চৈত্রের গোড়াতেই হু-হু করে চড়ছে তাপমাত্রার পারদ। ইতিমধ্যেই সূচক ছুঁয়েছে ৩৫ ডিগ্রি। ফলে প্রবল গরমে হাঁসফাঁস দশা আমজনতার। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ বছর ঘন ঘন তাপপ্রবাহে পুড়বে বাংলা-সহ গোটা দেশ। পারদ যত চড়ছে, বাজারে ততই বাড়ছে এসি, ফ্যান বা কুলারের চাহিদা। আগামী তিন-চার মাসে এগুলির রেকর্ড বিক্রির ব্যাপারে প্রবল আশাবাদী অধিকাংশ নির্মাণকারী সংস্থা।
এসি, ফ্যান বা কুলারের চাহিদা বৃদ্ধিতে শেয়ার বাজারেও এর প্রভাব দেখা গিয়েছে। ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে এগুলির নির্মাণকারী সংস্থাগুলির স্টকের দর। ব্রোকারেজ ফার্মগুলির দাবি, আপাতত বজায় থাকবে এই ধারা। এখান থেকে লগ্নিকারীদের মোটা লাভের সম্ভাবনা রয়েছে, বলছেন শেয়ার বিশ্লেষকেরা।
বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এ বছর রুম এসি বিক্রির পরিমাণ ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। গত ফেব্রুয়ারিতে সংসদে পেশ করা বাজেটে আয়করের ক্ষেত্রে বিপুল ছাড়ের ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের জেরে মধ্যবিত্তের পকেটে থাকছে অতিরিক্ত টাকা। গরম আরও বাড়লে সেটা এই ধরনের শীতল পণ্য কেনার জন্য তাঁরা খরচ করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
২০২৫ আর্থিক বছরে মোট রুম এসি বিক্রির অঙ্ক ১ কোটি ৩০ লক্ষ থেকে ১ কোটি ৩৫ লক্ষে গিয়ে পৌঁছবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। চাহিদা বাড়তে থাকায় এই ধরনের পণ্যগুলি ইতিমধ্যেই মজুত করছেন ডিলারেরা। ব্রোকারেজ ফার্মগুলির অনুমান, তাপমাত্রার পারদ আরও চড়লে ভোল্টাস, ব্লু স্টার এবং হ্যাভল্সের মতো এসি, কুলার ও ফ্যান নির্মাণকারী সংস্থাগুলির শেয়ারের দাম ১০ থেকে ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
২০২৫ আর্থিক বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে যথেষ্ট ভাল ফল করেছে ভোল্টাস। সংশ্লিষ্ট সংস্থাটির ১৮ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। গত এক মাসে ভোল্টাসের স্টকে প্রায় ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে। ব্লু স্টারের শেয়ারের দাম শেষ এক মাসে বেড়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ। শুধুমাত্র এসির ক্ষেত্রে এই সংস্থাটির রাজস্ব ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত পাঁচ বছরে ভারতের বাজারে এসি বিক্রি করে ১৩ শতাংশ মুনাফা করেছে ব্লু স্টার। এর অঙ্ক ৪০০ কোটি টাকা। এ দেশে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিটির প্রায় সাড়ে ১০ হাজার আউটলেট রয়েছে। প্রায় একই ছবি দেখা গিয়েছে পিজি ইলেক্ট্রোপ্লাস্টের শেয়ারের ক্ষেত্রে। গত এক মাসে এই সংস্থার শেয়ারের দাম প্রায় ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: শেয়ার বাজারে লগ্নি বাজারগত ঝুঁকিসাপেক্ষ। আর তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনেই স্টকে বিনিয়োগ করুন। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হলে আনন্দবাজার ডট কম কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায়ী নয়।)