Advertisement
E-Paper

চিনি নিয়ে তর্কেও তেতো হয়নি সম্পর্ক

আলোচনার বিষয় জিএসটি। ভিডিও সম্মেলনের মাধ্যমে জিএসটি পরিষদের বৈঠক করছেন অরুণ জেটলি। অমিতবাবু দিল্লিতেই ছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ২২:০১
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এবং পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এবং পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বৈঠকের শুরুতেই হাসতে হাসতে অমিত মিত্রকে বললেন, ‘ওয়েলকাম, ডক্টর মিত্র! ইউ হ্যাভ রিচড নর্থ ব্লক!’

পাল্টা রসিকতার সুযোগ না ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রীর জবাব, ‘আই থিংক ইউ রিচড সাউথ ব্লক দেন!’

আলোচনার বিষয় জিএসটি। ভিডিও সম্মেলনের মাধ্যমে জিএসটি পরিষদের বৈঠক করছেন অরুণ জেটলি। অমিতবাবু দিল্লিতেই ছিলেন। আর অন্য অর্থমন্ত্রীরা বিভিন্ন রাজ্যের রাজধানীতে। তবে নর্থ ব্লকে থাকলেও, অমিতবাবু ছিলেন আলাদা ঘরে! সেখান থেকে ভিডিও মারফত কথা বলছিলেন। কথোপোকথনে রসিকতা থাকলেও, আড়াই ঘণ্টা ধরে জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন তিনি।

চিনিতে সেস বসানো নিয়ে বৈঠকে চলেছে জোর বিতর্ক। কেন্দ্রের প্রস্তাব ছিল, চিনিতে ৫% জিএসটির উপরে সেস বসুক কেজিতে তিন টাকা পর্যন্ত। বলা হয়, এতে কেন্দ্ৰের ঘরে আসবে ৬,৭০০ কোটি। তবে এতে আখেরে চিনিকল মালিকদেরই লাভ হবে, আখ চাষিদের তেমন নয়— এই যুক্তিতে প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায় রাজ্য।

আপত্তি ওঠে আরও কিছু বিষয় ঘিরেও। প্রস্তাবটির বিরোধী অনেক অর্থমন্ত্রীর মত ছিল, এ ভাবে নির্দিষ্ট একটি পণ্যে জিএসটির আওতায় সেস বসালে, এক দেশ-এক করের ভাবনাই ধাক্কা খায়। তার মূল যে লক্ষ্য, কর ব্যবস্থার সেই সরলীকরণ অন্তত হয় না। অনেকের আশঙ্কা, এ ভাবে একটি পণ্যে সেস বসালে, ভবিষ্যতে আরও অনেক রাজ্যও বিভিন্ন বিষয়ে নানান দাবি তুলতে পারে। তখন তা সামাল দেওয়া যাবে তো! সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের প্রশ্ন, চিনিতে সেস বসালে যদি কাল তুলো চাষিদের আত্মহত্যার কথাও ওঠে?

অনেক রাজ্যের আপত্তি সেস নিয়েই। তাদের মতে, রাজ্যগুলি করের ভাগ পায়। কিন্তু সেসের নয়। তাই ঠিক হয়েছিল, জিএসটিতে সেস বসবে শুধু নতুন কর চালুর পরে রাজ্যগুলির ক্ষতি মেটাতে। অথচ এখন তার বাইরেও এটি বসানোর কথা বলছে কেন্দ্র।

এই প্রতিবাদের ফল হিসেবে তাই অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে ছোট কমিটি হয়েছে। যারা সেস নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। সাধারণত বিরোধী দলের কেউ এই ধরনের কমিটির প্রধান হন। কিন্তু অমিতবাবুদের কাউকে না করে, প্রধান করা হয়েছে বিজেপি শাসিত অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে। কমিটিতে বিজেপির ৩ জন। অ-বিজেপি ২ জন। বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, তাদের আশা ছিল পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করা হবে। কিন্তু ২০১৯ সালের ভোটের আগে ঝুঁকি নিতে চাইছে না বিজেপি।

ক্রেডিট কার্ড-সহ ডিজিটাল লেনদেন মারফত জিনিস কিনলে ২% ছাড়ের প্রস্তাবও ওঠে বৈঠকে। অমিতবাবু বলেন, এতে কেন্দ্র প্রায় ২৬ হাজার কোটি হারাবে। গ্রামের মানুষের উপকারও হবে না। কারণ তাঁরা বেশির ভাগই নগদে লেনদেন করেন।

তবে জিএসটির এই বৈঠকে কেন্দ্র -রাজ্যের মধ্যে নানা বিষয়ে মতের অমিল হলেও, ব্যক্তিগত বিরোধ হয়নি। উল্টে বহু বিষয়ে মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যম অমিত মিত্র ও বিরোধীদের সমৰ্থন করেছেন। কিন্তু নতুন কর ব্যবস্থাটি যে ২০১৯ সালের আগে অর্থনীতির চেয়ে বেশি রাজনীতির বিষয়, তা শেষ জিএসটি বৈঠকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

indian economy GST council Amit Mitra Arun Jaitley GST
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy