Advertisement
E-Paper

নববর্ষে উৎসব নয়, জামাতের সুরে হেফাজত

ইউনেস্কো ইতিমধ্যেই ঢাকায় নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা দিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:১৩
রাত পোহালেই মঙ্গলযাত্রায় বর্ষবরণ ঢাকায়। চারুকলা অনুষদে তুলির শেষ টান। শনিবার। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী

রাত পোহালেই মঙ্গলযাত্রায় বর্ষবরণ ঢাকায়। চারুকলা অনুষদে তুলির শেষ টান। শনিবার। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী

জামাতে ইসলামির সুর আবার শেখ হাসিনা সরকারের সমর্থক হেফাজতে ইসলামির আমিরের কণ্ঠে। চট্টগ্রামের হাটহাজারি মাদ্রাসার মহাপরিচালক হেফাজতের প্রধান (আমির) আহমদ শফি জানিয়েছেন, গানবাজনা ও শোভাযাত্রা করে বাংলা নববর্ষ পালন ইসলাম-বিরোধী। এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া অনুচিত। তবে বাংলাদেশ সরকার মৌলানা শফির এই নির্দেশকে গুরুত্ব দিতে নারাজ।

পঞ্জিকা সংস্কারের ফলে প্রতি বছর এপ্রিলের ১৪ তারিখেই নববর্ষ পালিত হয় বাংলাদেশে। রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম, যশোর, রাজশাহি, কুষ্ঠিয়া, খুলনা, বরিশাল— সব শহরেই এ দিন সকাল থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বর্ণময় শোভাযাত্রায় বাংলার নতুন বছরের সূচনা পালিত হয়। ইউনেস্কো ইতিমধ্যেই ঢাকায় নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা দিয়েছে। এ বারেও চারুকলা অনুষদের ছাত্রছাত্রীরা রংবেরঙের মুখোশ ও মূর্তি বানিয়ে কালকের শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রমনার বটমূল (আসলে অশ্বত্থ গাছ)-এ ভোর থেকে শুরু হবে ‘ছায়ানট’-এর বর্ষবরণের অনুষ্ঠান।

জামাতে ইসলামি ও অন্য মৌলবাদী সংগঠনগুলি বরাবরই বাঙালির এই অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি চর্চার বিরোধিতা করে এসেছে। তাদের দাবি, এ ভাবে নববর্ষ পালন ধর্মবিরোধী। এর আগে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি-জামাতে ইসলামির সরকার এই অনুষ্ঠানকে নিরুৎসাহ করে এসেছে। ২০০১-এর নববর্ষে ছায়ানটের অনুষ্ঠানে মৌলবাদী জঙ্গিদের বোমা বিস্ফোরণে ৯ জন নিহত হন। আহত হন বহু। তবে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় এসে জঙ্গি ও মৌলবাদীদের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বাঙালির এই অনুষ্ঠানকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে সক্রিয় হয়। এ দিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনও সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

কিন্তু এর মধ্যেই উল্টো সুর। সরকার সমর্থক হিসেবে পরিচিত হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফি কিছু দিন আগেই মন্তব্য করেছিলেন— মেয়েদের পঞ্চম শ্রেণির বেশি পড়ানো উচিত নয়। স্কুল-কলেজে ছেলেদের সংস্পর্শে এসে মেয়েরা ‘বিগড়ে’ যায়। তার পরে শনিবার তিনি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, নববর্ষের উৎসব বিজাতীয়, ইসলামি সংস্কৃতির পরিপন্থী। নববর্ষে শোভাযাত্রা ও গানবাজনার অনুষ্ঠানে যোগ না-দেওয়ার জন্য তিনি তরুণ-তরুণীদের আহ্বান জানান।

তবে শাসক দল আওয়ামি লিগ হেফাজত প্রধানের বিবৃতিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। দলের এক বর্ষীয়ান নেতা বলেন, মৌলবাদীদের আবেদন ও চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ কাল বর্ষবরণের উৎসবে অংশ নেবেন। বাংলাদেশের মানুষই ফতোয়া খারিজ করে দেবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল শনিবার বিকেলে রমনার বটমূলে গিয়ে অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা খতিয়ে দেখেন। জানিয়ে দেন, কোনও হুমকি বা আশঙ্কা নেই। মানুষ নির্ভাবনায় উৎসবে অংশ নিতে পারবেন।

Hefazat-e-Islam Bangladesh Bengali New Year
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy