E-Paper

ইএসআইয়ের খরচ বাবদ রাজ্যের ২৭০ কোটি মেটানো হচ্ছে না, আঙুল কেন্দ্রের দিকে

ইএসআই হাসপাতালে ৭০ শতাংশের বেশি শয্যায় রোগী থাকলে ভাতা দেয় কেন্দ্র। রাজ্যে তাদের ১৩টি হাসপাতালেই অধিকাংশ সময়ে প্রায় ৯০% বা তার বেশি শয্যা ভর্তি থাকে।

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৫ ০৭:৪৪
আসানসোলে একটি আধুনিক ইএসআই হাসপাতাল তৈরি হলেও, সহযোগিতার অভাবে প্রায় দু’বছর ধরে চালু করা যায়নি।

আসানসোলে একটি আধুনিক ইএসআই হাসপাতাল তৈরি হলেও, সহযোগিতার অভাবে প্রায় দু’বছর ধরে চালু করা যায়নি। —ফাইল চিত্র।

কর্মী রাজ্য বিমার (ইএসআই) দীর্ঘ দিন পরিষেবা বাবদ বিভিন্ন খাতে পশ্চিমবঙ্গের খরচের ২৭০ কোটি টাকার বেশি মেটাচ্ছে না কেন্দ্র। ফলে উঠছে বঞ্চনার অভিযোগ। হলদিয়া ও শিলিগুড়িতে দু’টি ও আসানসোলে একটি আধুনিক ইএসআই হাসপাতাল তৈরি হলেও, এই সহযোগিতার অভাবে প্রায় দু’বছর ধরে সেগুলি চালু করা যায়নি। যার জেরে চিকিৎসা-সহ নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকল্পের আওতায় থাকা রাজ্যের ২০ লক্ষের বেশি কর্মী ও তাঁদের পরিবার।

ইএসআই-এর এক কর্তার অভিযোগ, ‘‘কর্কট রোগ, ডায়ালিসিস, হৃদরোগ, হেমাটোলজি ইত্যাদি চিকিৎসা-খরচের বকেয়া রাজ্য ইএসআই-কে মেটাচ্ছে না কেন্দ্র। এই চিকিৎসা বাইরের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে হওয়ার কথা। কিন্তু কিছু ইএসআই হাসপাতালে পরিকাঠামো থাকায় একাংশ সেখানেই হয়। এ জন্য যে ওষুধ ও স্টেন্ট, পেসসেকার ইত্যাদি কিনতে হয়, তার দামটাই চেয়েছি। বিল-সহ সব হিসাবও দেওয়া হয়েছে। তিন বছরে খরচ প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। কিন্তু ২০২১-এর পরে টাকা দেওয়া হচ্ছে না। ওই চিকিৎসা তাই ইএসআই হাসপাতালে বন্ধের মুখে।’’

ইএসআই হাসপাতালে ৭০ শতাংশের বেশি শয্যায় রোগী থাকলে ভাতা দেয় কেন্দ্র। রাজ্যে তাদের ১৩টি হাসপাতালেই অধিকাংশ সময়ে প্রায় ৯০% বা তার বেশি শয্যা ভর্তি থাকে। সেই বাবদ দু’বছরে পাওনা প্রায় ৭৮ কোটি টাকা। রোগ প্রতিরোধে ইএসআই কর্তৃপক্ষের বছরে প্রায় ৪ কোটি খরচ হয়। সেই খাতে দু’বছরে বাকি ৮ কোটি। যন্ত্র কিনতে বছরে ৪০ কোটি পাওয়ার কথা থাকলেও, কর্তার দাবি এর শর্তগুলি বহু ক্ষেত্রেই পূরণ করা যায় না। সেই অছিলায় দু’বছরে ৩৪ কোটি পায়নি রাজ্য ইএসআই।

মাসে বেতন ২১,০০০ টাকা পর্যন্ত হলে ইএসআই-এর অধীনে আসেন কর্মীরা। প্রকল্পের তহবিল তৈরির জন্য তাঁদের বেতন থেকে মাসে ০.৭৫% টাকা কাটা হয়। সংস্থা দেয় ৩.৭৫%। চিকিৎসা-সহ পরিষেবা চালাতে যে খরচ হয়, তার এক অষ্টমাংশ দেয় রাজ্য। পুরো টাকা জমা পড়ে শ্রম মন্ত্রকের অধীন কেন্দ্রীয় ইএসআই কর্তৃপক্ষের কাছে। তারা বিভিন্ন খাতে রাজ্য ইএসআই-কে টাকা দেয়।

ইএসআই-এর প্রাক্তন সদস্য এবং এআইইউটিইউসি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রকল্পটি পরিচালনায় অবদান নেই কেন্দ্রের। অথচ তারা টাকা আটকে বাধা তৈরি করছে। সমস্যায় পড়ছেন ২০ লক্ষেরও বেশি সদস্য ও তাঁদের পরিবার মিলিয়ে রাজ্যের প্রায় ১ কোটি মানুষ। কেন্দ্রকে পুরো বকেয়া মেটানোর দাবি জানিয়েছি।’’

বকেয়া

তিন বছরে কঠিন রোগের চিকিৎসা করতে ওষুধ-সহ বিভিন্ন জিনিস কেনা বাবদ প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।

ইএসআই হাসপাতালে ৭০ শতাংশের বেশি শয্যা ভর্তি খাতে দু’বছরে ৭৮ কোটি।

রোগ প্রতিরোধে দু’বছরে ৮ কোটি টাকা।

যন্ত্র কিনতে চাপানো শর্ত পূরণ না হওয়ায় দু’বছরে মেলেনি ৩৪ কোটি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

ESI Central Government

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy