Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Sheikh Hasina

শিল্পায়নে হঠকারিতা যেন না হয়, কড়া নজর হাসিনার

শিল্পায়নের সংকল্প বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সেটা হবে কোথায়। আশমানে নিশ্চয় নয়, মাথা তুলবে ভূতলে। শিল্প বিপ্লবে আনবে অর্থনীতির জোয়ার। দেশ উঠে দাঁড়াবে নতুন আশ্বাসে। বিস্মিত হবে বিশ্ব। এমনটাই হয়েছিল ১৭৯৩তে ইংল্যান্ডে। ১৮৩৭-এ রানি ভিক্টোরিয়ার সময় প্রাচুর্যের চুড়োয়।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৬ ১৪:৪৮
Share: Save:

শিল্পায়নের সংকল্প বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সেটা হবে কোথায়। আশমানে নিশ্চয় নয়, মাথা তুলবে ভূতলে। শিল্প বিপ্লবে আনবে অর্থনীতির জোয়ার। দেশ উঠে দাঁড়াবে নতুন আশ্বাসে। বিস্মিত হবে বিশ্ব। এমনটাই হয়েছিল ১৭৯৩তে ইংল্যান্ডে। ১৮৩৭-এ রানি ভিক্টোরিয়ার সময় প্রাচুর্যের চুড়োয়। লন্ডন, বার্মিংহাম, লিভারপুল, গ্লাসগো, ম্যাঞ্চেস্টারে বিরামহীন শিল্পোৎপাদন। পাশাপাশি মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্ব। ১৮৬৪তে কার্ল মার্কসের প্রথম ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্কিং মেন'স অ্যাসোসিয়েশন গঠন। তিন বছর পর ১৮৬৭তে তাঁর 'দাস ক্যাপিটাল' প্রকাশিত। কনজারভেটিভ পাটির নেতা এডওয়ার্ড জর্জ স্ট্যানলে তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তাঁর হাতের মুঠোয় অবিভক্ত ভারত। অখণ্ড বাংলার দুই প্রধান শহর ঢাকা, কলকাতার অবস্থাও সসেমিরে। বিদেশি পণ্যে কুটির শিল্প মেঘাচ্ছন্ন। ঢাকার মসলিন, জামদানির বাজার বেহাল। রবীন্দ্রনাথ জন্মেছেন মাত্র ছ'বছর আগে। সেই শিশু তো আর বাংলার হাল ধরতে পারে না। দেড়শো বছর পর স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বপ্নের নতুন অধ্যায়। কায়িক নয়। মন আর মগজের জোরে ডিজিটালে চঞ্চল। দেশ জুড়ে দেশি বিদেশি বিনিয়োগ। চিন্তাটা জমে জমাট জমিতে। সিংহভাগ জমি উর্বর। চারা রুইলেই সোনার ফসল। সে জমিতে শিল্প হলে লাভ না ক্ষতি। তার চেয়ে বড় প্রশ্ন, কৃষি বিপন্ন করে শিল্পোন্নয়ন কি সঙ্গত। হাসিনা জানিয়েছেন, কখনই নয়। যেখানে সেখানে কারখানা গড়ার চেষ্টা হলে কড়া ব্যবস্থা। সে দিকে লক্ষ্য রাখার নির্দেশও দিয়েছেন।

জমির সঙ্গে জুড়ে গ্রামের মানুষের হৃদয়। জমিকে মা বলেই মানে। জোর করে মা'কে কাড়তে এলে বাধা দেবেই। সেই সংবেদনশীলতায় রাজনৈতিক উপাদান প্রচুর। যে কোনও দল পালে হাওয়া লাগাতে পারে সেই ইস্যুতে। এমনটা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। সমস্যা জমির দালালরাও। দাঁও মারার এমন সুযোগ ছাড়বে কেন। ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবে রক্ত ঝরেছে অনেক। সেই অতীত যেন গোপনে কাজ না করে। সতর্ক হাসিনা।

শিল্পায়নে দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে বাংলাদেশে। অশান্তির বীজ উপড়ে ফেলা হচ্ছে চূড়ান্ত সতর্কতায়। বিনিয়োগের গতি বাড়াতে বেসরকারীকরণ কমিশন আর বিনিয়োগ বোর্ডকে এক করে গঠিত বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। যার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজি আমিনুল ইসলাম। এর আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, বিশ্বব্যাঙ্কের বিকল্প নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। সংসদে পাস হওয়ার পর ১ সেপ্টেম্বর থেকে কর্তৃপক্ষের আইন কার্যকর করার ব্যবস্থা। হাসিনার নির্দেশ, শিল্পায়নে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। জমির গোলমালে যেন জেরবার হতে না হয়।

দিনাজপুর, রাজশাহী, বগুড়া, রংপুরের উচ্চ সমভূমি অঞ্চলটা বরেন্দ্রভূমি। এখানকার মাটি লাল, অনুর্বর। এর আয়তন ৪,১০৪ বর্গকিলোমিটার। সংলগ্ন লালমাই পাহাড়ের আয়তন ৩৩.৬৭ বর্গকিলোমিটার। এর বিস্তার ময়মনসিংহ পর্যন্ত। এলাকা জুড়ে শাল, গর্জন গাছের সারি। চট্টগ্রাম, সিলেটেও কিছুটা পার্বত্য অঞ্চল আছে। যেখানে চাষবাস করা না গেলেও প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে তার যথার্থ রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। সেখানে শিল্পায়ন কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ জমি সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা। কিছু জায়গার জমি ততটা উর্বর নয়। চাষ না করে শিল্প স্থাপনে লাভ বেশি। সেখানেই শিল্পায়নের প্রস্তাব। হাসিনার সিদ্ধান্ত, শিল্পের খাতিরে কৃষি যেন মার না খায়।

আরও পড়ুন- সীমান্তে ৮০০ কিলোমিটার রাস্তা বানাবে বাংলাদেশ সেনা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sheikh Hasina Industrialisation Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE