Advertisement
E-Paper

দরজায় ভোট, দরে দরাজ মোদী

‘মন কি বাত’-এ কথা দিয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই প্রতিশ্রুতি ফের দিয়েছিলেন দিন দুয়েক আগেও। সেই কথা রেখে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে দরাজ হাতে ১৪টি খরিফ ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) বাড়িয়ে দিল কেন্দ্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ০৩:৩৯

‘মন কি বাত’-এ কথা দিয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই প্রতিশ্রুতি ফের দিয়েছিলেন দিন দুয়েক আগেও। সেই কথা রেখে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে দরাজ হাতে ১৪টি খরিফ ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) বাড়িয়ে দিল কেন্দ্র। চালে তা কুইন্টালে ২০০ টাকা বেড়ে হল ১,৭৫০ টাকা। মোদী জমানায় সব চেয়ে বেশি। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, এই সিদ্ধান্ত ঐতিহাসিক। একই কথা মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যদের মুখেও। কিন্তু বিরোধীরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত নেহাতই ‘জুমলা’। ভোটের ললিপপ।

মন্দসৌরে বিক্ষোভ থেকে মধ্যরাতে ‘মুম্বই দখল’— দেশে কৃষকদের ক্ষোভ যে ক্রমশ বাড়ছে, তা বিলক্ষণ টের পাচ্ছে মোদী সরকার। ভোটের মুখে তা তাদের মাথাব্যথার কারণও। সেই চাপের মুখেই যে এই সিদ্ধান্ত, তা মেনে নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘কৃষকদের মধ্যে হতাশা ছিল।...নরেন্দ্র মোদী সেই হতাশা বুঝেছেন।’’

কিন্তু বিরোধীরা বলছেন, কথা রাখা আর হল কোথায়! গত নির্বাচনের আগে বিজেপির দাবি ছিল, ক্ষমতায় এলে স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশ মেনে চাষের মোট খরচের দেড় গুণ এমএসপি দেবে তারা। অথচ আদপে তা দেওয়া হল না। খরচের হিসেব কষা হল দ্বিতীয় পদ্ধতিতে। তৃতীয়টি ধরে নয়। আর সেই যুক্তিতে মোদী সরকারকে বিশ্বাসঘাতক তকমা দিতেও ছাড়ছে না কংগ্রেস, সিপিএমের মতো বিরোধী দলগুলি।

চাষিদের আয় ২০২২ সালের মধ্যে মোদী দ্বিগুণ করার স্বপ্ন দেখালেও, গত চার বছরে তাঁদের দাবি মতো ফসলের দাম বাড়েনি। কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহ যুক্তি দিতেন, শুধু এমএসপি বাড়ালেই ওই আয় বাড়বে না। উল্টে গরিব কৃষকদেরই মূল্যবৃদ্ধির আঁচ পোয়াতে হবে। শেষে দেশ জুড়ে কৃষকদের আন্দোলনের মুখে গত বাজেটে অরুণ জেটলি ঘোষণা করেন, ফসলের দেড় গুণ দাম দেওয়ার কথা।

কংগ্রেস কিংবা সিপিএমের কৃষক সভা যতই অভিযোগ তুলুক, বিজেপি যে ভোটে এমএসপি-কে তুরুপের তাস করবে, তার ইঙ্গিত দিয়ে বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ শুদ্ধ হিন্দিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। জমি লিজের খরচ কেন ধরা হল না তা এড়িয়ে তুলে ধরতে চেষ্টা করেন, নিজেদের কৃষক পরিচিতি।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ফসলের দাম বাড়লেও চাষিরা কি সত্যিই লাভবান হবেন? বিরোধীদের অভিযোগ, রাগি, জোয়ার বাজরা, মুগ ডালের মতো ফসলে এমএসপি সব থেকে বেশি বেড়েছে। কিন্তু এগুলি সরকার প্রায় কেনেই না। খাদ্য সুরক্ষা আইন কার্যকর করতে মূলত চাল কেনে। আর সেখানে দর বেড়েছে ১৩%।

প্রধানমন্ত্রী টুইটে একে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত বললেও, পরিসংখ্যান বলছে মনমোহন জমানাতেই ২০১২-’১৩ সালে চালের দাম ১৫.৭% বেড়েছিল। কংগ্রেসের প্রশ্ন, ১৩% চালের দাম বেড়ে কী হবে? ডিজেল, বিদ্যুতের খরচও তো বেড়েছে।

খরিফ ফসলের বাড়তি দাম দিতে গিয়ে কোষাগারে চাপ পড়বে কি না কিংবা মূল্যবৃদ্ধির কী হবে, সেই প্রশ্নও উঠেছে। রাজনাথের আশ্বাস, সরকার বাজারদর নিয়ন্ত্রণে রাখবে।

Paddy Kharif season Price Narendra Modi South Block MSP নরেন্দ্র মোদী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy