Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Bangladesh News

মনে হচ্ছে কমিউনিকেট করতে পেরেছি, মুম্বই জয় করে বললেন ঢাকার মৌ

ছবির প্রথম ফ্রেমেই স্বামীর লাশ নিয়ে বসে আছেন ত্রিশোর্ধ্ব রুবি। ছোট্ট ছ’-সাত বছরের দাম্পত্য জীবনের ফুলস্টপে দাঁড়িয়ে তাঁর কোনও অনুভূতি হচ্ছে না। এমনকী ঘৃণাও নয়। ছয় বছরের সন্তানও সেই সম্পর্কে কোনও ছাপ আঁকতে পারছে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৫:৩৯
Share: Save:

ছবির প্রথম ফ্রেমেই স্বামীর লাশ নিয়ে বসে আছেন ত্রিশোর্ধ্ব রুবি। ছোট্ট ছ’-সাত বছরের দাম্পত্য জীবনের ফুলস্টপে দাঁড়িয়ে তাঁর কোনও অনুভূতি হচ্ছে না। এমনকী ঘৃণাও নয়। ছয় বছরের সন্তানও সেই সম্পর্কে কোনও ছাপ আঁকতে পারছে না। প্রেম থেকে প্রেমহীন হয়ে যাওয়া একটা সম্পর্ক। যেখানে কবি স্বামীর মৃত্যুর পরও রুবির কোনও বেদনাবোধ কাজ করছে না। জীবিত থাকতেই কবির মৃত্যু ঘটেছে রুবির কাছে। ফলে কবির শারীরিক মৃত্যু তাঁকে নতুন কোনও হারানোর বোধে আচ্ছন্ন করছে না। আর এমন প্রেমহীনতার গল্প নিয়েই তাসমিয়াহ্ আফরিম মৌ-এর ১৫ মিনিটের ফিল্ম ‘কবি স্বামীর মৃত্যুর পর আমার জবানবন্দি’। জানলা খুলে দিল নারীর চোখে দেখা আর একটি ডিসকোর্সের। মূলত রুবির অনুভূতিহীনতার মনস্তাত্বিক বিশ্লেষণই মৌ-এর এই শর্ট ফিল্ম। ছবির ট্যাগ লাইনেই আছে, মৃত্যু মানুষকে কাছে টেনে আনে। কিন্তু এমন কাউকে কি কাছে টানতে পারে যে কাছেই ছিল?

এই ছবি মুম্বইয়ের ১৫তম থার্ড আই এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভালে জুরি স্পেশ্যাল মেনশন পুরস্কার জিতে নিয়েছে। এ নিয়ে চারটি ফেস্টিভ্যালে দুটি পুরস্কার জিতে নিল ছবিটি।

ছবির একটি দৃশ্যে শিশু শিল্পীর সঙ্গে মৌ

আনন্দবাজারকে মৌ বললেন, “ভাল লাগছে এই জন্য যে, মুক্তির প্রথম মাসেই নামকরা চারটে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ এবং তার দু’টো থেকেই পুরস্কার প্রাপ্তি। আর দেশে বিদেশে দু’জায়গাতেই এই ফিল্মের সমাদর প্রমাণ করছে আমরা কানেক্ট করতে পেরেছি দর্শকের সাথে এবং চলচ্চিত্রবোদ্ধাদের সাথেও।”
ছবিতে রুবি চরিত্রের দিলরুবা হোসেন শুধু এক্সপ্রেশনেই চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলেছেন। একটা সিকোয়েন্সে তিনি জলে ভেসেছেন, অথচ সাঁতার শেখেননি। পুরো টিমটাই ছিল অসাধারণ, বলছেন দিলরুবা।
আর দিলরুবার নেপথ্য কন্ঠ শিল্পী জ্যোতিকা জ্যোতির কাছে ছবিটিতে একই সঙ্গে শূন্যতা ও মুক্তি হাত ধরাধরি করে হেঁটেছে। তবে এই মুক্তিতে আনন্দ নেই। আছে স্বস্তি!

কাজের ফাঁকে

গত ২২ ডিসেম্বর মুম্বইয়ের দাদর-এ রবীন্দ্র নাট্যমন্দিরে এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। চলতি মাসেই বাংলাদেশের ১৪তম আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ ও মুক্ত চলচ্চিত্র উৎসবে তারেক শাহারিয়ার বেস্ট শর্টফিল্ম পুরস্কার পেয়েছে এটি।

গত ৩০ নভেম্বর ফ্রান্সের ৩৪তম ত্যুস কুউস ইন্টারন্যাশনাল শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভালে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়। এ ছাড়াও পোল্যান্ডের জুবর অফকা ইন্টারন্যাশনাল শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভালে এ মাসেই অংশ নেয় এ স্বল্পদৈর্ঘের ছবিটি।
এর আগে ২০১৪ সালে মৌয়ের নির্মিত তথ্যচিত্র ‘টোকাই ২০১২’ চিনের গুয়াংজু ইন্টারন্যাশনাল ডকুমেন্টারি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছিল।
‘কবি স্বামীর মৃত্যুর পর আমার জবানবন্দি’র প্রযোজক রুবাইয়াত হোসেন। এর সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন ইমরানুল ইসলাম, সম্পাদনা করেছেন সুজন মাহমুদ, সংগীত পরিচালনায় এসকে শান। অভিনয় করেছেন দিলরুবা হোসেন দোয়েল, আলি আহসান প্রমুখ।

(নিজস্ব চিত্র)

আরও পড়ুন: ভারত-বাংলাদেশ যাত্রী যাতায়াত এ বার জাহাজেও, পথ খোঁজা চলছে

আরও পড়ুন: ক্লিক করলেই বড়দিনের আনন্দ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE