ইনফোসিস প্রকল্পের জন্য রাজারহাটের বিকল্প হিসেবে ফের উঠে এল বানতলা তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প তালুকের নাম।
মঙ্গলবার বণিকসভা সিআইআই-এর ‘সহজে ব্যবসা করা’ সংক্রান্ত আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিল্প উপদেষ্টা সিদ্ধার্থ। অনুষ্ঠান শেষে তিনি জানান, ইনফোসিসের বিনিয়োগের পথে সেজ বা বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের তকমা পাওয়া কোনও বাধা হতে পারে না। তাঁর দাবি, সেজ-এ কাজ করার আগ্রহ থাকলে, ইনফোসিস বানতলাকে বেছে নিতে পারে। কারণ সেখানে এখনও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের নেওয়ার মতো অনেক তৈরি জায়গা ফাঁকা রয়েছে।
তবে নতুন করে ইনফোসিসের সঙ্গে কথা শুরু হয়েছে কি না, তা নিয়ে বিশেষ মুখ খোলেননি তিনি। প্রসঙ্গত, রাজারহাটে ৭৫ কোটি টাকা দিয়ে পূর্বতন বাম সরকারের আমলে ৫০ একর জমি কেনে ইনফোসিস। কিন্তু মমতা সরকারের সেজ বিরোধী অবস্থানের কারণে রাজারহাটের জমির সেজ তকমা আদায় করা সম্ভব হয়নি। বর্তমান সরকারের বিশেষ আর্থিক অঞ্চল ঘিরে অবস্থানের কারণে প্রকল্প নিয়ে সংশয় গভীর হয় ২০১১ সালের এপ্রিলে। সংস্থার তরফে জানানো হয় প্রকল্প আপাতত স্থগিত রাখছে তারা।
১১০০ একরের বানতলা চর্মনগরীতে প্রায় ১৩০ একর জমি জুড়ে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি সেজ। কগনিজ্যান্ট, টেক মহীন্দ্রা, আইগেট এখানে জমি কিনেছে। কগনিজ্যান্ট-এর ক্যাম্পাসও চালু হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে ধনসেরি, ফোরামের মতো নির্মাণ সংস্থা, যারা তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের জন্য জায়গা তৈরি করে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, ইনফোসিসকে আলাদা করে ৫০ একর জমি দেওয়ার মতো ফাঁকা জমি এখানে নেই। আর, তৈরি জায়গায় প্রকল্প শুরুর সমস্যা হল, ইনফোসিস সাধারণত নিজস্ব ক্যাম্পাস তৈরি করে কাজ করে।
বানতলাকে বিকল্প গন্তব্য হিসেবে এর আগেও ইনফোসিস ও উইপ্রোর কাছে তুলে ধরেছিল রাজ্য। কিন্তু চিঁড়ে ভেজেনি। শহর থেকে দূরে না হলেও বানতলায় দূষণ, রাস্তাঘাট, নিকাশির মতো পরিকাঠামোগত সমস্যা এখনও থেকে গিয়েছে। এ সবের অভাব লগ্নি টানার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বরাবর। ফলে বানতলা ব্রাত্য থেকে গিয়েছে ইনফোসিসের কাছেও।
উল্লেখ্য, এ রাজ্যে ইনফোসিসের লগ্নি প্রথম থেকেই পদে পদে বাধা পেয়েছে। ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কলকাতায় এসে নারায়ণমূর্তি বলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গে লগ্নি করতে চান তিনি। রাজ্যে ৫০০ কোটি টাকা লগ্নি ও ৫০০০ জনের কর্মসংস্থানের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। ২০০৬ সালে প্রকল্পের জন্য ১০০ একর জমি সরকারের কাছে চায় তারা। কিন্তু দাম নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত ২০১০ সালের শেষে ৭৫ কোটি টাকার বিনিময়ে ৫০ একর জমি রাজারহাটে দেওয়া হয় সংস্থাকে। সেই জমি ইনফোসিসের হাতে তুলে দেওয়া হয় ২০১১ সালের নভেম্বরে। কিন্তু তা শুধু খাতায়-কলমেই সংস্থার হাতে রয়েছে, এক চুলও এগোয়নি প্রকল্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy