ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক-দৌরাত্ম্যের জেরে গালওয়ান সীমান্ত সংঘর্ষের পাঁচ বছর পরে কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছে ভারত এবং চিন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বোঝাপড়া বাড়ানোর লক্ষ্যে দু’দিনের সফরে দিল্লিতে এসে আমেরিকার উদ্দেশে হুঙ্কার ছাড়লেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। বললেন, ‘‘একতরফা গুন্ডামি চলছে!’’ একই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ (রেয়ার আর্থ মিনারেল), সার এবং সুড়ঙ্গ খোঁড়ার যন্ত্রপাতি সরবরাহের ক্ষেত্রে বাধা শিথিল করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের প্রশ্ন, চিনের সঙ্গে এই ঘনিষ্ঠতার দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ আছে কি?
সোমবার ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন ই। মঙ্গলবার চিনের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘‘বিশ্ব এখন যে গতিময় পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে চলেছে, তেমনটা এক শতকে এক বার হয়।... চলছে একতরফা গুন্ডামি। অবাধ বাণিজ্য এবং আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা কঠিন অবস্থার মুখে।’’ কূটনৈতিক মহলের বক্তব্য, ই সরাসরি আমেরিকার নাম করেননি। তবে তাঁর লক্ষ্য খুব স্পষ্ট।
সরকারি সূত্রের বক্তব্য, বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, সার এবং সুড়ঙ্গ খোঁড়ার যন্ত্রপাতি সরবরাহের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি শিথিল করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন চিনা বিদেশমন্ত্রী। উল্লেখ্য, বৈদ্যুতিক গাড়ি, ড্রোন, ব্যাটারি, বৈদ্যুতিন পণ্য-সহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ এই খনিজ কাজে লাগে। শুল্ক যুদ্ধের বাজারে চিন তার সরবরাহে কড়াকড়ি শুরু করায় সমস্যায় পড়ে গিয়েছে ভারতীয় সংস্থাগুলি। এ দিন লোকসভায় এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে বাণিজ্য ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী জিতিন প্রসাদ জানিয়েছেন, চিন থেকে সেই খনিজের আমদানি ব্যাহত হওয়ায় সমস্যায় পড়েছে দেশীয় সংস্থাগুলি। এই সরবরাহ মসৃণ করার জন্য অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা, পেরু, মোজ়াম্বিক-সহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করেছে ভারত। জোগানশৃঙ্খল শক্তপোক্ত করতে খনি মন্ত্রকও টানা চেষ্টা চালাচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, ভারত ও চিন আপাতত সতর্ক ভাবেই কাছাকাছি আসার চেষ্টা চালাচ্ছে। এর ভবিষ্যৎ যা-ই হোক না কেন, বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রের কাঁচামালের সরবরাহ ব্যবস্থাকে যতটা বেশি সম্ভব প্রসারিত করা গেলে ভারতেরই লাভ। অন্য এক প্রশ্নে প্রসাদ জানান, আমেরিকার সঙ্গেও বাণিজ্য আলোচনা চলছে।
এক ঝলকে
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, সার সরবরাহে বাধা শিথিলের আশ্বাস চিনের।
সংসদে কেন্দ্র জানাল, গুরুত্বপূর্ণ খনিজের অভাবে সমস্যায় দেশীয় শিল্প।
খনিজের উত্তোলন বাড়াতে মঙ্গলবার খনি সংস্কার বিল পাশ রাজ্যসভায়। লোকসভায় পাশ আগেই।
আমেরিকার শুল্কে দীর্ঘমেয়াদে ভারতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে না, দাবি মূল্যায়ন সংস্থা এসঅ্যান্ডপি-র।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)