রোদে রং ধরে আমে। গরমের এটাই সার। রসাল ভারে গাছ যত নুইবে ততই খুশির হাওয়া বইবে। পেড়ে, প্যাক করে বাজারে পাঠাতে যেটুকু সময়। পশ্চিমবঙ্গের মালদা, মুর্শিদাবাদের মতোই আমের মরশুম বাংলাদেশের রাজশাহীতে। মুকুল অজস্র। কালবৈশাখীতে ঝরলেও যা থাকবে তাই যথেষ্ট। তবু এ বার অন্য ভয়। আমের রসে যেন রক্ত না মেশে। রাজশাহীতে জঙ্গি ডেরা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আস্তানা রক্তাক্ত। কবে কাটবে রক্তের নেশা বলা শক্ত। শেষ হয়েও হচ্ছে না শেষ। কেঁচোর মতো কুঁকড়ে জঙ্গিরা। নিরাপত্তা বাহিনীর নাগালের বাইরে থাকতে মরিয়া। তাদের নড়াচড়া গোয়েন্দাদের নখদর্পনে। পালাতেও চালে ভুল, আটকাচ্ছে ফাঁদে।
আম জনতার আমে মন। নিদাঘে আম্রের বদলে বারুদের ঘ্রাণ। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে চাঁপাই নবাবগঞ্জে জঙ্গি ডেরায় অস্ত্র, বিস্ফোরক সম্ভার। স্লোগান একটাই- যত পারো, মানুষ মারো। তারা ভয়ে গর্তে সেঁধুক। নৈরাজ্য প্রতিষ্ঠিত হোক। গণতন্ত্রের ধ্বজাধারীরা যেন কল্কে না পায়। সন্ত্রাসের হাত ধরে আসুক স্বৈরাচারী শাসন। শিবগঞ্জ উপজেলার শিবনগর এলাকার গোপন আস্তানায় গা ঢাকা দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। হামলার ছক কষছিল। কোথায় সহজে কত বেশি প্রাণনাশ সম্ভব। আশায় জল ঢেলে, পুলিশের সোয়াট টিম তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযান শুরু করে। অপ্রস্তুত সন্ত্রাসীরা আত্মরক্ষার স্বার্থে পাল্টা আক্রমণ চালায়। লাভ হয়নি। স্পটেই চার জঙ্গির মৃত্যু। মৃতরা কেউই না খেতে পাওয়া ঘরের সন্তান নয়। সম্ভ্রান্ত পরিবারে স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপনে অভ্যস্ত। সুখে থাকতে ভূতে কিলোয়। জঙ্গি নেতাদের পাল্লায় পড়ে রাস্তা বদল। ঘর ছেড়ে সন্ত্রাসী স্রোতে ভাসা। অস্ত্র শিক্ষার পর লড়াইয়ে নামা। প্রশিক্ষণের প্রথম পাঠ, মরতে ভয় পেলে চলবে না। জীবন তুচ্ছ, ‘কর্তব্য’ মুখ্য। স্বাধীনতা দিলেই মানুষ নাকি বিপথে যাবে। হয় তারা চলবে জঙ্গি নির্দেশে, নইলে মরবে। এ বার উল্টে মরতে হচ্ছে তাদেরই। ভুল পথে যাওয়ার মাশুল।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে আরও এক জঙ্গি ডেরার হদিশ, অভিযানে হত দুই, ধৃত চার