জিএসটি কমায় বাজারে যখন কেনাকাটা বৃদ্ধির বার্তা দিচ্ছে মোদী সরকার, তখন সোমবার খোদ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান জানাল অক্টোবরে দেশে শিল্পোৎপাদন বেড়েছে মাত্র ০.৪%। গত ১৩ মাসে যা সর্বনিম্ন। সেপ্টেম্বরেও সেই হার ছিল ৪.৬% (সংশোধিত)। বিদ্যুৎ, খনন তো বটেই, এমনকি উৎপাদন শিল্পও ভাল ফল করতে পারেনি অক্টোবরে। তার উপরে অর্থনীতি নিয়ে চিন্তা বাড়িয়ে সমীক্ষা জানাচ্ছে, শিল্পোৎপাদন ধাক্কা খেয়েছে গত মাসে। এইচএসবিসি ইন্ডিয়ার ম্যানুফ্যাকচারিং পার্চেসিং ম্যানেজার্স সূচক (পিএমআই) দাঁড়িয়েছে ৫৬.৬-এ। যা ন’মাসে সবচেয়ে নীচে। এই সূচক ৫০-এর বেশি থাকার অর্থ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বৃদ্ধি। কম হলে সঙ্কোচন।
এ দিকে, করের হার কমা এবং উৎসবের মরসুমের পরে বিক্রিবাটা মাথা নামানোর জের পড়েছে গত মাসে জিএসটি আদায়ের উপরেও। আজ সরকারের তথ্য বলছে, তা মাত্র ০.৭% বেড়ে হয়েছে ১.৭ লক্ষ কোটি টাকা। অক্টোবরে ছিল প্রায় ১.৯৬ লক্ষ কোটি। আর গত বছর নভেম্বরে ১.৬৯ লক্ষ কোটি। চলতি অর্থবর্ষে এর আগে কোনও মাসে এতটা কমেনি আদায়।
অগস্টে জিএসটি কমানোর ঘোষণার পরে এক দিকে যেমন মানুষ কেনাকাটা স্থগিত রেখেছিলেন, তেমনই সংস্থাগুলি চাহিদা বৃদ্ধির অঙ্ক কষে উৎপাদন বাড়ায়। ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ৩৭৫টি পণ্যে কমেছিল পরোক্ষ কর। তার পরে বিপুল কেনাকাটা বৃদ্ধির ছবি দেখে দেশ। কিন্তু অক্টোবরে খনন ও বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে যথাক্রমে ১.৮% ও ৬.৯%। দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি ভোগ্যপণ্য যথাক্রমে ০.৫% এবং ৪.৪%। কল-কারখানার উৎপাদন বেড়েছে ১.৮%, মূলধনী পণ্য ২.৪%। এইচএসবিসি-র সমীক্ষা বলছে, দেশে বিক্রি মাথা নামানো এবং আমেরিকার শুল্কের কারণে বিদেশের বরাত কমায় দেশে মাথা নামাচ্ছে উৎপাদন। ১৩ মাসে সর্বনিম্ন নতুন রফতানির বরাত।
তার উপরে জিএসটি কমার সুবিধা ক্রমশ ফিকে হচ্ছে। ফলে তা শুল্কের প্রভাবকে পুরোপুরি কাটাতে পারবে না বলেও মত এইচএসবিসি-র। সেই আশঙ্কা আরও স্পষ্ট করে কেন্দ্রের তথ্য জানাচ্ছে, দেশের বাজার থেকে জিএসটি আদায় গত মাসে ২.৩% কমে হয়েছে ১.২৪ লক্ষ কোটি টাকা। আমদানি খাতে আদায় ১০.২% বেড়ে ৪৫,৯৭৬ কোটি। তবে সেস আদায়ের তথ্য এই পরিসংখ্যানে নেই।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)