Advertisement
০৩ মে ২০২৪

নতুন সড়ক নতুন সেতুর সঙ্গে পাতাল রেল, যানের জট কাটাতে মরিয়া ঢাকা

আলতো করেও অ্যাক্সেলে চাপ দেওয়ার জো নেই। চাকা গড়াবে কোথায়! সামনে পেছনে গাড়ির সারি। বাড়ি থেকে ঘড়ি ধরে বেরিয়ে পথে নামতেই বিভ্রাট। সময়ে কোথাও পৌঁছনো অসম্ভব। সিগন্যালে লাল আলো জ্বলছে তো জ্বলছেই। সবুজের দেখা নেই। সবার ভাবনা একই।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৬ ১৪:২৪
Share: Save:

আলতো করেও অ্যাক্সেলে চাপ দেওয়ার জো নেই। চাকা গড়াবে কোথায়! সামনে পেছনে গাড়ির সারি। বাড়ি থেকে ঘড়ি ধরে বেরিয়ে পথে নামতেই বিভ্রাট। সময়ে কোথাও পৌঁছনো অসম্ভব। সিগন্যালে লাল আলো জ্বলছে তো জ্বলছেই। সবুজের দেখা নেই। সবার ভাবনা একই। আহা, অন্য গাড়িগুলো যদি না থাকত, কত ভাল হত। গাড়িটা ছুটত রুদ্ধশ্বাসে। ঢাকার ফাঁকা রাস্তায় তখন চলাচলে কত সুখই না হতো। কিন্তু সে তো হওয়ার নয়, রাস্তা কারও একার হয় কখনও! সবাইকে যেতে হবে সবার কাজে। আগে পরে নয়, ঠিক সময়ে। গতি হারালে কত ক্ষতি সরকারও জানে। তারা মুখ ফিরিয়ে বসে নেই। সমাধান সন্ধান সর্বস্তরে। প্রথম ধাপে ফ্লাইওভার। একটায় হবে না। একটার পর একটা চাই। রাজপথের মাথায় বিকল্প রাস্তা। ছোটাছুটি নির্বিঘ্নে। পায়ে পায়ে নয়, চাকায় চাকায়। সবচেয়ে বড় উড়ালপুল হচ্ছে মগবাজার-মৌচাক ৮.২৫ কিলোমিটার রাস্তায়। খরচ ৭২৩ কোটি টাকা। চার লেনের সড়ক। আটকে থাকার প্রশ্ন নেই।

শুধু ঢাকা নিয়ে পড়ে থাকলে চলে না। চট্টগ্রামের কথা না ভাবলে তারা যে চটবে। এমনিতে অনেক কমপ্লেন। যা কিছু ভাল সব ঢাকাকে দাও, বাকিরা দূরে যাও। ঢাকা-চট্টগ্রাম দূরত্ব মাত্র ১৯২ কিলোমিটার। এইটুকু পথ শেষ করতে নাভিশ্বাস। ঝঞ্ঝাট সেই একই। যানজট সামলাতে জান কবুল। মনে মনে প্রতিজ্ঞা, ভুলেও আর এ রাস্তায় নয়। ঢাকা থাক ঢাকায়। চট্টগ্রাম চট্টগ্রামে। যোগাযোগের যন্ত্রণা থেকে রেহাই। এবার অভিমানের মূল্য চোকাচ্ছে সরকার। ঢাকা-চট্টগ্রাম রাস্তা চার লেনের হচ্ছে। অনেকটা হয়েছে। আর আট কিলোমিটার হলেই কমপ্লিট। পার্বত্য চট্টগ্রামে ২২৭ কিলোমিটার মহাসড়কের কাজ শেষ। যান ছুটছে অবিরাম। ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ খামচি-আলীকদম মহাসড়ক উন্মুক্ত। একের পর এক সেতু গড়ে নদী ডিঙিয়ে যাওয়ার তৎপরতা। সিলেটে সুরমা নদীর ওপর কাজির বাজার সেতু, বিরুলিয়া-আশুলিয়া সড়কে বিরুলিয়া সেতু। আড়িয়াল খাঁ সেতু, ব্রহ্মপুত্র সেতু, কলাতলী সেতুর কাজ শেষ। কর্ণফুলি নদীর নীচে সাড়ে তিন কিলোমিটার টানেল তৈরির প্রাথমিক কাজ চলছে।

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির খানিক কিনারা হলেও মাথাদের নাগাল মিলবে কি

কাজ শুরু করে ফেলে রাখায় তীব্র আপত্তি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তাঁর ধারণা, কাজে দেরী হলে সমস্যা বেড়ে যায়। যান-বাহনের চাপ থেকে ঢাকাকে মুক্ত করতে তিনি বদ্ধপরিকর। শাহজালাম বিমানবন্দর থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তার ২৪ কিলোমিটার পথটা হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। কাজ চলছে। শেষ হতে সময় লাগবে না।

এত করেও সমতলে সমস্যার তল পাওয়া কঠিন। এবার তাই পাতাল থেকে আলাপ। মাটির নীচে ছুটবে মেট্রো রেল। প্রস্তুতির পর্ব চলছে। উত্তরা থেকে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রাস্তায় পাতাল রেল পরিক্রমা। খরচ ২২ হাজার কোটি। লাইন বসলেই রেক বুক করা হবে। উন্নয়নের স্বার্থেই গতির দিকে নজর সরকারের। রাজধানী ঢাকাকে রূপে গুণে অদ্বিতীয়া করতে চেষ্টার কসুর নেই। বিলম্বিত লয়ে নয়, দ্রুত ছন্দে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dhaka Traffic Jam Metro Rail In Dhaka
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE