জিএসটি-র ধাক্কায় জেরবার রফতানি ক্ষেত্রের জন্য কিছুটা সুরাহার ব্যবস্থা করতে অরুণ জেটলির উপর চাপ বাড়ালেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
জিএসটি চালুর পরে প্রথম দফাতেই রফতানিকারীরা সমস্যায় পড়েছেন। কাঁচামালের উপর কর দিয়েছেন। কিন্তু জিএসটি নেটওয়ার্কে প্রযুক্তিগত সমস্যায় সেই বাবদ অর্থ ফেরত পেতে দেরি হচ্ছে। ফলে ব্যবসার নগদ পুঁজি আটকে গিয়েছে। ছোট ও মাঝারি মাপের রফতানিকারী সংস্থাগুলির সমস্যাই বেশি। ব্যবসা মার খাওয়ায় বহু মানুষের কাজ হারানোর আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে অমিতবাবু অরুণ জেটলিকে চিঠি লিখে অভিযোগ তুলেছেন, জিএসটি পরিষদে গৃহীত সিদ্ধান্ত কেন্দ্র ঠিক মতো কার্যকর করেনি বলেই রফতানি ক্ষেত্র বিপাকে পড়েছে। তাঁর যুক্তি, রফতানিতে কাঁচামালে মেটানো জিএসটি বা আইজিএসটি-তে করছাড়ের টাকা ৭ দিনে ফেরত দেওয়া হবে বলে ঠিক ছিল। তা কার্যকর হয়নি বলেই পুঁজি আটকে গিয়েছে। রফতানিকারীদের যাতে দৌড়দৌড়ি না-করতে হয়, এক জায়গা থেকেই তাঁরা যাতে কর ফেরত পান, সে জন্য সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারির কথা ছিল। তা-ও হয়নি।
রফতানিকারীরা ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় রাজস্ব সচিব হাসমুখ আঢিয়ার কাছে নালিশ জানিয়েছেন, তাঁদের প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকা সরকারের ঘরে আটকে। তার মধ্যেই অমিতবাবুর চিঠি নর্থ ব্লকে পৌঁছনোয় অস্বস্তিতে অর্থ মন্ত্রক। অমিতবাবু তাঁর অভিযোগ অন্য রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদেরও জানিয়েছেন। বিজেপি শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরাও তাঁকে সমর্থন করে জেটলিকে বার্তা পাঠিয়েছেন। ৬ অক্টোবর জিএসটি পরিষদের বৈঠক। সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা সেখানে রাজ্যগুলির ক্ষোভের মুখে পড়তে হবে কেন্দ্রকে।
অভিযোগের তির
• জিএসটি পরিষদে যা ঠিক হয়েছিল, তা মানছে না কেন্দ্র
• আগে মেটানো কর ফেরত মিলছে না সাত দিনে
• আটকে গিয়েছে পুঁজি
• সমস্যা বেশি ছোট সংস্থার
অমিতবাবুর অভিযোগ, জিএসটি চালুর পরে অলঙ্কার শিল্পে রফতানি কমেছে ২৪.৩%, বস্ত্রশিল্পে ৬%। হস্তশিল্প, চর্ম, পোশাকেও মাঝারি সংস্থার রফতানি নিম্নমুখী। ফলে বহু মানুষ কাজ হারাতে পারেন। ছোট-মাঝারি শিল্পে এর দীর্ঘমেয়াদি ধাক্কা লাগবে বলে অভিযোগ তাঁর।
হাল শোধরাতে পাঁচ দফা দাবি তুলেছেন তিনি। যার মধ্যে প্রধান হল, জিএসটিআর ৩বি ফাইলের ভিত্তিতেই করছাড়ের টাকা ফেরত দেওয়া। ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির শর্ত তোলা। ‘ডিউটি ক্রেডিট স্ক্রিপ’ বা নগদের বদলে শংসাপত্রের মাধ্যমে কর দেওয়ার দায়বদ্ধতা স্বীকারের সুযোগ দেওয়া।
যাঁরা অলঙ্কার রফতানি করেন, তাঁদের আমদানি করা সোনা, রুপো, প্ল্যাটিনামে ৩% আইজিএসটি দিতে হয়। অমিতবাবুর যুক্তি, এর ফলে অলঙ্কার রফতানি কমেছে। বহু গরিব মানুষ কাজ হারাতে বসেছেন। ওই করের হার হিরের মতোই কমিয়ে ০.২৫% করার দাবি তুলেছেন তিনি।
মুশকিলে পড়া ছোট সংস্থার জন্য অমিতবাবুর পরামর্শ: ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যবসায় তিন মাসে একবার রিটার্ন ফাইলের সুবিধা দেওয়া হোক। জিএসটি-র আওতায় ও তার বাইরের পণ্যের জন্য একটি বিল বা ইনভয়েস তৈরির অনুমতি দেওয়া হোক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy