অরুণ জেটলি। —ফাইল চিত্র।
মোদী সরকার বার বারই বলেছে টাকা পড়ছে বিশ্ব বাজারের প্রভাবে। দেশের আর্থিক স্বাস্থ্য ভাল। কোনও রোগ নেই। অথচ সেই অর্থনীতির জন্যই পাঁচ দফা দাওয়াই ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। লক্ষ্য, দেশে ডলারের জোগান বাড়ানো। আর তার পরেই অর্থনীতিবিদদের প্রশ্ন, রোগ যদি না-ই থাকে, তা হলে ওষুধ কেন?
অর্থনীতিবিদদের মতে, দাওয়াই বাতলে কেন্দ্র আসলে মেনে নিল অর্থনীতির অসুখ করেছে। আর তা যে মূলত বিদেশি মুদ্রার লেনদেন ঘাটতিই, ওষুধের ধরনে স্বীকার করা হল তা-ও।
অর্থনীতির স্বাস্থ্য খতিয়ে দেখতে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে বসা বৈঠকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেলও তেমনই যুক্তি দিয়েছেন বলে অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর। তিনি অর্থনীতির ছবি বিশদে তুলে ধরায় স্পষ্ট হয়, টাকার দাম পড়ার সমস্যা সহজে মিটবে না। কারণ হিসেবে পটেল আমেরিকায় সুদ বৃদ্ধি, মার্কিন-চিন শুল্ক যুদ্ধ বা অশোধিত তেলের দাম বাড়ার মতো আন্তর্জাতিক সমস্যার কথা বলেন ঠিকই। তবে একই সঙ্গে জানান সমস্যা আছে দেশে। যার অন্যতম চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রার লেনদেনে বাড়তে থাকা ঘাটতি। এতেই টাকার উপর আস্থা কমেছে।
বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম ব্যারেল ৭৮ ডলার ছাড়িয়েছে। ফলে তেল আমদানির খরচ বাড়ছে। বেরিয়ে যাচ্ছে বিপুল ডলার। এপ্রিল- জুনে চলতি খাতে ঘাটতি বেড়ে ২.৪% ছুঁয়েছে। আশঙ্কা, পুরো অর্থবর্ষে তা ছাড়াতে পারে ২.৫%। বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডারও এই বছরে প্রথম ৪০,০০০ কোটি ডলারের নিচে নেমেছে।
তা হলে উপায়? তেলের আমদানি ছাঁটার উপায় নেই। তাই ঠিক হয় অনাবশ্যক পণ্য আমদানি কমানো হবে। বাণিজ্য মন্ত্রক সূত্রের খবর, এতে কোপ পড়বে অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিক পণ্য, দামি ভোগ্যপণ্য, বিদেশি গাড়ি ইত্যাদিতে। অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের দাবি, বাড়তি ডলার টানার চেষ্টা হবে শিল্পের জন্য বিদেশি ঋণের সুবিধা, ব্যাঙ্ক ও কর্পোরেট বন্ডে ডলারে লগ্নি টানার সুযোগ করে দিয়েও।
তবে এটা স্পষ্ট, চলতি খাতে ঘাটতি কমাতে কাঠামোগত সংস্কার জরুরি। এ জন্য যে সব পণ্য আমদানি করা হয়, সেগুলি দেশেই বেশি করে তৈরি করতে হবে। কিন্তু তাতে সময় লাগবে। তাই স্বল্প মেয়াদে অনাবশ্যক পণ্য আমদানি ছাঁটার এই চেষ্টা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy