গত সপ্তাহে অর্থনীতি সংক্রান্ত যে সব তথ্য হাতে এসেছে, তা থেকে বলা যেতে পারে ভারতের আর্থিক স্বাস্থ্য অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই ভাল। তবে তার সঙ্গে দুশ্চিন্তার কিছু কারণও রয়ে গিয়েছে। আজ দেখে নেব সেই সব ভাল-মন্দের নানা দিক।
যে সব খবর অর্থনীতি সম্পর্কে ভরসা জোগাচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে—
- অগস্টে ১.৫৯ লক্ষ কোটি টাকার বেশি জিএসটি আদায়। যা গত বছরের ওই মাসের তুলনায় (১.৪৩ লক্ষ কোটি) ১১% বেশি।
- চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) ৭.৮% আর্থিক বৃদ্ধি।
- মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ়ের চলতি বছরে বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫.৫% থেকে বাড়িয়ে ৬.৭% করা0।
- জুলাইয়ে আটটি মূল পরিকাঠামোর ৮% বৃদ্ধি। গত বছর ছিল ৪.৮%।
- অগস্টে কারখানায় ৩,৬৮,৮৯৭টি যাত্রী গাড়ি তৈরি। বৃদ্ধি ১২.৮%।
তবে এর পরেও অর্থনীতি নিয়ে আশঙ্কা বহাল। সেগুলি হল—
- জুলাইয়ে ১.৬৫ লক্ষ কোটি টাকা জিএসটি আদায়ের থেকে অগস্টে কম।
- এপ্রিলে-জুনের বৃদ্ধি বহাল থাকা নিয়ে সন্দেহ।
- অগস্টের বৃষ্টি ১২২ বছরে সর্বনিম্ন। ঘাটতি ছিল ৩৬%। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ঘাটতি ১০%। উত্তর-পশ্চিম ও মধ্য ভারতে অবশ্য বন্যা পরিস্থিতি। ক্ষতির মুখে কৃষিকাজ।
- ফসল কম উৎপাদন হলে আরও চড়বে দাম। আশঙ্কা থাকবে সুদ বৃদ্ধির।
- তখন ধাক্কা খাবে চাহিদা, শিল্পের লগ্নি, কর্মসংস্থান, উৎপাদন।
জোগান বাড়িয়ে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র কোথাও রফতানিতে শুল্ক বসাচ্ছে, কোথাও নিষেধাজ্ঞা। আমদানি শুল্কও কমেছে কয়েকটিতে। গ্যাস সিলিন্ডার ২০০ টাকা কমেছে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের আশা এই মাসেই পণ্যের দাম মাথা নামাবে। তবে দেশে পেট্রল ডিজ়েল কমেনি। কমার আশু সম্ভাবনাও কম। বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল দীর্ঘ দিন কম (৭০-৭৫ ডলার) থাকার পরে ফের ৮৫ ডলারের কাছে। আরও বাড়লে তা বেশ চাপে ফেলবে কেন্দ্রকে।
অর্থাৎ এপ্রিল-জুনে অর্থনীতি এগোলেও গতি ধরে রাখা কঠিন। চড়া বৃদ্ধির খবরে শুক্রবার সেনসেক্স ৫৫৬ পয়েন্ট বেড়ে হয় ৬৫,৩৮৭। নিফ্টি ১৯,৪৩৫। চিন্তার কারণ থাকলেও, বাজার তেজী। শেয়ার ভিত্তিক ফান্ডের ন্যাভও উঠেছে। বিএসই-তে লগ্নিকারীর সংখ্যা ১৪.১২ কোটি। জনসংখ্যার কমবেশি ১০%। নথিবদ্ধ সব শেয়ারের বাজারদর ৩১২.৪১ লক্ষ কোটি টাকা। বিভিন্ন ফান্ডে সম্পদ ৪৬ কোটি টাকারও বেশি। বেশি আয়ের জন্য বহু মানুষ শেয়ার এবং ফান্ডে ভিড় জমাচ্ছেন। লগ্নি আসছে শহর, মফস্সল এমনকি গ্রাম থেকেও।
(মতামত ব্যক্তিগত)
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)