Advertisement
E-Paper

বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের রিজার্ভ চুরির ডলার ফেরাতে তৎপর হোক ফিলিপিন্স

মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প, ফিলিপিন্সের রাষ্ট্রপতি রডরিগো দুতের্তে যেন সহোদর। আচারে বিচারে, চলায় বলায় আশ্চর্য মিল। দেশ, ভাষা, সংস্কৃতি আলাদা হলেও মনেপ্রাণে এক। যা ইচ্ছে করেন, যাকে যা খুশি বলেন।

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৭ ১৭:০০

মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প, ফিলিপিন্সের রাষ্ট্রপতি রডরিগো দুতের্তে যেন সহোদর। আচারে বিচারে, চলায় বলায় আশ্চর্য মিল। দেশ, ভাষা, সংস্কৃতি আলাদা হলেও মনেপ্রাণে এক। যা ইচ্ছে করেন, যাকে যা খুশি বলেন। ট্রাম্প না-পসন্দ রাষ্ট্রপ্রধানদের অসাংবিধানিক ভাষায় আক্রমণ করতে দ্বিধা করেন না। দুতের্তেও তেমন। প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামাকে যে ভাবে অপমান করেছেন বিশ্ব স্তম্ভিত। তাতেই ডোনাল্ডের মন জিতেছেন। ডোনাল্ড তাঁকে আমেরিকা সফরের হার্দিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

দুতের্তে, ২০১৬-র ৯ মে রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে ফিলিপিন্সের প্রদেশ, দাভাওয়ের মেয়র ছিলেন ২২ বছর। আইনজীবী হিসেবে আইন নিজের হাতেও নিয়েছেন। বিচারব্যবস্থার বাইরে গিয়ে শত শত অপরাধীকে হত্যা করার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। নির্বাচনী প্রচারে ছ’মাসের মধ্যে দেশকে অপরাধ আর দুর্নীতিমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কথা রাখতে পারেননি। অন্যায় দানা বেঁধেছে রন্ধ্রে রন্ধ্রে।

আরও পড়ুন: চুরি হওয়া রিজার্ভের পুরোটাই ফেরত পাওয়া সম্ভব, বলছে ঢাকা

মুখে লম্বা-চওড়া কথা বললেও সামান্য অপরাধ দমনও তাঁর নাগালের বাইরে। তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার তিন মাস আগে ২০১৬-র ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাঙ্কে রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটে। তস্কররা ফিলিপিন্সের। অভিযুক্তদের সন্ধান মিলেছে। চুরি যাওয়া অর্থেরও হদিশ পাওয়া গিয়েছে। এক বছর হয়ে গেল, ফিলিপিন্স চুরি যাওয়া ডলার ফেরত পাঠাতে পারল না। কাজটা মোটেও কঠিন ছিল না। ফিলিপিন্স সরকার একটু সক্রিয় হলেই হত। তাদের গড়িমসিতে উদ্ধারের কাজ বিলম্বিত। আদালতে মামলা চলছে ঢিমেতালে। কচ্ছপের বিশ্ব সফরের মতো। রাষ্ট্রপতি দুতের্তের হাতেনাতে অপরাধী সাজা দেওয়ার ইচ্ছেটা কি উধাও হয়ে গেল? নাকি ইচ্ছেটা সময় আর মানুষ-নির্ভর। যখন যেখানে দরকার সেখানেই কাজ করে, তার বাইরে নয়। চুরি যাওয়া ডলার ফিলিপিন্সে আটকে থাকলেও শ্রীলঙ্কা কিন্তু নিমেষে ফেরত দিয়েছে। শ্রীলঙ্কায় চোরেদের হাতে ছিল দু’কোটি ডলার। শ্রীলঙ্কা রাষ্ট্র আর সরকার প্রধান মৈত্রীপাল সিরিসেনা আটকে রাখেননি। শ্রীলঙ্কার দায় বাঁচাতে কূটনৈতিক খেলা খেললেও বা কী করার ছিল। চুরির বার্তা শ্রীলঙ্কায় পৌঁছন মাত্র খোয়া যাওয়া ডলার অনলাইনে ফিরেছে ঢাকায়। সরকারের সহযোগিতার অভাব হয়নি। ফিলিপিন্সের বেলায় ব্যতিক্রম কেন?

আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব নিউইয়র্ক থেকে হ্যাকিং করে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের রিজার্ভ চুরি হয়। চুরি যায় ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার। শ্রীলঙ্কা থেকে ফেরে ২ কোটি ডলার। বাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপিন্সের হাতে থেকে যায়। তদন্তে সেটা স্পষ্ট হলেও তারা গড়িমসি শুরু করে। অনেক চাপ দেওয়ার পর কোনওক্রমে দেড় কোটি ডলারের মতো ফেরত দেয়, অবশিষ্ট ছ’কোটি ডলার নিয়ে টালবাহানা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। অসুবিধেয় পড়েছে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক। টাকা ফেরত না আসা পর্যন্ত তাদের বাজেয়াপ্ত করা কম্পিউটারগুলো ফেরত দিতে চাইছে না সি আই ডি। বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অবশ্য গ্যারান্টি দিয়েছেন, চুরির অর্থ কোনও ভাবেই আটকে রাখতে পারবে না ফিলিপিন্স। ফেরত দিতেই হবে।

Bangladesh Reserve Bank Philippines
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy