Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

ভাইরাসে হাঁড়ির হাল রাজ্য রাজকোষেরও

করোনার খবর ছড়াতেই জানুয়ারিতে তা এক ধাক্কায় তলানি ছুঁয়েছে কর আদায়।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০ ০৮:১৫
Share: Save:

করোনার থাবা রাজ্যের রাজকোষেও!

অর্থ দফতরের কর্তাদের দাবি, ডিসেম্বর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে কর আদায় হচ্ছিল গত বছরের তুলনায় বেশি। কিন্তু করোনার খবর ছড়াতেই জানুয়ারিতে তা এক ধাক্কায় তলানি ছুঁয়েছে। ফেব্রুয়ারি-মার্চেও ছবিটা এক। আদায়ের লক্ষ্য পূরণ দূরের কথা, চলতি অর্থবর্ষের শেষ মাসের (মার্চ) খরচ কী ভাবে উঠবে, তা ভেবে দিশেহারা প্রশাসন। বাজেট নিয়ন্ত্রণ আইনের ঊর্ধ্বসীমা ছাড়িয়ে আরও ৪৩১১ কোটি টাকা ধার নিতে ইতিমধ্যেই এফআরবিএম আইনের সংশোধনী এনেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তবে করোনার জেরে রাজকোষের অবস্থা আরও কতটা সঙ্গিন হবে, সেই প্রশ্নে উদ্বেগ বাড়ছেই।

এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে রাজ্যের জিডিপি-র ৫% বাজার থেকে ধার নেওয়ার অনুমতি চেয়েছেন। সায় মিললে এই পথে ৬৫,০০০ কোটি পর্যন্ত তহবিল জোগাড় করা যাবে। যাকে বাঁচার একমাত্র উপায় হিসেবে দেখছেন রাজ্য প্রশাসনের অনেকেই।

সূত্রের খবর, জানুয়ারিতেই রাজস্ব ঘাটতি সাড়ে ১২ হাজার কোটি ছুঁয়েছে। অর্থবর্ষের শেষ দু’মাসে আদায় কার্যত বন্ধ হলে, সরকারের দৈনন্দিন খরচ চালানোই মুশকিল হতে পারে বলে নবান্নের একাংশের ধারণা। সংক্রমণ কেন রাজ্যের রাজস্বে এত দ্রুত এমন প্রভাব ফেলল?

অর্থ কর্তাদের একাংশের দাবি, রাজ্যের আদায়ের মোটা অংশ আসে কলকাতাকে কেন্দ্র করে যে কারবার চলে তার থেকে। শিল্প উৎপাদন থেকে রাজ্যের আয় তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। ট্রেডিংয়ের অধিকাংশ পণ্য আবার চিন থেকে কলকাতায় আসে। কলকাতা বন্দরের দাবি, কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে যত বাক্সবন্দি পণ্য আসে, তার অন্তত ২৫% চিনের। করোনার জেরে চিনে দীর্ঘ সময় লকডাউন থাকায় রাজ্যের বাজারেও মন্দা। কর বাবদ আয় কমছে। সারা দেশে একই পরিস্থিতি থাকায় কেন্দ্রীয় করের প্রাপ্য অংশ এবং কেন্দ্রীয় অনুদানের টাকাও কম এসেছে। ফলে আর্থিক ধাক্কা সামলানো কঠিন হচ্ছে।

কর্তাদের একাংশ বলছেন, মার্চে রাজস্ব আদায় বেশি হয়, প্রায় ৩৫ হাজার কোটি। তবে মার্চে খরচও (প্রকল্প শেষের খরচ, ঠিকাদারদের বিল মেটানো, বকেয়া খরচ ইত্যাদি) বেশি। আশা ছিল, এ বছর মার্চে অন্তত ৪৫ হাজার কোটি আসবে। কিন্তু এখন তার অর্ধেকও না-হওয়ার আশঙ্কা। অথচ বকেয়া মেটাতে অন্তত ৫০ হাজার কোটি লাগবে। রাজ্য অর্থ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, রোজগার না-হলে খরচ কমানোই রাস্তা। যে সব প্রকল্পের খরচ পিছনো সম্ভব, সেগুলি আটকে দেওয়া হবে। দফতরগুলিকে খরচ না-হওয়া টাকা ফেরাতে বলা হবে। তার পরেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না-এলে একমাত্র পথ বাজার থেকে ধার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Economy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE