Advertisement
E-Paper

সবার আগে বাংলাদেশ, বার্তা সুষমার

এ দিন ঢাকার বারিধারায় ভারতীয় দূতাবাসের নতুন চ্যান্সেরি ভবনের উদ্বোধন করে সুষমা বলেন, ‘‘প্রতিবেশী দেশকে অগ্রাধিকার দেওয়াটা মোদী সরকারের নীতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৭ ০২:২৫
সূচনা: ভারতের নতুন দূতাবাস ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সোমবার ঢাকায়। নিজস্ব চিত্র

সূচনা: ভারতের নতুন দূতাবাস ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সোমবার ঢাকায়। নিজস্ব চিত্র

বাংলাদেশ প্রথম। প্রথমের মধ্যেও প্রথম। সোমবার সফরের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে বাংলাদেশের মানুষকে এই বার্তাই দিয়ে গেলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।

এ দিন ঢাকার বারিধারায় ভারতীয় দূতাবাসের নতুন চ্যান্সেরি ভবনের উদ্বোধন করে সুষমা বলেন, ‘‘প্রতিবেশী দেশকে অগ্রাধিকার দেওয়াটা মোদী সরকারের নীতি। আর অগ্রাধিকারের হিসেবে প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে প্রথম হল বাংলাদেশ।’’ সবিস্তার উল্লেখ না-করে তিনি জানান, নিজেদের সম্পর্কের যাবতীয় অস্বস্তি ঘুচিয়ে ফেলতে দুই দেশ আন্তরিক ভাবে তৎপর।

সমুদ্রসীমা নিয়ে অস্বচ্ছতা ইতিমধ্যেই কাটিয়ে উঠেছে নয়াদিল্লি ও ঢাকা। ৭০ বছর ধরে বকেয়া থাকা স্থলসীমা চুক্তি বাস্তবায়ন হয়েছে। গঙ্গা-পদ্মার জলের ভাগ নিয়ে সুষ্ঠু মীমাংসা হয়ে গেলেও তিস্তার জলচুক্তি এখনও বকেয়া রয়েছে। এর আগে নরেন্দ্র মোদী ঢাকায় এসে ঘোষণা করেছিলেন, তাঁর ও হাসিনার আমলেই এই চুক্তি হয়ে যাবে। কিন্তু এ বারেও ঢাকায় এসে এ বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট সুখবর দিতে পারেননি সুষমা।

তার পরেও ভারতের বিদেশমন্ত্রীর এই সফরে ঢাকা খুশি। বাংলাদেশে এখন নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে লন্ডন থেকে ঢাকায় ফিরে এসেছিলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। সুষমা নিজে এসে তাঁর সঙ্গে একান্ত বৈঠক করুন— দলের পক্ষে এই আবদার জানানো হয়েছিল ভারতীয় দূতাবাসের কাছে। হাসিনা প্রশাসনের এতে সায় ছিল না। শেষ পর্ষন্ত সুষমা খালেদার বাড়িতে বা দলের দফতরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসেননি। খালেদাই হোটেলে এসে সুষমার সঙ্গে দেখা করেন। একান্তে ডেকে খালেদার সঙ্গে কোনও কথাও বলেননি ভারতের বিদেশমন্ত্রী। কেবল জানিয়েছেন, সব দলের অংশগ্রহণে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন হোক— এটা ভারতের কাম্য। কিন্তু এই বার্তাকেই সদর্থক হিসেবে দেখছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির এ দিন একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘‘আমরা কাউকে বলি না যে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে যাও। আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়ে যাও!’’ তবে জানিয়েছেন, সুষমার সঙ্গে বৈঠকে তাঁরা উৎসাহিত। বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, সুষমার কাছে এই নালিশ জানিয়েছেন খালেদা। জানিয়েছেন, তাঁদের কর্মীদের ধরপাকড় করছে সরকার। গুম হয়েছেন অনেক নেতা। নানা মামলায় জড়িয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে ৭০ হাজার কর্মীকে।

দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বাড়াতে চিন যেমন বাংলাদেশে বিপুল বিনিয়োগ করছে, তেমনই ভারতের প্রভাব ভাঙতে নানা কৌশল নিয়ে চলেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের অর্থায়নে ১৫টি প্রকল্পের এ দিন সূচনা করে গেলেন সুষমা। এর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ পশ্চিম বাংলাদেশে প্রত্যন্ত পিরোজপুরে ১১টি পানীয় জল শোধনাগার— দেড় লক্ষ মানুষ যাতে উপকৃত হবেন। ৩৬টি কমিউনিটি ক্লিনিকও গড়ে তোলা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভারতের অর্থে গড়ে তোলা হবে ঢাকায় রমনার সেই কালীমন্দির, ১৯৭১-এ পাকিস্তানি সেনারা যেটি মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছিল। সাভারে হবে ইস্কনের পাঁচতলা মন্দির। সিলেটে পাঁচতলা ছাত্রাবাস।

ভারতীয় চ্যান্সেরি কমপ্লেক্সে দূতাবাস ছাড়াও কর্মীদের আবাসন, ক্রীড়াকেন্দ্র ও একটি আধুনিক সংস্কৃতি কেন্দ্র থাকছে।

ভারতীয় দূতাবাসে এই অনুষ্ঠানে ছিলেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহম্মদ নাসিম, পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা এইচ টি ইমামও।

এ দিন দুপুরেই দিল্লির বিমানে ওঠেন সুষমা।

Sushma Swaraj Dhaka Chancery Complex Sheikh Hasina সুষমা স্বরাজ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy