এক দিকে জ্বালানির চাহিদায় প্রবল আমদানি নির্ভরশীলতা। অন্য দিকে ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি। এই দুইয়ের ফাঁসে চাপ বাড়ছে ভারতের জ্বালানি ক্ষেত্রে। এই অবস্থায় সংসদের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সংক্রান্ত কমিটির পরামর্শ, অশোধিত তেলের আমদানির উৎস আরও বাড়ানো ও ছড়িয়ে দেওয়ায় দিক জ্বালানি সংস্থাগুলি। কেন্দ্র তৈরি করুক ঝুঁকি কমানোর ব্যবস্থা। সম্প্রতি সংসদে এই রিপোর্ট পেশ হয়েছে।
ভারতকে তার জ্বালানির চাহিদার ৮৯% আমদানি করতে হয়। দামের সুবিধার কারণে সবচেয়ে বেশি অশোধিত তেল এখন কেনা হয় রাশিয়া থেকে। কিন্তু ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের জেরে আমেরিকা-সহ পশ্চিমের দেশগুলি মস্কোর উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ভারতেরও সমস্যা বেড়েছে। রুশ তেল কেনার জন্য ভারতীয় পণ্যে চড়া শুল্ক চাপিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে এখন সেই তেল কেনা কমাতে হচ্ছে। আবার পশ্চিম এশিয়া-সহ তেল উৎপাদনকারী বিভিন্ন দেশ সংঘাত এবং অভ্যন্তরীণ অশান্তিতে জর্জরিত। সংঘাত চলছে সুয়েজ খাল এবং লোহিত সাগরের মতো তেল সরবরাহের জলপথ ঘিরে। ফলে সেখানেও ঝুঁকি প্রবল। ইরান, ভেনেজ়ুয়েলার মতো তেল উৎপাদনকারী দেশের উপরেও আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সংসদীয় কমিটির উদ্বেগ, দেশের ভিতরেও জ্বালানি উৎপাদন ঘিরে সমস্যা কম নয়। বহু তেল-গ্যাস ক্ষেত্র পুরনো হয়ে আসছে। প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের খরচ বেড়েছে। প্রকল্পের গতিও বাড়ানো যাচ্ছে না। জ্বালানি ক্ষেত্রে দূষণ বড় সমস্যা। ফলে উৎপাদন কোনও ভাবেই বর্ধিত চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছে না।
এই অবস্থায় কমিটির সুপারিশ, তেল সংস্থাগুলি জ্বালানি আমদানির সূত্র আরও ছড়িয়ে দেওয়ার দিকে নজর দিক তেল মন্ত্রক এবং রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি সংস্থাগুলি। সেটা দেশের ভৌগোলিক অবস্থান এবং আমদানি চুক্তি, দুই কথা মাথায় রেখেই। গুরুত্ব দেওয়া হোক তেলের মজুত ভান্ডার এবং তেল নিয়ে আসার বিকল্প পথের দিকে। ঝুঁকি কমানোর জন্য তেল কেনার চুক্তিতে নমনীয়তায় জোর বাড়ুক।
উদ্বেগ
ভারতকে জ্বালানি চাহিদার প্রায় ৮৯% আমদানি করতে হয়। সেই খরচ বিপুল।
এখন আমদানির বৃহত্তম সূত্র রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞার জেরে সেখান থেকে তেল আনা কমাতে হচ্ছে।
নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ইরান ও ভেনেজ়ুয়েলার উপরেও।
অভ্যন্তরীণ সমস্যায় জর্জরিত আরও কিছু দেশ।
জটিলতা রয়েছে সুয়েজ খাল ও লোহিত সাগরের জলপথ ঘিরে।
তেল উৎপাদনের সমস্যা দেশেও। কূপগুলি পুরনো হচ্ছে। রয়েছে জমি অধিগ্রহণ সমস্যা। বাড়ছে প্রকল্পের খরচ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)