Advertisement
E-Paper

ন্যায় প্রকল্পের পক্ষে সওয়াল মনমোহনের

বিজেপির দাবি ছিল, ক্ষমতায় এলে ন্যায়ের অর্থ জোগাতে মানুষের উপরে কর বসাবে কংগ্রেস। দেশের আর্থিক শৃঙ্খলাও নষ্ট হবে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের প্রশ্ন ছিল, কর বাড়ানো না হলে এর টাকা আসবে কোথা থেকে?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৯ ০২:০৫

ন্যায় প্রকল্প কার্যকর করতে মধ্যবিত্তের ঘাড়ে নতুন কোনও কর চাপানো হবে না বলে দাবি করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। যে প্রতিশ্রুতি এর আগে দিয়েছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমও। কংগ্রেসের ইস্তাহারে প্রকাশ করা ন্যায়ের সমর্থনে শনিবার এক বিবৃতিতে মনমোহনের মত, এই প্রকল্পে গরিবের হাতে টাকা পৌঁছবে। তার হাত ধরে বাড়বে চাহিদা। যা সাহায্য করবে থমকে যাওয়া অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।

বিজেপির দাবি ছিল, ক্ষমতায় এলে ন্যায়ের অর্থ জোগাতে মানুষের উপরে কর বসাবে কংগ্রেস। দেশের আর্থিক শৃঙ্খলাও নষ্ট হবে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের প্রশ্ন ছিল, কর বাড়ানো না হলে এর টাকা আসবে কোথা থেকে? আজ অনেকে বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে শিল্প বৃদ্ধি পৌঁছেছে ২০ মাসের তলানিতে। ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে পাঁচ ত্রৈমাসিকে সর্বনিম্ন। এই অবস্থায় আর্থিক কর্মকাণ্ডে গতি আনার কথা বলে মনমোহন আসলে নরেন্দ্র মোদী সরকারকেই একহাত নিয়েছেন।

এর আগে ক্ষমতায় এলে ৫ কোটি গরিব পরিবারকে বছরে ৭২,০০০ টাকা করে দেওয়া হবে বলে ইস্তাহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কংগ্রেস। তার পরেই ন্যায় প্রকল্পকে অবাস্তব বলে সমালোচনা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। আজ মনমোহনের পাল্টা দাবি, যখন দেশে বেসরকারি লগ্নি ও শিল্প ঢিমেতালে এগোচ্ছে, তখন সেই ধারা কাটিয়ে অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে ন্যায় সাহায্য করবে। তিনি বলেন, এর ফলে অভাবীদের হাতে টাকা আসবে। বাড়বে চাহিদা। গতি আসবে আর্থিক কর্মকাণ্ডে। তৈরি হবে নতুন কল-কারখানা ও যার হাত ধরে হবে কর্মসংস্থানও।

ইস্তাহারের সমর্থনে চিদম্বরম বলেছিলেন, ন্যায় প্রকল্প ধাপে ধাপে চালু হবে। কোনও সময়ই মোট খরচ জিডিপির ২% ছাপিয়ে যাবে না। কর চাপানো না হলেও, ভর্তুকি পর্যালোচনা করা যেতে পারে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। আজ এ জন্য খরচ জিডিপির ১.২-১.৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীও। কর না বাড়ানোর দাবির পিছনে তাঁর যুক্তি, ‘‘ভারতের ৩ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির ক্ষমতা রয়েছে এই খরচের ধাক্কা সামলানোর। এ জন্য মধ্যবিত্তের উপর নতুন করে কোনও করের বোঝা চাপাতে হবে না।’’

মনমোহনের মতে, ন্যায়ের মূল লক্ষ্য দু’টি। এক, দারিদ্র মুছে ফেলা। দুই, দেশের স্তব্ধ হয়ে যাওয়া আর্থিক কর্মকাণ্ড ফের শুরু করা। তাঁর কথায়, ‘‘স্বাধীনতার সময় দেশের ৭০% মানুষ দরিদ্র ছিলেন। গত সাত দশকে সরকারের বিভিন্ন ইতিবাচক পরিকল্পনার ফলে তা ২০ শতাংশে নেমেছে। এখন লড়াই দারিদ্রের শেষটুকুও মুছে দেওয়ার।’’ আর আর্থিক কর্মকাণ্ডে গতি এলেই যা সম্ভব হবে বলেই তাঁর দাবি।

প্রসঙ্গত, ন্যায় প্রকল্প রূপায়ণ করা সম্ভব জানিয়েও প্রাক্তন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর রঘুরাম রাজনের মত ছিল, কী ভাবে করা হবে, আগে সেটা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। সরাসরি মানুষের হাতে টাকা পৌঁছে দিয়েই দারিদ্র দূর করা সম্ভব কি না, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। বিশেষজ্ঞদের অনেকের দাবি, কংগ্রেসের ন্যায়ই হোক বা বিজেপির পিএম কিসান, ভোটের মরসুমে সকলেই নগদ হস্তান্তর নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। কিন্তু শুধু এর মাধ্যমে দারিদ্র সমস্যা দূর করা যায় না।

আজ কংগ্রেস আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতেও বদ্ধপরিকর বলে বিবৃতিতে জানিয়েছেন মনমোহন। যদিও অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, তাঁর জমানাতেই মাত্রাছাড়া হয়েছিল মূল্যবৃদ্ধি। রাজকোষ ঘাটতি নিয়ে চিন্তা বেড়েছিল। প্রায় দুই অঙ্ক ছুঁয়েছিল চলতি খাতে ঘাটতিও।

Congress Tax NYAY Manmohan Singh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy