যে সব করদাতার রিটার্ন অডিট করাতে হয় না, তাঁদের বিনা জরিমানায় তা জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু সাধারণ করদাতারা নালিশ করেছেন, রিটার্ন জমা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। আয়কর আইনজীবীদের অভিযোগ, ডিজিটাল বিপ্লবের ঢাক পেটানো হলেও এ দেশের আয়কর পোর্টাল এখনও শক্তপোক্ত হতে পারেনি। তাই ভিড় বাড়তেই ভেঙে পড়েছে। তাই সময়সীমা আরও বৃদ্ধিরও দাবি ওঠে। কিন্তু দিনভর তা নিয়ে উচ্চবাচ্য করেনি কেন্দ্র। মধ্যরাতে আচমকাই তা একদিন পিছিয়ে মঙ্গলবার করে। ক্ষুব্ধ করদাতাদের দাবি, আরও কিছু আগে এই ঘোষণা করা যেত। মাত্র একদিন বাড়িয়েই বা কী লাভ হল?
অনেক আয়কর আইনজীবীরই অভিযোগ, সমস্যা আগেই বাড়ছিল। সোমবার সকাল থেকে পোর্টালে গোলমাল বাড়ে। সারা দিন ধরে সমস্যা ছিল। আয়কর আইনজীবী রাজীব নাগের দাবি, গত ৪-৫ দিন ধরেই রিটার্ন দাখিলে সমস্যা হচ্ছে। আয়করের অ্যানুয়াল ইনর্ফমেশন স্টেটমেন্ট (এআইএস) দিন পাঁচেক ধরে খোলাই যাচ্ছিল না। এর ফলে রিটার্ন প্রস্তুত করতেও সমস্যা হয়েছে। আয়করদাতার বিভিন্ন তথ্য যেমন, আগাম কর দিয়েছেন কি না, কত টাকা টিডিএস কাটা হয়েছে, সুদ বাবদ বা অন্যান্য খাতে তাঁর আয় কত ইত্যাদি থাকে এআইএসে। তা ডাউনলোড না হওয়ায় রিটার্ন তৈরিতে দেরি হয়েছে। গতকাল থেকে যে রিটার্ন জমা দিতে ৫ মিনিট লাগার কথা, সেখানে লাগছে ২৫ মিনিট বা তারও বেশি। এ দিন সকাল থেকেই বহুক্ষণ পোর্টাল খোলাই যায়নি।
সরকার নেটে রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করলেও পরিকাঠামো কতটা তৈরি সেই প্রশ্ন রয়েছে, মন্তব্য আইসিএআই-এর পূর্বাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অনির্বাণ দত্তের। তিনি বলেন, ‘‘শেষ দিন পোর্টালে ভিড় বাড়তেই সমস্যা হয়েছে। অথচ এই সব জরুরি দিনেই যদি তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থা কাজ না করে, তা হলে তার দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।’’
আয়কর আইনজীবী এবং অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অব ট্যাক্স প্র্যাক্টিশনার্সের রিপ্রেজ়েন্টেটিভ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নারায়ণ জৈনের দাবি, ‘‘গত কয়েক বছর ধরেই রিটার্ন জমার শেষ দিন আয়কর পোর্টালে সমস্যা হচ্ছে। এ বার বিভিন্ন রাজ্যে বন্যার ফলে অনেকেরই বহু নথি নষ্ট হয়েছে। তার মধ্যে আয়করের নথিও রয়েছে। এ জন্যই আমরা রিটার্ন জমার মেয়াদ বাড়াতে বলেছিলাম।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)