Advertisement
E-Paper

পা ফেলতে হবে বুঝেশুনে, ভয় পাবেন না উঁচু বাজারকে

সীমান্তে সংঘাতকে কেন্দ্র করে দুই সূচকই চুপসে গিয়েছিল খানিকটা করে। এই সময়ে ভাল রকম পতন হয় মিড ক্যাপ এবং স্মল ক্যাপ শেয়ারে। শেষ দু’দিন অবশ্য সব কিছু পুষিয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন দিক থেকে অনুকূল বার্তা পেয়ে ভাল রকম তেতে ওঠে দেশের মূল দুই শেয়ার বাজার।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ০৪:৩৫

গত সপ্তাহে নতুন মাইলফলক ছুঁল দালাল স্ট্রিটে। প্রথম বারের জন্য ৩১ হাজারে পা রাখল সেনসেক্স। শুক্রবার বাজার বন্ধ হওয়ার সময়ে মুম্বই সূচক থেমেছে ৩১,০২৮ অঙ্কে। একই দিনে ৯,৬০০ পয়েন্টের বাধা পেরিয়ে নতুন নজির গড়েছিল নিফ্‌টিও। বেলাশেষে অবশ্য ৫০টি শেয়ারের এই সূচক বন্ধ হয় ৯,৫৯৫ অঙ্কে।

সপ্তাহের শুরুটা কিন্তু একটু নড়বড়েই ছিল। সীমান্তে সংঘাতকে কেন্দ্র করে দুই সূচকই চুপসে গিয়েছিল খানিকটা করে। এই সময়ে ভাল রকম পতন হয় মিড ক্যাপ এবং স্মল ক্যাপ শেয়ারে। শেষ দু’দিন অবশ্য সব কিছু পুষিয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন দিক থেকে অনুকূল বার্তা পেয়ে ভাল রকম তেতে ওঠে দেশের মূল দুই শেয়ার বাজার। সৃষ্টি হয় নতুন নজির।

প্রশ্ন হল, এর পর কী? অনেকেই ভাবছেন, এত উঁচু বাজারে লগ্নি করা ঠিক হবে‌ কি না। প্রতিবারই যখন বাজার উচ্চতর শৃঙ্গে চাপে, তখনই মানুষের মনে এই প্রশ্ন জাগে। অনেকে ভাল দামের সুযোগ নিয়ে বেরিয়ে আসার কথাও ভাবছেন। আশাবাদীরা অবশ্য বলছেন, এই উচ্চতায় ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। দেখতে হবে আগামী দিনে অর্থনীতি ও সংস্থাগুলি কেমন ভাবে এগোয়। পরিস্থিতি যা, তাতে আশা করা যেতেই পারে ২০১৭-’১৮ সালটি ভালই যাবে।

এঁদের মতে, সূচক যখন প্রথম বার ১০ হাজারে পা রেখেছিল তখন অনেকেই ভাবেননি, তা অল্প সময়ে ২০ হাজারে পৌঁছবে। আবার ২০০৮ সালে বিশ্ব মন্দার বাজারে সূচক যখন আট-ন’হাজারের বলয়ে নেমে এসেছিল, তখন কে জোর করে বলতে পেরেছিল, মাত্র ৯ বছরের মধ্যে সেনসেক্স পৌঁছে যাবে ৩১ হাজারে। আর পিছনে নয়, আশাবাদীরা সামনেই তাকাতে চাইছেন— ৩৩, ৩৫, এমনকী ৪০ হাজারের দিকেও।

শনিবার কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ড নিয়ে এমন একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে, যা বাজারকে অতিরিক্ত শক্তি জোগাবে। ঠিক হয়েছে, তহবিলে নতুন জমার ১৫ শতাংশ প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ ভাবে শেয়ার বাজারে লগ্নি করতে হবে। আগে বাধ্যতামূলক এই লগ্নির হার ছিল ১০ শতাংশ। এর ফলে দেশের মধ্যে থেকে বাজারে দীর্ঘ মেয়াদি লগ্নি অনেকটাই বেড়ে‌ উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে কিছুটা হলেও কমবে বিদেশি লগ্নির প্রতি নির্ভরতা। আশা করা যায়, সোমবার বাজার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবে।

বাজার এতটা ওঠা সত্ত্বেও একটু লক্ষ করলে দেখা যাবে, কিছু শেয়ার এখনও তেমন ওঠেনি। এই উত্থান হয়েছে বড় মাপের তথ্যপ্রযুক্তি এবং ওষুধ সংস্থার শেয়ারকে বাইরে রেখেই। উত্থানে মূলত মদত দিয়েছে এফএমসিজি, গাড়ি, কিছুটা ব্যাঙ্কিং এবং শেষ দিকে ইস্পাত শিল্প। পেশি দেখাতে শুরু করেছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজও। মাঝে মাঝে ছোট ছোট পতন সুযোগ করে দিচ্ছে কিছুটা কম দামে ভাল শেয়ার কেনার। ঝুলিতে ভাল শেয়ার পুরতে পারলে তা দীর্ঘ মেয়াদে ধরে রাখা যায়। তবে এই প্রসঙ্গে মনে রাখতে হবে, কোনও শেয়ারই এমন নয়, যাকে সুযোগ পেলে ত্যাগ করা যাবে না। ভাল শেয়ারও বিক্রি করা যায় অতি ভাল দাম পেলে। পরে বাজারের সংশোধনে তা আবার কিনেও নেওয়া যায়।

যদিও বাজারের আরও উত্থানের সম্ভাবনা আছে, তবুও এখন লগ্নি করতে হবে বুঝেশুনে। আন্তর্জাতিক কোনও ঘটনা সূচককে ফেলে দিতে পারে এক ঝটকায়। তবে এখন যা পরিস্থিতি, তাতে কোনও পতনই হয়তো দীর্ঘস্থায়ী হবে না। কার্গিল যুদ্ধ চলাকালীনও এক সময়ে বাজারকে উঠতে দেখা গিয়েছিল। যাঁরা এই বাজারে লগ্নিতে ঝুঁকি আছে বলে মনে করছেন, তাঁরা মিউচুয়াল ফান্ডের পথ নিতে পারেন।

এই মরসুমে সংস্থার ফল প্রকাশ শেষ হতে আর মাত্র দু’দিন বাকি। এই দু’দিনে প্রকাশিত হবে একগুচ্ছ আর্থিক ফল। এগুলিও কিছুটা দিশা দেখাবে বাজারকে। গত সপ্তাহেও প্রকাশিত হয়েছে বেশ কয়েকটি ফলাফল। এদের মধ্যে আছে আইটিসি, এইচপিসিএল, ইন্ডিয়ান অয়েল, গেইল, ওএনজিসি, গোদরেজের মতো বড় সংস্থা। দু’একটি সংস্থা আশা না-মেটালেও ফল মোটের উপর ভাল। কিছু হিসেব দেওয়া হল সঙ্গের সারণিতে।

Stock Markets investment sensex share markets
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy