Advertisement
E-Paper

শতবর্ষ আসছে, সেরার সেরা ঐতিহ্যে আজও অমলিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আত্মপ্রকাশ ১৯২১-এ। ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য বাংলার বাঘ আশুতোষ মুখোপাধ্যায়।

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৮:১৩
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আত্মপ্রকাশ ১৯২১-এ। ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য বাংলার বাঘ আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। চেষ্টা করেও কাঁটা ছাড়াতে পারেননি। তাঁর নির্দেশ অমান্য করেই কলকাতার শিক্ষকেরা ছুটেছেন ঢাকায় পড়াতে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর উদ্দীপনায় শিক্ষার নবউন্মেষ। বাঙালির আলোকস্তম্ভ। হতভম্ব অক্সফোর্ড। বিদ্যাচর্চাতেই থেমে থাকেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। জাতির বিবেক হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণে ঝাঁপিয়েছে। যে কোনও অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদে মুখর হয়েছে। এমন নজির আর কোথায়!

সেই ঐতিহ্য আজও বর্তমান। সময়ের ভারে ঢাকা পড়েনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। অবিশ্বাস্য প্রত্যয়ে আরও চার বছর পর শতবর্ষে পা রাখবে সে। বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় এখন অনেক। পেশাদারি শিক্ষায় শিক্ষিত করে ছাত্রছাত্রীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিচ্ছে। টেক্কা দিতে চাইছে একে অপরকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পেরে উঠছে কই! মেধার সঙ্গেই হৃদবৃত্তির গুরুত্ব দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অবশ্য পেরে ওঠা কঠিন! আর্থিক সামর্থ্যে আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ নিয়ে পেশাদার হওয়া যায়। দেশের জন্য সর্বস্ব পণ করার সাহস কোথায়?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ নিতে এখনও ব্যাকুল নতুন যুগের শিক্ষার্থীরা। ফি বছর আবেদন জমা পড়ে তিন লাখ। জায়গা পায় মাত্র ৩ হাজার ৮০০। লাখ লাখ প্রার্থী ফেল করে হতাশ। মৌলিক গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনন্য অবদান। ‘সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন সায়েন্সেস’ বা সি আর এস-এ বিদেশি গবেষকদেরও ভিড়। গত সাত বছরে এম ফিল ৬৫০, পিএইচডি ৫৪৪। বাজেটের বাইরেও গবেষণার পরিকাঠামোতে ব্যয় বাড়ছে। বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তায় অতিরিক্ত ১০৫ কোটি টাকা এসেছে। আগেই ৫৩৫ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। ৬২০ কোটি টাকা অনুমোদনের অপেক্ষায়। নতুন নির্মাণ, বিজয় ’৭১ হল, সুফিয়া কামান হল, বঙ্গবন্ধু টাওয়ার, মুনীর চৌধুরী টাওয়ার, শেখ রাসেল টাওয়ার, সাতই মার্চ ভবন, কলাভবন। সম্প্রসারণ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের।

আরও খবর: ২২ ডিসেম্বর নির্বাচন নারায়ণগঞ্জে, জোর লড়াইয়ে প্রস্তুত সব দল

ক্লাস ফাঁকি অসম্ভব। সময়ে সিলেবাস শেষ করে নির্দিষ্ট দিনে পরীক্ষা। কোথাও কোনও অনিয়ম নেই। বিদেশে পড়তে গেলে রেজাল্টের জন্য আটকে থাকতে হয় না। পঠনপাঠন আর পরীক্ষাকে নিয়মে গেঁথে ফেলার কৃতিত্ব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। এখান থেকেই বেরিয়েছেন দেশের অধিকাংশ নেতানেত্রী। প্রশাসনেও বেনজির স্বাক্ষর। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস, বি সি এস-এ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিযোগী কম নয়। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে লড়ে কেউ পেরে ওঠে না। ৬৫ শতাংশই পান তাঁরা। মেধা তালিকায় প্রথম ২০ তাঁদেরই দখলে। এ বছর ২ হাজার ১৬৯ জন সফল বি সি এসের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। তাঁরা শুধু দেশের প্রশাসনিক পদে নয়, রাষ্ট্রদূত হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেন বিদেশে। বিদেশিদের সামনে তাঁরাই বাংলাদেশের মুখ।

কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীদের আঁতুরঘর তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই। জাতীয় সমৃদ্ধির শেকড় সেখানেই। শতবর্ষের উৎসবের তোড়জোড় শুরু এখন থেকেই। দেশ-বিদেশের নক্ষত্রেরা আসবেন। বাদ পাকিস্তান। তারা সন্ত্রাস বন্ধ না করা পর্যন্ত কোনও সম্পর্ক নয়।

Dhaka University
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy