সম্প্রতি গুজরাতের ভাবনগরে জাহাজ নির্মাণ শিল্প এবং সমুদ্র বাণিজ্যের ক্ষেত্রকে ব্যবহার করে স্বনির্ভরতা অর্জনের বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার এই ক্ষেত্রের জন্যে ৬৯,৭২৫ কোটি টাকার প্রকল্পে সায় দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব দাবি করেছেন, এর সুবিধা পাবে পশ্চিমবঙ্গে কলকাতা বন্দরের হলদিয়া এবং নেতাজি সুভাষ ডক ছাড়াও একাধিক জাহাজ নির্মাণ কারখানা।
আমদানি-রফতানিতে বিদেশি জাহাজের উপর নির্ভরতা কমাতে চাইছে কেন্দ্র। সে জন্য দেশে তা তৈরিতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। জোর পাচ্ছে এই ক্ষেত্রে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা, নতুন কারখানা স্থাপন এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন। নতুন প্রকল্প গড়ায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে নীতিগত জটিলতা কাটানোর উপরেও। আর্থিক প্রকল্পের কেন্দ্রে মূলত মূলত এই বিষয়গুলিই।
এর মধ্যে ২০৩৬-এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত জাহাজ তৈরিতে বরাদ্দ হয়েছে ২৪,৭৩৬ কোটি টাকা। বড় জাহাজ তৈরিকে পরিকাঠামো শিল্পের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ফলে ঋণ পাওয়া সহজ হবে। একটা সংস্থা তাদের কোনও জাহাজ এ দেশেই ভেঙে নতুন করে নির্মাণের বরাত দিলে, পুরনোটির মূল্যের উপর ৪০% পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা ক্রেডিট নোট হিসেবে পাবে। এ ছাড়া, অর্থ বরাদ্দ হয়েছে দেশ জুড়ে জাহাজ কারখানা গড়ায় উৎসাহ দিতে, সামুদ্রিক বাণিজ্য উন্নয়ন তহবিলে (লগ্নি করতে এবং উৎসাহ ভাতা দিতে) এবং নকশা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে। সরকারি মহলের দাবি, মোট ৪৫ লক্ষ টন ওজনের জাহাজ তৈরিই আর্থিক প্রকল্পের লক্ষ্য। যাতে ৪.৫ লক্ষ কোটি টাকার লগ্নি টানা যায় এবং জাহাজ নির্মাণ এবং তার অনুসারী শিল্পে ৩০ লক্ষ কর্মসংস্থান হয়। ২০৩০-এর মধ্যে জাহাজ শিল্পে বিশ্বের সেরা দশে এবং ২০৪৭-এর মধ্যে সেরা পাঁচে পৌঁছতে চায় ভারত।
উল্লেখ্য, এ রাজ্যে কলকাতা তথা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দর কর্তৃপক্ষ গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্সের সঙ্গে মিলে রায়চকে জাহাজ নির্মাণ কারখানার পরিকল্পনা করছে। প্রায় ২৬০ কোটি টাকা খরচে হলদিয়া বন্দরে বছরে ৩০ লক্ষ টন প্রাকৃতিক গ্যাস আনার টার্মিনালও গড়ছে তারা। নেতাজি সুভাষ ডকের ৭ এবং ৮ নম্বর বার্থের উন্নয়ন ঘটিয়ে বাড়ানো হচ্ছে কন্টেনার আনা-নেওয়ার ক্ষমতাও।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)