সম্প্রতি বিমানের বরাত দিয়ে ইতিহাস গড়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। ইউরোপের এয়ারবাস ও আমেরিকার বোয়িং-এর থেকে ৪৭০টি কিনবে বলে জানিয়েছে টাটা গোষ্ঠীর সংস্থাটি। যেগুলি হাতে এলে চালাতে ৬৫০০ জনের বেশি পাইলটের ডাক পড়বে, দাবি শিল্প সূত্রের। পাশাপাশি এক দশকে আরও ৩৭০টি বিমান কেনার অধিকারও সংস্থা দু’টির কাছে দাখিল করে রেখেছে তারা। সব মিলিয়ে মোট ৮৪০টি। বিমান বরাতের নিরিখে যা বৃহত্তম। তবে সংখ্যায় এমন চমকপ্রদ না হলেও, হালে নতুন বিমান কেনার কথা বলেছে আকাশ এয়ার, ইন্ডিগো, গো ফার্স্টের মতো সংস্থাও। আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যবসা বৃদ্ধির বার্তা দিয়েছেন ইন্ডিগো প্রধান। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, তৈরি হচ্ছে প্রতিটি সংস্থা। কোভিডের কামড় এবং জ্বালানির আগুন দাম যে সঙ্কট তৈরি করেছিল, তা কাটিয়ে আকাশপথে ফিরতে পারে বাজার দখলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ভারতীয় সংস্থাগুলির সামনে ব্যবসা বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা। দেশের ৫% মানুষওনিয়মিত বিমানে চড়েন না। ফলে যাত্রী টানার সুযোগ অফুরন্ত। ঘরোয়ার পাশাপাশি চওড়া আন্তর্জাতিক বাজারদখলের পথও। তাঁদের বক্তব্য, এখনও ইউরোপ, আমেরিকা যেতে ভারতীয়দের পশ্চিম এশিয়ার দেশ ঘুরে যেতে হয়। ভাল রুটের চাহিদা আছে। আছে নতুন গন্তব্যও।
শিল্পমহল বলছে, জেট এয়ার বন্ধেরপরে এক ধাক্কায় দেশের আকাশ থেকে মিলিয়ে গিয়েছিল প্রায় ১৪০টি বিমান। সেই শূন্যতা ভরাট হয়নি। অথচ যাত্রী বেড়েছে। ফলে কোভিড কিছুটা দুর্বল করলেও ব্যবসার জমি কাড়তে পারেনি। যে কারণে একের পর এক সংস্থা বিমানের বরাত দিচ্ছে। তবে সেগুলি এখনই হাতে আসবে না। পাঁচ-ছয় বছর লাগবে। তত দিনে লিজ় নেওয়া বিমানও ফেরত চলে যাবে।
ইন্ডিয়ান অ্যারোনটিক্যাল সোসাইটির সদস্য, বিমান পরিবহণ বিশেষজ্ঞ দেবাশিস সাহা বলেন, ‘‘আমেরিকা, ইংল্যান্ড, চিনের এক তৃতীয়াংশ উড়ানও আমাদের আকাশে নেই। কেন্দ্র নতুন বিমানবন্দর বানাচ্ছে। ভবিষ্যতে দেশের বিমান ক্ষেত্রে বিশাল বাজার তৈরি হচ্ছে।’’ এক বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘এত বিমান এলে জরুরি তাররক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে ভাবাও। দেশের বেশ কিছু শহরে মেন্টেন্যান্স রিপেয়ারিং অ্যান্ড ওভারহলিং (এমআরও) তৈরি হচ্ছে। হতে পারে কলকাতাতেও।’’
সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ অবশ্য খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। চড়া মূল্যবৃদ্ধির আবহে যাত্রী বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়েও সংশয়ী তারা। বলছেন, বিপুল অর্থ ঢেলে শক্তি বাড়ানোর পরে ফের ঝুঁকির মুখে পড়বে না তো সংস্থাগুলি!
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)