Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

ঘাটতি ভুলে ত্রাণের পক্ষেই সওয়াল গীতার

সাধারণত ঘাটতি মাত্রা ছাড়ালে তীব্র আপত্তি থাকে আইএমএফের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি, ১০ এপ্রিল: শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৫৫
Share: Save:

করোনা-সঙ্কটে আইসিইউ-তে ঢুকে পড়া অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে বিপুল অঙ্কের ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণায় বাধ্য হবে বহু দেশ। ফলে মাত্রাছাড়া হবে রাজকোষ ঘাটতি। আকাশছোঁয়া হতে পারে জিডিপি-র সাপেক্ষে ধারের অনুপাতও। তবু দ্রুত ওই ত্রাণ না-দিলে, তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে পারে বহু দেশের অর্থনীতি। তাই ঘাটতির হিসেবকে আপাতত শিকেয় তুলে যে কোনও মূল্যে অর্থনীতির চাকা চালু রাখা জরুরি বলে মনে করালেন আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের (আইএমএফ) মুখ্য অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ।

সাধারণত ঘাটতি মাত্রা ছাড়ালে তীব্র আপত্তি থাকে আইএমএফের। বেহাল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে তাদের থেকে ঋণ মেলার প্রাথমিক শর্তও সাধারণত সরকারি ব্যয় সঙ্কোচ।

সেই আইএমএফের মুখ্য অর্থনীতিবিদ বলছেন, “ত্রিশের দশকের ভয়াল আর্থিক সঙ্কট (গ্রেট ডিপ্রেশন), ২০০৮ সালের বিশ্ব মন্দার (গ্রেট রিশেসন) পরে এখন বিশ্ব অর্থনীতির কার্যত স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার (গ্রেট লকডাউন) অভিঘাত এতই বেশি যে, অর্থনীতির সাধারণ দাওয়াইয়ে সঙ্কট কাটানো শক্ত।” তাঁর দাবি, জিডিপির সাপেক্ষে ঘাটতি বা সরকারি ঋণের অনুপাত বাড়লেও ত্রাণ ছাড়া উপায় নেই।

গীতার যুক্তি, আইএমএফ বিভিন্ন দেশকে ধার দেয় বা সরকার ত্রাণ ঘোষণা করে এই লক্ষ্যে যে, ওই টাকা খরচের ফলে চাহিদা চাঙ্গা হবে। গতি আসবে আর্থিক কর্মকাণ্ডে। কিন্তু এখন পৃথিবী ঘরবন্দি। তাই কেনাকাটা করতে মানুষের হাতে টাকা দেওয়া এর লক্ষ্য নয়। সেই উপায়ও সীমিত। বরং লকডাউনে কাজ খোয়ানো কর্মীদের হাতে যাতে সংসার চালানোর মতো আয় থাকে বা এই কঠিন সময়ে অন্তত ছ’মাস ভেসে থাকতে পারে ছোট সংস্থাগুলি, ত্রাণ জরুরি সেই কারণে। একমাত্র তবেই লকডাউন ওঠার পরে অর্থনীতি ফের ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার রাস্তা খুঁজে পাবে। নয়তো তার আগেই তা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা।

বিশ্ব জুড়ে

• করোনা মোকাবিলায় ৫৫,০০০ কোটি ডলারের ত্রাণ প্রকল্পে সায় ইইউয়ের।

• অর্থনীতির চাকা ঘোরানোর কৌশল নিয়ে ১৫ এপ্রিল বৈঠকে বসবেন জি-২০ দেশগুলির শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর, অর্থমন্ত্রীরা। শুক্রবার কথা হয়েছে তাদের তেলমন্ত্রীদের মধ্যে।

• সঙ্কটে পড়া সংস্থাগুলিকে ২০০০ কোটি ইউরো সাহায্যের ভাবনা ফ্রান্সের।

• আপৎকালীন ঋণের অঙ্ক দ্বিগুণ করল আইএমএফ।

• পর্যায়ক্রমে লকডাউন তোলার পরে চিনে মূল্যবৃদ্ধির হার সর্বনিম্ন, অক্টোবরের পরে প্রথম।

• আমেরিকায় ৩ সপ্তাহে কাজ খোয়ালেন ১.৬৮ কোটি।

• ভারতে রফতানি ক্ষেত্রে ১.৫ কোটি কাজ হারানোর আশঙ্কা ফিয়োর।

মারণ অতিমারির থাবায় আহত বিশ্ব অর্থনীতির হাল দেখে কার্যত এই একই কথা বলেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও এস্থার দুফলো। কাজ খোয়ানো কর্মীদের হাতে টাকা আর আতান্তরে পড়া ছোট সংস্থাকে জিইয়ে রাখতে ইতিমধ্যেই ২.৩ লক্ষ কোটি ডলার ঢালার কথা ঘোষণা করেছে মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ। ওই দুই প্রয়োজনে ব্রিটিশ সরকারকে যত খুশি ঋণ জোগানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ডও। বিধ্বস্ত ভারতীয় অর্থনীতিকে টেনে তুলতে এখন মোদী সরকার ত্রাণের ঝুলি কতখানি উপুড় করে, দেশ তাকিয়ে সে দিকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Covid-19 Economy IMF
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE