Advertisement
E-Paper

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের টাকায় হাত নয়

অর্থমন্ত্রীর আশ্বাস, সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কেন্দ্রের অলিখিত গ্যারান্টি যেমন ছিল, তেমনই থাকবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪১
রাজ্যসভায় জেটলি। পিটিআই

রাজ্যসভায় জেটলি। পিটিআই

সংসদীয় যৌথ কমিটিতে আটকে থাকা আর্থিক ক্ষেত্রের খসড়া বিল নিয়ে ফের এক পা পিছোলো কেন্দ্র। এর দরুন সাধারণ মানুষের টাকা মার যাবে না বলে আগেই আশ্বাস দিতে বাধ্য হয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। এ বার আলাদা করে উল্লেখ করলেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কথা। আশ্বাস দিলেন, সঙ্কট এলেও সেখানে গ্রাহকের টাকায় হাত না দেওয়ার। বললেন, সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে পুঁজি জোগাতে পিছপা হবে না কেন্দ্র।

ব্যাঙ্ক লাল বাতি জ্বাললে, সঞ্চয়ের টাকা আটকে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে আমজনতার মধ্যে। এ নিয়ে সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। এমনকী বিরোধ রয়েছে দলের অন্দরে। উদ্বেগের কারণ, ব্যাঙ্কের আমানত সুরক্ষা সংক্রান্ত খসড়া বিলের ৫২ নম্বর ধারায় ‘বেইল-ইন’ শর্ত। আমানতকারীদের জমানো টাকায় ব্যাঙ্ক বাঁচানোর প্রস্তাবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে একে ঘিরে।

অর্থমন্ত্রীর আশ্বাস, সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কেন্দ্রের অলিখিত গ্যারান্টি যেমন ছিল, তেমনই থাকবে। ব্যাঙ্ক বিপদে পড়লে, সরকারই নতুন পুঁজি জোগাবে। কিন্তু তা হলে বেসরকারি ব্যাঙ্কে টাকা রাখা কি ঝুঁকির হয়ে দাঁড়াবে না? অর্থমন্ত্রীর যুক্তি, ‘‘বেসরকারি ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রেও ওই পথ নেওয়া হবে যদি আর কোনও উপায় না থাকে।’’

অর্থ বিষয়ক সচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কে রাখা টাকার ৭০% রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে। বাকির সিংহভাগ সেই সব বেসরকারি ব্যাঙ্কে, যাদের আর্থিক স্বাস্থ্য ভাল। পুঁজিরও অভাব নেই। তাই ৯৮% আমানতকারীরই বেইল-ইন নিয়ে চিন্তা নেই। বাকিদের ক্ষেত্রেও ওই শর্ত কার্যকর হবে, যদি আমানতকারীর সম্মতি থাকে।’’ বিলে যদিও সম্মতির উল্লেখ ছিল না।

একই সঙ্গে অর্থ মন্ত্রকের যুক্তি, এখন যে আইন রয়েছে, তাতে ব্যাঙ্কে জমা রাখা টাকার মধ্যে মাত্র ১ লক্ষ টাকা সুরক্ষিত। সরকার নতুন বিল নিয়ে এসে সেই সুরক্ষা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছে। যেখানে ব্যাঙ্ক লালবাতি জ্বালার আগেই সরকার হস্তক্ষেপ করবে। কোন ব্যাঙ্ক কতখানি বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে, তা আগাম চিহ্নিত করা হবে। ফলে আমজনতাও আগে থেকে বুঝতে পারবে, কোন ব্যাঙ্কে টাকা রাখা নিরাপদ।

তাই জেটলির কথায়, ‘‘বেইল-ইন অনেক বিকল্পের মধ্যে একটি। হয়তো এই রাস্তায় হাঁটার দরকারই পড়বে না। বিশেষত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে এমন বিপদ আসবে না। তারা বিপাকে পড়লে কেন্দ্র পুঁজি দেবে।’’ তবে তার পরেও এ নিয়ে বিতর্ক অবশ্য আপাতত জারি থাকারই সম্ভাবনা। জেটলির আশ্বাস সত্ত্বেও।

এখন নিয়ম

• কোনও একটি ব্যাঙ্কে যতগুলি অ্যাকাউন্টে যত টাকাই কারও থাকুক না কেন, সেই ব্যাঙ্কের ব্যবসা লাটে উঠলে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে ফেরত পাবেন তিনি

• বাকিটা নির্ভর করবে ব্যাঙ্কের সম্পদ ইত্যাদি বেচে কতটা অর্থ জোগাড় করা যায়, তার উপরে

• সেই সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে থাকে গচ্ছিত টাকা মার না-যাওয়ার অলিখিত সরকারি গ্যারান্টি

• ব্যাঙ্কে টাকা রাখা মানে তা সুদ সমেত নগদেই ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা

বিলে প্রস্তাব

• আর্থিক সঙ্কটের জেরে ব্যাঙ্ক দেউলিয়া ঘোষণার মুখে থাকলে, গ্রাহকদের আমানতের টাকা তাঁদের অনুমতি না-নিয়েই বাড়তি সময় আটকে রাখতে পারবে

• হেরফের করতে পারবে সুদে

• প্রয়োজনে তা বদলে দিতে পারবে শেয়ার, ডিবেঞ্চার, বন্ডে

খটকা

• ব্যাঙ্ক লালবাতি জ্বাললে, এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা কি থাকবে না?

• উবে যাবে কেন্দ্রের গ্যারান্টি?

Arun Jaitley Finance Nationalised Bank অরুণ জেটলি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy