Advertisement
২৪ মার্চ ২০২৩

সুপ্রিম কোর্টের তীব্র ভর্ৎসনা, জেলেই থাকছেন সুব্রত রায়

দু’মাস পেরিয়ে গিয়েছে তিহাড় জেলে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে মুক্তির আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ায় আপাতত আরও কিছু দিনের জন্য ওই ঠিকানাই বহাল রইল সুব্রত রায়ের। পাশাপাশি তাঁর জামিনের ১০ হাজার কোটি টাকা জমা দেওয়া নিয়ে সহারার আগের প্রস্তাবটিও এ দিন খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। পরিবর্তে ফের নতুন একটি প্রস্তাব পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে তারা।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৪ ০১:৫৯
Share: Save:

দু’মাস পেরিয়ে গিয়েছে তিহাড় জেলে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে মুক্তির আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ায় আপাতত আরও কিছু দিনের জন্য ওই ঠিকানাই বহাল রইল সুব্রত রায়ের। পাশাপাশি তাঁর জামিনের ১০ হাজার কোটি টাকা জমা দেওয়া নিয়ে সহারার আগের প্রস্তাবটিও এ দিন খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। পরিবর্তে ফের নতুন একটি প্রস্তাব পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে তারা।

Advertisement

তবে এ দিন শুধু এই সমস্ত নির্দেশ দিয়েই ক্ষান্ত থাকেনি সর্বোচ্চ আদালতের বেঞ্চ। এক দিকে, জেলে পাঠানোর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আনা সুব্রতবাবুর আবেদনকে আদালতের উপর ইচ্ছাকৃত ভাবে চাপ তৈরির চেষ্টা বলে অভিহিত করেছে তারা। অন্য দিকে, সহারা কর্তাকে তীব্র ভর্ৎসনা করে বেঞ্চ বলেছে, “আদালতের নির্দেশ না-মানার অর্থ আইনের শাসনের মূলে আঘাত করা। যার উপর গোটা বিচার ব্যবস্থাটাই দাঁড়িয়ে আছে। আর কেউ তা না-মানলে, সেই নির্দেশ জোর করে মানতে বাধ্য করানো এবং প্রয়োজনে শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতাও আদালতের রয়েছে।”

শীর্ষ আদালতে আর্জি খারিজ হওয়ায় অবশ্য এ দিন তীব্র হতাশা প্রকাশ করেছে সহারা গোষ্ঠী। বিবৃতিতে সংস্থার তরফে আইনজীবী কেশব মোহনের দাবি, “আমরা যে সুপ্রিম কোর্টের আগের নির্দেশগুলি মেনে চলেছি, আশা করি সেই প্রমাণ নিয়ে আবার খুব তাড়াতাড়ি আদালতে ফিরতে পারব। এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের আন্তরিক চেষ্টা সম্পর্কে আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পারব।” এ দিন কোর্টের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী, জামিনের টাকা জমার নতুন প্রস্তাবও তারা জমা দেবেন বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে এ দিন সহারার ফের দাবি, ৯৩% লগ্নিকারীর টাকা ইতিমধ্যেই ফিরিয়েছে তারা।

গত ৪ মার্চ সহারা কর্তাকে জেলে পোরার যে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট, তা ন্যায়বিচার ছিল না এই অভিযোগে তুলেই মুক্তির আবেদন জানিয়েছিলেন সুব্রতবাবু। এমনকী এই নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালতের বেঞ্চ পক্ষপাতিত্ব করেছে বলেও অভিযোগ আনেন তিনি। কে এস রাধাকৃষ্ণন ও জে এস খেহরের বেঞ্চ এ দিন সেই দাবি খারিজ করে বলে, “এই সব অভিযোগের কোনও যৌক্তিকতাই নেই। বিচারপতিদের নির্দেশ প্রত্যাহারের যে দাবি সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, সেটি আসলে তাঁর খুব হিসেব করে খাড়া করা মানসিক প্রতিরোধ এবং আদালতের উপর ইচ্ছাকৃত ভাবে চাপ তৈরির চেষ্টা। কড়া ভাবে তা প্রত্যাখ্যান করা উচিত।”

Advertisement

লগ্নিকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে আদালতের একের পর এক নির্দেশ অগ্রাহ্য করা হয়েছে বলেও এ দিন সুব্রতবাবু ও তাঁর সংস্থাকে একহাত নিয়েছে শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ। তারা বলে, অনেক দিন ধরেই সহারার অভিযুক্ত দুই সংস্থা ও সুব্রতবাবুকে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সেবি, স্যাট, হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের কোনও নির্দেশ তারা না মানায় এবং টাকা আদায়ের সমস্ত চেষ্টা জলে যাওয়ার পরই সুব্রতবাবু ও সংস্থার দুই ডিরেক্টরকে জেলে পাঠানোর মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। নির্দেশ মানতে বাধ্য করানোই তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল বলে জানায় বেঞ্চ। আইনি যুদ্ধে সহারা গোষ্ঠী ও সুব্রত রায়ের একের পর এক কৌশলে ক্ষুব্ধ বেঞ্চ এ দিন বলে, এই ধরনের মামলা সামলাতে যে ধৈর্য প্রয়োজন তাতে বিচারকদের ‘অতিমানব’ হতে হবে। এই মামলাটি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট-সহ বিভিন্ন আদালতের যত সময় নষ্ট হয়েছে, তা নিয়েও ক্ষুব্ধ তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.