জামিন খারিজ বহাল থাকায় আপাতত জেল থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাঁর জামিনের আদেশের বিরুদ্ধে সোমবার রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে আপিলের অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সেই আবেদনের শুনানি হবে ৮ মে। তত দিন পর্যন্ত জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ বহাল রাখা হয়েছে, যে সিদ্ধান্তকে নজিরবিহীন বলে বর্ণনা করেছেন খালেদার আইনজীবীরা। তাঁদের দাবি, বিএনপি নেত্রী খালেদাকে জেলে ভরে রাখতে এটা সরকারের কৌশল। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির বলেছেন, ‘‘খালেদার জামিন খারিজে গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেকটি মারা হল।’’
জিয়া এতিমখানা তহবিল দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে খালেদাকে। বিএনপি নেত্রীর অসুস্থতা ও দণ্ডের কম মাত্রাকে কারণ দেখিয়ে হাইকোর্ট তাঁকে জামিন দেওয়ার পরেই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তাতে স্থগিতাদেশ দেওয়ায় খালেদা মুক্তি পাননি। নিজামউদ্দিন সড়কের পুরনো পরিত্যক্ত জেলে তাঁকে একমাত্র বন্দি হিসেবে রাখা হয়েছে। খালেদার আইনজীবীদের বক্তব্য, পাঁচ বছরের জেলের ক্ষেত্রে জামিন দেওয়াটাই রীতি। এ দিন সর্বোচ্চ আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে, অতীতে তার কোনও নজির নেই। সোমবার প্রথমে ২২ মে শুনানির দিন ঘোষণা করে তত দিন পর্যন্ত খালেদার জামিন খারিজে স্থগিতাদেশ দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ। পরে খালেদার আইনজীবীদের আবেদনে তা পরিবর্তন করে ৮ মে করা হয়। বিচারপতিরা জানান, তার আগে আদালতে গরমের ছুটি থাকায় শুনানি সম্ভব নয়।
পরে বিএনপি নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘‘আওয়ামি লিগের সরকার নিম্ন আদালতগুলিকে গ্রাস করেছে। উচ্চ আদালতকেও মনে হচ্ছে আস্তে আস্তে গ্রাস করা হচ্ছে।’’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, সরকার বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে খালেদাকে জেলে ভরে রাখতে চাইছে। শাসক দলের উদ্দেশ্য বিরোধী নেত্রীকে জেলে ভরে রেখে একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতা দখলে রাখা। মহাসচিবের অভিযোগ, তাঁদের বহু নেতা কর্মীকে সাজানো মামলায় গ্রেফতার করা হচ্ছে। নিম্ন আদালতে দিনের পর দিন তাঁরা জামিন পাচ্ছেন না। সম্প্রতি বিএনপির এক ছাত্র নেতাকে নিরাপত্তা বাহিনী তুলে নিয়ে যাওয়ার পরে পুলিশ হেফাজতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
খালেদার মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার বাংলাদেশ জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বিএনপি। ২৯ মার্চ সোহরাবর্দি ময়দানে তারা জনসভারও ডাক দিয়েছে। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের দাবি, ‘‘বিএনপি বিচার প্রক্রিয়াকে রাজনীতিকরণের চেষ্টা করছে। এটা ভাল নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy