Advertisement
E-Paper

নাম আগেই গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে, জালিয়াতের শাস্তি হল কই? অভিযোগ রাজনের

একে রাফাল হানায় জেরবার। এ বার রঘুরাম রাজনের অভিযোগের তিরও অস্বস্তিতে ফেলল মোদী সরকারকে। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:০৯

একে রাফাল হানায় জেরবার। এ বার রঘুরাম রাজনের অভিযোগের তিরও অস্বস্তিতে ফেলল মোদী সরকারকে।

সংসদের এস্টিমেট কমিটিকে পাঠানো ১৭ পৃষ্ঠার নোটে রাজন লিখেছেন, তিনি গভর্নর থাকাকালীন বড় মাপের ব্যাঙ্ক প্রতারণার মামলার তালিকা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। আর্জি ছিল, অন্তত দু’এক জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। কিন্তু তা আদৌ হয়েছে কি না, সেটি তাঁর জানা নেই।

তাঁর আক্ষেপ, ‘‘দুর্ভাগ্য হল, পুরো ব্যবস্থা এক জনও হাই প্রোফাইল জালিয়াতকে ধরতে ব্যর্থ। ফলে প্রতারণায় ভাটা পড়েনি। তদন্তকারী সংস্থাগুলি জালিয়াতি হয়ে যাওয়ার পরে ঘুম ভাঙার জন্য ব্যাঙ্ককে দায়ী করেছে। ব্যাঙ্ক কর্তারাও শঙ্কিত এই ভেবে যে, প্রতারণা ধরা পড়লে তদন্তকারী সংস্থাগুলি জালিয়াতকে না ধরে তাঁদের হেনস্থা করবে!’’

এমনিতেই নীরব মোদী, মেহুল চোক্সীদের নিয়ে বিব্রত মোদী সরকার। তার উপরে এই নোট সামনে আসার পরে প্রশ্ন উঠেছে, কেন প্রতারকদের তালিকা পেয়েও মোদী সরকার পদক্ষেপ করেনি? সূত্রের খবর, ঠিক এই প্রশ্নই এ বার তুলবে বিজেপির মার্গদর্শকমণ্ডলীর সদস্য মুরলী মনোহর জোশীর নেতৃত্বাধীন এস্টিমেটস কমিটি। একটি সূত্রের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, অর্থসচিবকে কমিটি এ বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারে।

রাজন তাঁর নোটে স্পষ্ট জানাননি যে, কবে তিনি তালিকা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠিয়েছিলেন। অথচ মনমোহন সিংহ ও নরেন্দ্র মোদী— দুই প্রধানমন্ত্রীর আমলেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর পদে ছিলেন তিনি। কিন্তু রাজন প্রতারণা নজরদারি শাখা তৈরির কথা লিখেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে ‘হাই প্রোফাইল’ প্রতারণার মামলার তালিকা পাঠানোর কথা এসেছে তার পরে। তথ্য বলছে, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে ওই শাখা তৈরি হয়েছিল। যার অর্থ, তার পরেই প্রধানমন্ত্রীর দফতরে তালিকা পাঠানো হয়েছে। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘২০১৬-তে নরেন্দ্র মোদীর দফতরে পাঠানো ওই তালিকাতেই নীরব মোদী, মেহুল চোক্সীদের নাম ছিল। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।’’

আরও একটি বিষয়ে মোদীকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন রাজন। নরেন্দ্র মোদী যে মুদ্রা যোজনা বা ছোট উদ্যোগপতিদের ঋণ দেওয়া নিয়ে ঢাক পেটাচ্ছেন, আগামী দিনে তা নতুন করে ব্যাঙ্কের মাথাব্যথার কারণ হতে পারে বলে তাঁর অভিমত।

২০১৫ সালে মুদ্রা যোজনা চালুর পরে ৬ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ বিলি হয়েছে বলে কেন্দ্রের হিসেব। ১২ কোটি লোক ঋণ পেয়েছেন। প্রতিটি ঋণে অন্তত বাড়তি একজনের কর্মসংস্থান হয়েছে বলেও দাবি প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু বাস্তব হল, ৬ লক্ষ কোটির মধ্যে ১৪ হাজার কোটির ঋণ এখনই অনাদায়ির খাতায়।

রাজনের মতে, সরকারের পরবর্তী সঙ্কটের দিকে নজর দেওয়া উচিত। ঋণ বিলির অবাস্তব লক্ষ্য ও ঋণ মকুব থেকে বিরত থাকা উচিত। মুদ্রা ঋণ ও কিসান ক্রেডিট কার্ডের বিপদ থেকে সতর্ক থাকা দরকার। ছোট-মাঝারি শিল্পের জন্য ঋণ গ্যারান্টি প্রকল্পও দায় হয়ে উঠতে পারে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির অবশ্য দাবি, রাজনের কথা আদতে মোদীর অভিযোগকেই সঠিক প্রমাণ করেছে। তাঁর কথায়, ইউপিএ-আমলে মাফিয়া-রাজ চলত। মোদী আগেই বলেছেন, ফোন করে ধমক দিয়ে ঋণ মঞ্জুর করানো হত।

কংগ্রেসের রণদীপ সুরজেওয়ালার পাল্টা যুক্তি, ‘‘ইউপিএ সরকার ক্ষমতা ছাড়ার সময়ে অনুৎপাদক সম্পদ ছিল ২.৮৩ লক্ষ কোটি টাকা। এখন ১২ লক্ষ কোটি ছাপিয়েছে। এখন ইশারায় ঋণ মঞ্জুর হচ্ছে। বাড়তি ৯ লক্ষ কোটি টাকা ঋণের দায় মোদী সরকারকে নিতে হবে।’’

Raghuram Rajan former RBI governor Congress BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy