Advertisement
E-Paper

বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ভোগ করছে ভারত, আমেরিকাও

দরজা জানালা খোলা রেখে এসি চালালে কী লাভ। ঘর ঠান্ডা তো হবেই না। মাঝখান থেকে হু হু করে কারেন্ট পুড়বে। গরম থেকে রেহাই দূর অস্ত্। এমন খামখেয়ালি কাজ মানা যায় না। বাংলাদেশের বাণিজ্যে এমনটাই হচ্ছে।

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৬ ১৪:২৮

দরজা জানালা খোলা রেখে এসি চালালে কী লাভ। ঘর ঠান্ডা তো হবেই না। মাঝখান থেকে হু হু করে কারেন্ট পুড়বে। গরম থেকে রেহাই দূর অস্ত্। এমন খামখেয়ালি কাজ মানা যায় না। বাংলাদেশের বাণিজ্যে এমনটাই হচ্ছে। রফতানিতে যত আয় তার চেয়ে ব্যয় বেশি। আয়ের ৮০ শতাংশ ছিদ্রপথে বিদেশে চলে যাচ্ছে। ঠেকাবে কে! সর্ষের মধ্যেই যে ভূত! অভিযোগের আঙুল কাস্টমস আর ব্যাঙ্ক কর্তাদের দিকে। রফতানি সংস্থার মালিকদের সঙ্গে যোগসাজসে তাঁরা অর্থ নির্গমনের পথ চওড়া করছেন। টাকার বৈভবে আহ্লাদে আটখানা। প্রাপ্য রসদ থেকে বঞ্চিত হয়ে শীর্ণ হচ্ছে দেশের অর্থনীতি।

দোষটা শুধু বাংলাদেশের নয়, যারা নিচ্ছে তাদেরও। কৃষ্ণবর্ণ অর্থের অনুপ্রবেশ বন্ধের দায়িত্ব তারা এড়ায় কী করে। অপরাধ ভারতেরও। সেখানেও চার ফেলে পাচার হওয়া টাকা ঘরে তোলার লোকের অভাব নেই। সরকারি স্তরে কড়া ব্যবস্থা নিয়ে ঠেকানো যাচ্ছে না কেন! ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। আসলে অর্থস্রাবী আগ্নেয়গিরির লাভা স্রোতের লোভ থেকে উত্তীর্ণ হওয়াটা কঠিন হয়ে পড়েছে। এভাবে পাওয়া টাকাটা খারাপ টাকা। খারাপ টাকা ভাল কাজে নয়, খারাপ কাজেই লাগে। সন্ত্রাসীরাও এই টাকার প্রতীক্ষায় থাকে। যে দেশেই তারা থাকুক, তাদের প্রথম লক্ষ্য সে দেশের অর্থনীতির ভিত ভেঙে চুরমার করে নিজেদের ঐশ্বর্য বৃদ্ধি। নাশকতায় সক্রিয় হওয়ার সহজ রাস্তা সেটাই।

ভারত ছাড়াও আরও ৩৬টি দেশ বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ভোগ করছে। তার মধ্যে আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, বেলজিয়াম, পোলান্ড, ব্রিটেন, জার্মানি, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, জাপানও আছে। সুযোগ বুঝে, কালো টাকা আত্মসাতের খেলায় নেমেছে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, রোমানিয়া, তুরস্ক, বেলারুশ, মরিশাস।

বোঝাই যাচ্ছে, টাকা পাচারের র‍্যাকেট নেহাৎ ছোট নয়। এত বড় চক্র এক দিনে গজায়নি। ধীরে ধীরে ডানা ছড়িয়েছে। এইসব দেশকে সাবধান করার দায়িত্ব বাংলাদেশের। অর্থনৈতিক ক্ষতিটা তাদেরই বইতে হচ্ছে। রফতানি বাণিজ্যে বাংলাদেশের সব থেকে বেশি আয় পোশাক শিল্পে। রফতানির ৮২ শতাংশ তারাই করে। পাচার চক্রে তারাই যুক্ত। পোশাক শিল্পে যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য শুল্ক নেওয়া হয় না। সেখানেও গোলমাল। কম দামে মাল কিনে বেশি দাম দেখানো হয়। অতিরিক্ত টাকাটা ফাঁক গলে চলে যায় বিদেশে।

দশ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৪৯ হাজার ১৩ কোটি ডলার। পরিমাণটা কী ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার মতো? টাকাটা কোথায় কীভাবে খরচ হল সেটাও তো দেখা দরকার। সব রফতানিকারক সংস্থাই যে এ কাজ করছে এমন তো নয়। অপরাধীদের জেরা করলেই জানা যাবে কোন দেশে কত টাকা যাচ্ছে। কী কাজে লাগছে। বাংলাদেশের ঊর্ধ্বমুখী অর্থনীতিকে টান মেরে নীচে নামানোর চেয়ে জঘন্য কাজ আর কী হতে পারে। যাদের জেলখানার ভেতরে থাকার কথা, তারা বাইরে ঘুরে বেড়ায় কী করে!

আরও খবর...

বাংলাদেশের পুলিশ কর্তা এ কী কথা কন!

Bangladesh Smuggled money India America
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy