রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারের ভাগ যে তাঁদের এই মুহূর্তে লাগবে না, কিছু দিন আগেই জোর গলায় সে কথা দাবি করেছিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। কিন্তু সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফের সেই ভাঁড়ার ভাগের পক্ষেই শুক্রবার জোরালো সওয়াল করলেন তিনি। বললেন, সবার আগে ‘ক্যাপিটাল ফ্রেমওয়ার্ক’ তৈরি হওয়া জরুরি। যাতে ঠিক করা যায় যে, শীর্ষ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে থাকা সম্পদের কতখানি তাদের কাছে থাকা উচিত। আর কতটা পাওয়া উচিত কেন্দ্রের। এমনকি এ নিয়ে অবস্থান পাল্টানোর অভিযোগ তুলতে ছাড়লেন না রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনের বিরুদ্ধে! অর্থনীতিতে নগদ ও ঋণের পর্যাপ্ত জোগান নিশ্চিত করতে কেন্দ্র তার হাতে থাকা যে কোনও আইন প্রয়োগে রাজি বলেও জানান তিনি।
এ দিন অর্থমন্ত্রীর চোখ ফের শীর্ষ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারের দিকে যেতেই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তাঁরা বলছেন, ক’দিন আগেই জেটলি ও আর্থিক বিষয়ক সচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ বলেছিলেন, রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যে বেঁধে রাখতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কবা অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে বাড়তি অর্থের প্রয়োজন তাঁদের নেই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অক্টোবরেই ওই ঘাটতি দাঁড়িয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ১০৩.৯%। সেই সমস্যা বুঝেই কি ফের ভাঁড়ারের কথা বলছেন জেটলি?
অর্থমন্ত্রীর দাবি, ভাঁড়ারের ওই টাকার একটা অংশ খরচ হওয়া উচিত দারিদ্র দূরীকরণে। এখানেও বিরোধীদের প্রশ্ন, তার মানে কি ভোট বছরে আমজনতার মন ভেজানো সরকারি প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়াতে চান অর্থমন্ত্রী? নোটবন্দি নিয়ে বইয়ে মোদী সরকারকে তুলোধোনা করলেও, এ বিষয়ে অবশ্য প্রাক্তন মুখ্য উপদেষ্টাকে পাশে পেয়েছেন জেটলি। অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনও মনে করেন, নিজেদের তহবিল থেকে ৩ থেকে ৭ লক্ষ কোটি টাকা কেন্দ্রের কোষাগারে দিতেই পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
বিদেশি মুদ্রা, বন্ড, সোনা ইত্যাদি মিলিয়ে প্রায় ৯.৫ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ আছে শীর্ষ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে। কেন্দ্রের মতে, এর একটা অংশ আসা উচিত তাদের কাছে। তাই ভাগাভাগির বিধি সংশোধন করা জরুরি। কিন্তু শীর্ষ ব্যাঙ্ক মনে করে, অর্থনীতির উপরে আসা ঝড়ঝাপ্টা সামাল দিতে ওই তহবিল তাদের কাছে থাকা জরুরি। জেটলির মন্তব্য সেই পরিপ্রেক্ষিতেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy