Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভরসা দিলেন মোদী, লোকসান মুছল সূচক

শেয়ার বাজার চব্বিশ ঘণ্টাতেই মুছে ফেলল গত কালের লোকসান। মঙ্গলবার সেনসেক্স ৪২৪ পয়েন্ট উঠে বাজার বন্ধের সময়ে থামে ২৫,৩১৭.৮৭ অঙ্কে। বাজার সোমবার ১৫ মাসে সবচেয়ে নীচে নেমেছিল চিনা অর্থনীতি নিয়ে দুশ্চিন্তার জেরে।

বাজার ওঠায় খুশি ব্রোকাররা। ছবি: পিটিআই।

বাজার ওঠায় খুশি ব্রোকাররা। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:২৩
Share: Save:

শেয়ার বাজার চব্বিশ ঘণ্টাতেই মুছে ফেলল গত কালের লোকসান। মঙ্গলবার সেনসেক্স ৪২৪ পয়েন্ট উঠে বাজার বন্ধের সময়ে থামে ২৫,৩১৭.৮৭ অঙ্কে। বাজার সোমবার ১৫ মাসে সবচেয়ে নীচে নেমেছিল চিনা অর্থনীতি নিয়ে দুশ্চিন্তার জেরে। এ দিন ফের ২৫ হাজার টপকে যায় সেনসেক্স। বাজারের হাল ফেরানোয় ইন্ধন জোগায় দেশের শিল্প, ব্যাঙ্কিং মহল ও অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠক। সেখানে চিনের আর্থিক সঙ্কট বা আমেরিকার সুদ বাড়ানোর ইঙ্গিত সত্ত্বেও ভারতের অর্থনীতির বিপদ ঘটবে না বলে ভরসা দেন মোদী। চিনের বাজারের উত্থানও টেনে তোলে দেশের বাজারকে।

ডলারে টাকার দামও এ দিন ২৭ পয়সা বেড়েছে। দিনের শেষে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৬৬.৫৫ টাকা। শেয়ার বাজারের উত্থান এর জন্য অনেকটাই দায়ী বলে বাজার সূত্রের খবর। তার কারণ, শেয়ার কেনার জন্য এ দিন বেশ কিছু বিদেশি আর্থিক সংস্থা তাদের হাতে থাকা ডলার বিক্রি করে দেয়। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও রফতানিকারীদের তরফে ডলার বিক্রি করার জেরেও টাকার দাম বেড়েছে। এর আগে গত তিন দিনের লেনদেনে টাকা পড়েছিল ৬৩ পয়সা।

চিনা অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কায় যে ভারতে বাড়তি বিদেশি লগ্নি আসতে পারে এবং বিশ্ব বাজারে তেল বা পণ্যের দাম কমে যাওয়ার ফলেও যে ভারতের অর্থনীতিরই লাভ, আজ তিন ঘণ্টার বৈঠকে সে কথাই শিল্প ও ব্যাঙ্কিং মহলকে বুঝিয়ে বলেন মোদী। তিনি বলেছেন, চিনের মন্দা বা আমেরিকার সুদের হার বাড়ার প্রভাব ভারতের অর্থনীতিতে সেই ভাবে পড়বে না। শেয়ার সূচক বা টাকার দরের ওঠা-নামা এড়ানো না-গেলেও অর্থনীতির ভিত মজবুত বলেই সহজে এই সব কারণ কাবু করতে পারবে না ভারতকে। তাই একে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগানো সম্ভব বলেই দাবি করেন মোদী। কারণ, এটাই চিন থেকে ভারতে বিদেশি লগ্নি সরে আসার পথ করে দিতে পারে। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই দাওয়াইয়ে, হাল ফেরে মুম্বই বাজারের। জিওজিৎ বিএনপি পারিবাস ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস-এর গবেষণা বিভাগের প্রধান বিনোদ নায়ার বলেন, ‘‘কেন্দ্রের আশ্বাসে ভয় কমায় পতন কাটিয়ে ওঠে বাজার।’’

পাশাপাশি, শেয়ার বাজারে প্রাণ ফেরাতে মঙ্গলবার বেশ কিছু ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করে চিনা সরকার। তার মধ্যে রয়েছে দীর্ঘ মেয়াদে বাজারে লগ্নি ধরে রাখতে এক বছরের বেশি সময় ধরে শেয়ারে বিনিয়োগ করলে ডিভিডেন্ড কর মকুব করা। বিক্রির সময়ে ওই কর ধার্য হয়। এত দিন ওই কর ছিল ৫%। এক মাসের কম সময়ের জন্য শেয়ারে লগ্নি করলে ডিভিডেন্ড কর হবে ২০%। এক মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত লগ্নি করলে কর নেওয়া হবে ১০%। এ ছাড়া অবাধে শেয়ার বিক্রি বন্ধ করতে সার্কিট ব্রেকার চালু করার প্রস্তাবও দিয়েছে চিন। এর জেরে ঘুরে দাঁড়ায় চিনের বাজার, যা প্রভাব ফেলে ভারতে। তবে চিনের বৈদেশিক বাণিজ্য কমার খবর কিছুটা হতাশ করে বাজারকে। জাপান বাদে এশিয়ার অন্যান্য বাজার এবং ইউরোপ এ দিন চাঙ্গা ছিল। খোলার পরে বেড়েছে মার্কিন বাজারও।

ভারতে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ব্যাঙ্ক শেয়ারের দর। সেনসেক্সের ৩০টি শেয়ারের মধ্যে বেড়েছে ২৬টিই। তবে বাজার সাবধানেই এগোবে বলে মন্তব্য করেন নায়ার। তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেড রিজার্ভ কী সিদ্ধান্ত নেয়, সে দিকেই তাকিয়ে লগ্নিকারীরা। ভেরাসিটি গ্রুপ-এর সিইও প্রমিত ব্রহ্মভট্ট বলেন, ‘‘পড়তি বাজারে ব্লু-চিপ শেয়ার কেনার জেরেও সূচক বেড়েছে। তবে চিনের বৈদেশিক বাণিজ্য কমার পরিসংখ্যানে বাজার এখনও উদ্বিগ্ন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE