চটকল শ্রমিকদের চাকরি ও বেতনের নতুন শর্ত নিয়ে বুধবার রাজ্য সরকারের সঙ্গে মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনের ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছে। তার ফলে খুলেছে শ্রমিকদের পদোন্নতির রাস্তা। আর চুক্তি অনুযায়ী, সেই সুবাদে বাড়তে পারে আয়ও।
অতীতে চটকলগুলিতে শ্রমিকদের কোনও শ্রেণিবিন্যাস ছিল না। নতুন চুক্তিতে তাঁদের উঁচু দক্ষতাসম্পন্ন (হাই স্কিলড), দক্ষ (স্কিলড), আংশিক দক্ষ (সেমি স্কিলড) এবং অদক্ষ (আনস্কিলড)— এই চার শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। ফলে দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শ্রমিকের উন্নতির সুযোগ খুলে গেল নতুন চুক্তিতে। সে ক্ষেত্রে তিনি অতিরিক্ত হারে ফিটমেন্ট ভাতা পাবেন। বৃহস্পতিবার রাজ্যের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘চটকল শ্রমিকদের শ্রেণিবিন্যাসের জন্য রাজ্য সরকার স্টেট প্রোডাক্টিভিটি কাউন্সিলকে দিয়ে সমীক্ষা করিয়েছিল। কাউন্সিলই এই চারটি ভাগের সুপারিশ করে। কাউন্সিলের সুপারিশই নতুন চুক্তির মাধ্যমে কার্যকর হয়েছে।’’
চটকল মালিকেরাও নতুন ব্যবস্থাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের সংগঠন আইজেএমের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সঞ্জয় কাজারিয়া বলেন, “চটকলগুলির আধুনিকীকরণ হচ্ছে। দক্ষ কর্মী লাগবে। অদক্ষ কর্মীরাও প্রশিক্ষণ নিয়ে নতুন কাজের জন্য নিজেদের তৈরি করতে পারবেন।’’
এ ছাড়াও সিদ্ধান্ত হয়েছে, চটকলে কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড পরিচালনার দায়িত্ব আর অছি পরিষদের হাতে থাকবে না। তাঁদের পিএফ পরিচালনা করবে আঞ্চলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড কমিশনারের দফতর। রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “অছি পরিষদের পরিচালনাধীন পিএফ ব্যবস্থায় অনেক চটকলে তহবিল নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ বার থেকে কোনও চটকলেই পিএফ পরিচালনার জন্য অছি পরিষদ গঠনের অনুমতি দেবে না রাজ্য।’’ চুক্তির অন্যতম স্বাক্ষরকারী তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গ্র্যাচুইটির ক্ষেত্রেও চটকলে নতুন ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে। এখন থেকে ওই টাকা মালিকদের নিয়মিত জমা দিতে হবে জীবন বিমা নিগমের (এলআইসি) দফতরে। অবসরের পরে শ্রমিকদের পিএফ এবং গ্র্যাচুইটির টাকা পেতে সুবিধা হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)