প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির একটি মামলায় রায় দেওয়া হবে ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখে। সেই রায়কে নিয়েই ফের অশান্তির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। খালেদার দল বিএনপি হুমকি দিয়েছে, রায়ে নেত্রীর কারাদণ্ড হলে তারা দেশজুড়ে সরকার ফেলার আন্দোলন শুরু করবে। সরকারও জানিয়েছে, ‘গন্ডগোল পাকানোর চেষ্টা’ কঠোর ভাবে প্রতিরোধ করা হবে। শাসক আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঘোষণা করেছেন, ‘‘শরিক জামাতকে নিয়ে খালেদার দল আন্দোলনে নামলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে তা প্রতিরোধ করবেন।’’
ঢাকার পঞ্চম জজ আদালতে জিয়া অনাথালয় (এতিমখানা) তহবিল দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে আট বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত মেয়াদের কারাদণ্ড হতে পারে বিএনপি-জামাত জোটের নেত্রী খালেদা জিয়ার। সে ক্ষেত্রে আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার হারাতে পারেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। খালেদার পুত্র তারেক রহমানও এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত। বিএনপির অভিযোগ, এই মামলা সাজানো। খালেদাকে নির্বাচনের বাইরে রাখতেই সরকার এই কৌশল নিয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির ঘোষণা করেছেন, নেত্রীর বিরুদ্ধে কোনও ‘বিরূপ রায়’ তাঁরা মেনে নেবেন না। তেমনটা হলে দেশজুড়ে সরকার উচ্ছেদের আন্দোলন শুরু হবে।
রবিবার দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায় মন্তব্য করেছেন, ‘‘বেগম জিয়াকে আপনারা (সরকার) জেলে পুরবেন, পুরুন। আমরা কান্নাকাটি করুম না। বলে দিতে চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তির আগেই আপনাদের (সরকারের) পতন ঘটাব। সরকারের পতনে খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন, বাংলাদেশের মানুষও মুক্ত হবেন।’’ আর এক শীর্ষ বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফও এ দিন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘‘খালেদা জিয়া ও বিএনপি ছাড়া বাংলাদেশে নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না!’’
এর আগে ২০১৪-র নির্বাচনে অংশ না-নিয়ে বিএনপি-জামাত জোট শেখ হাসিনার সরকারকে ফেলার লক্ষ্যে ‘জ্বালাও পোড়াও’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল। কয়েক মাস ধরে চলা সেই আন্দোলনে অজস্র গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। বহু মানুষ হতাহত যান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কথায়, মানুষের মনে সেই অরাজকতার স্মৃতি এখনও টাটকা। তাই প্রশাসন এ বার কিছুতেই তা বরদাস্ত করবে না। রবিবারও তিনি বলেন, ‘‘মামলার রায় নিয়ে কোনও বিশৃঙ্খলা হলে কঠোর ভাবে তা দমন করা হবে।’’ শাসক দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথায়, এই মামলা শেখ হাসিনা সরকার করেনি। আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকার শুরু করেছিল। আদালত কী রায় দেবে, সেটাও বিচার বিভাগের বিষয়। তাঁর কথায়, ‘‘বিএনপি নেতারা আদালতকে হুমকি দিচ্ছে। রায়কে প্রভাবিত করতে চাইছে। এরা আদালত মানে না, নির্বাচন মানে না। দেশবাসীও এদের হুমকির পরোয়া করে না।’’ তাঁর দাবি, বিএনপি-জামাত সরকার ফেলার আন্দোলনে নামলে দেশবাসীও রাস্তায় নেমে তা প্রতিরোধ করবেন।
পারস্পরিক এই আস্ফালনেই বিপদ দেখছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের প্রশ্ন, ফের কী আগুন জ্বলতে চলেছে বাংলাদেশে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy