করার উদ্দেশ্য রাজনৈতিক। ভারতের কাছে এই বার্তা পৌঁছনোর চেষ্টা করা হচ্ছে যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। সন্ত্রাস এবং ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, হাসিনা যা দূর করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। নয়াদিল্লি যাতে বিএনপি-জামাত জোটকে মান্যতা দিতে বাধ্য হয়, তার জন্যই এ’টি চাপের কৌশল। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য আরএসএস-কে বিষয়টি নিয়ে তাতিয়ে ভারতেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশটি নষ্ট করা, অস্থিরতা তৈরি করা।

তবে এ নিয়ে কোনও আক্রমণাত্মক মন্তব্য শোনা যায়নি সংঘ পরিবারের পক্ষ থেকে। এ ক্ষেত্রে আরএসএস-কে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।

Delhi Dhaka
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy