Advertisement
E-Paper

ফের জঙ্গি আস্তানার হদিশ, চট্টগ্রামে অভিযান, চলছে গোলাগুলি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে দুটি বাড়ি ঘিরে অভিযান চালাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৭ ১৮:২৪
—প্রতীকী ছবি (সৌজন্যে: বাংলা ট্রিবিউন)।

—প্রতীকী ছবি (সৌজন্যে: বাংলা ট্রিবিউন)।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে দুটি বাড়ি ঘিরে অভিযান চালাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ।

আজ বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে পুলিশ এলাকাটি ঘিরে রেখেছে। জঙ্গি আস্তানা থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুড়ে মারা হয়েছে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মহিউদ্দৌলা রেজা জানান, বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টে নাগাদ এই অভিযান শুরু হয়। এখনও চলছে গুলির লড়াই। চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা বলেন, ‘‘ছায়ানীড় বাড়ি থেকে কিছুক্ষণ পর পর গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। ভেতরে কত জন জঙ্গি আছে তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তবে তাদের ধরতে যতক্ষণ সময় লাগবে পুলিশ তা ব্যয় করবে।’’
সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যাচ্ছে, প্রথমে মহাদেবপুরের আমিরাবাদ এলাকায় সুরেশ বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তির দোতলা বাড়ি ঘিরে অভিযান শুরু হয়।
সেখান থেকে এক মহিলা সহ দু’জনকে গ্রেনেড, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও অস্ত্র-সহ আটক করা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সীতাকুণ্ড কলেজ রোডের প্রেমতলায় শহীন নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে অভিযান শুরু করে পুলিশ।
ওই বাড়ি পুলিশ ঘিরে ফেলার পর ভিতর থেকে পর পর কয়েকটি বোমা ছোড়া হয়। এতে একজন আহত হয়েছেন বলে শোনা গেলেও পুলিশ কর্তাদের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়নি।
পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন, পুলিশ দুটি বাড়িই ঘিরে রেখেছে। পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়েছে।


অভিযানের ছবি (ফোকাস বাংলা সৌজন্যে)।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ডের পৌর সদরের আমিরাবাদ এলাকার সাধন কুঠি নামের একটি বাড়ির নীচতলা থেকে আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে দুজন ‘জঙ্গি’কে আটক করা হয়। এর মধ্যে পুরুষ ব্যক্তিটি নিজেকে জসিম উদ্দিন নামে পরিচয় দিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। সঙ্গের নারীকে তাঁর স্ত্রী বলেছেন। স্ত্রীর নাম আর্জিনা। তাঁদের সঙ্গে দু মাস বয়সী শিশুপুত্র রয়েছে। আর্জিনার কোমরে বোমা বাঁধা ছিল।
বাড়ির মালিক সুভাষ দাস জানান, গত ৪ মার্চ জসিম তাঁর স্ত্রী ও দুই শ্যালক নিয়ে বাড়ি ভাড়া করতে আসেন। ভাড়া নেওয়ার পর জসিমের দুই শ্যালক চলে যান। ভাড়া দেওয়ার সময় জসিমের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি নেন বাড়িওয়ালা। তবে ভাড়া নেওয়ার পর থেকে বাড়ির দরজা জানালা সব সময় বন্ধ রাখতেন জসিম। এ নিয়ে সন্দেহ দেখা দিলে বাড়িওয়ালা সুভাষ দাস ওই পরিচয়পত্র নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, এটা ভুয়ো পরিচয়পত্র। পরে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জোর করে তিনি জসিমের বাসায় ঢুকে দেখতে পান, সেখানে প্রচুর তার, সার্কিট। এসব দিয়ে কী করা হয় জানতে চাইলে জসিম উত্তর দেন, তাঁরা সার্কিট বানানোর কাজ করেন। বাড়িওয়ালা সেখান থেকে একটি সার্কিট নিয়ে আসেন। পরে তিনি সেটা পরিচিত এক বিদ্যুৎ মিস্ত্রিকে দেখান। মিস্ত্রি জানান, এটা টাইমার। এটা জানার পর আজ সকালে তিনি পুলিশকে খবর দেন।

আরও পড়ুন: শুরু করা কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে, বাজেট বৃদ্ধি বাংলাদেশের

পুলিশ দাবি করেছে, বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করার সময় তাদের বাধা দেন জসিম ও আর্জিনা। এক পর্যায়ে পুলিশ জোর করে ঘরে ঢুকলে আর্জিনা তাঁর কোমরে হাত দিতে যান। সেটা দেখে বাড়িওয়ালা ও তাঁর স্ত্রী ওই নারীর দুই হাত শক্ত করে ধরে ফেলেন। পরে পুলিশ আর্জিনার কোমর থেকে বোমা উদ্ধার করে।
সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউর রহমান সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, দেশে জঙ্গি বিরোধী অভিযানের অংশ হিসাবে বাড়িওয়ালাদের সচেতন করা হচ্ছিল। বাসা ভাড়া দেওয়ার আগে ভাড়াটেদের সম্পর্কে তথ্য জানার আহ্বান জানানো হচ্ছিল। আজ বেলা আড়াইটার দিকে এই বাড়ির মালিক সুভাষ দাস ভাড়াটেকে জঙ্গি সন্দেহে পুলিশকে খবর দেওয়া মাত্র পুলিশ এসে বাড়িটি ঘেরাও করে ফেলে। জঙ্গি দম্পতির বাসা থেকে প্রচুর পরিমাণে বোমা তৈরির সরঞ্জাম, গ্রেনেড ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, পৌর সদরের প্রেমতলায় আরেকটি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পেয়েছে তারা। বাড়িটি ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। সেখানে জঙ্গিদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলি চলছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।

Bangladesh Terrorism Chittagong
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy